ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান যুদ্ধে ৯৫০ ইরানি নাগরিক নিহত হয়েছেন। আমেরিকাও ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় আক্রমণ করেছে। পরিস্থিতি অত্যন্ত সংবেদনশীল।
ইরান-ইসরায়েল সংঘাত: ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান সামরিক সংঘাত ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। ইসরায়েলি আকাশ আক্রমণে এ পর্যন্ত ৯৫০-এরও বেশি ইরানি নাগরিক প্রাণ হারিয়েছেন এবং ৩,৪৫০-এরও বেশি লোক আহত হয়েছেন। আমেরিকান সেনাবাহিনীও ইরানের পারমাণবিক স্থাপনা লক্ষ্য করে আক্রমণ করেছে। পরিস্থিতি দিন দিন আরও খারাপ হচ্ছে এবং দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
বর্ধমান সংঘাত, বর্ধমান ধ্বংসযজ্ঞ
মধ্যপ্রাচ্যে ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে সামরিক সংঘাত এখন মারাত্মক মোড়ে পৌঁছেছে। সাম্প্রতিক দিনগুলিতে সংঘটিত আক্রমণে অসংখ্য মানুষ প্রাণ হারিয়েছে এবং অনেক শহর ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। ওয়াশিংটনভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠনগুলির মতে, ইসরায়েলের আকাশ আক্রমণে এ পর্যন্ত ৯৫০-এরও বেশি ইরানি নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ৩৮০-এরও বেশি সাধারণ নাগরিক এবং ২৫৩ জন সেনা কর্মী রয়েছেন।
আকাশ আক্রমণে ধ্বংসপ্রাপ্ত ইরানি শহর
ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র ইরানের অনেক শহর লক্ষ্য করেছে। এর মধ্যে রাজধানী তেহরানের আশেপাশে, ইসফাহান, শিরাজ এবং কুর্দিস্তানের মতো গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলি অন্তর্ভুক্ত। আক্রমণের ফলে অনেক ভবন সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়েছে এবং উদ্ধারকারী কর্মীদের ধ্বংসাবশেষ থেকে লাশ বের করতে ঘন্টার পর ঘন্টা সময় লাগছে।
হাজার হাজার লোক আহত
ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, এ পর্যন্ত ৩,০৫৬-এরও বেশি লোক আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে অনেকের অবস্থা গুরুতর বলে জানা গেছে। হাসপাতালগুলিতে স্থানের অভাব দেখা দিয়েছে এবং সরকার জরুরী চিকিৎসা সেবার ব্যবস্থা জোরদার করেছে। অনেক আহতকে প্রতিবেশী শহরগুলিতে স্থানান্তরিত করা হচ্ছে।
আমেরিকাও করেছে আকাশ আক্রমণ
এই সংঘাতে আমেরিকার সক্রিয় অংশগ্রহণ লক্ষ্য করা গেছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, আমেরিকান সেনাবাহিনী শনিবার রাতে ইরানের গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনা লক্ষ্য করে আক্রমণ করেছে। এর মধ্যে ফোর্ডো, নাতানজ এবং ইসফাহানের মতো সংবেদনশীল স্থান রয়েছে। ইরান আক্রমণের কথা স্বীকার করে বলেছে যে তাদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে, তবে তাদের পারমাণবিক অস্ত্র সম্পূর্ণ নিরাপদ।
আমেরিকান আক্রমণে হতাহতের তথ্য নেই
তবে আমেরিকার আক্রমণে কত লোক মারা গেছে তার স্পষ্ট তথ্য এখনও সামনে আসেনি। ইরানি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় স্বীকার করেছে যে আক্রমণের ফলে পারমাণবিক কর্মসূচি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তবে তারা মৃতের কোনো সংখ্যা প্রকাশ করেনি।
ইরানের পক্ষ থেকে সীমিত তথ্য
উল্লেখ্য যে, ইরান সরকার প্রতিদিন সংঘাতের তথ্য প্রকাশ করছে না। তবে শনিবার ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছিল যে ইসরায়েলি আক্রমণে প্রায় ৪০০ লোক মারা গেছে এবং হাজার হাজার লোক আহত হয়েছে। কিন্তু এই সংখ্যা এখন পুরোনো বলে মনে করা হচ্ছে কারণ গত দুই দিনে আক্রমণের সংখ্যা এবং তীব্রতা উভয়ই বৃদ্ধি পেয়েছে।
ইসরায়েলেও ক্ষতি হয়েছে
১৩ জুন শুরু হওয়া এই সামরিক সংঘাতে ইসরায়েলকেও ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়েছে। ২১ জুন ইসরায়েলি সরকার জানিয়েছিল যে ইরানি আক্রমণে ২৪ জন নাগরিক মারা গেছে এবং ৯০০-এরও বেশি লোক আহত হয়েছে। তবে এই সংখ্যাও দ্রুত পরিবর্তিত হতে পারে কারণ ইরানও এখন প্রতিশোধ নেওয়ার চেষ্টা করছে।
তেল আভিবসহ অনেক শহরে ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র
আমেরিকান আক্রমণের পর ইরানও ক্ষেপণাস্ত্র আক্রমণ তীব্র করেছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলের তেল আভিব, হাইফা এবং বে'রশেবায় পড়ছে। এখনও পর্যন্ত এই আক্রমণে ক্ষতির বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়নি, তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন যে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
