ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে ক্ষেপণাস্ত্র আক্রমণের মধ্যে আমেরিকার হস্তক্ষেপের আশঙ্কা দিন দিন গভীর হচ্ছে। রাশিয়া সতর্ক করে দিয়েছে যে, যদি আমেরিকা সামরিক সহায়তা করে, তাহলে মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতি অত্যন্ত বিপজ্জনক হতে পারে।
Israel Iran Conflict: মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতি দ্রুত অবনতি হচ্ছে। ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে চলমান সংঘাতে এখন আমেরিকা ও রাশিয়া এরকম বড় বড় দেশও প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত হচ্ছে বলে মনে হচ্ছে। যেখানে আমেরিকা ইসরায়েলকে প্রকাশ্যেই সমর্থন করছে, সেখানে রাশিয়া ইরানের পক্ষে দাঁড়িয়ে আমেরিকাকে কঠোর সতর্কবার্তা দিয়েছে। এদিকে ডোনাল্ড ট্রাম্পের বক্তব্যও পরিস্থিতিকে আরও সংবেদনশীল করে তুলেছে।
ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে চলমান সরাসরি সংঘাত
গত কয়েকদিন ধরে ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে সংঘাত আরও তীব্র হচ্ছে। দুই দেশের মধ্যে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন আক্রমণের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রয়েছে। ইরানের রেভলুশনারি গার্ডস ও ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী পরস্পরের ঘাঁটি লক্ষ্যবস্তু করে আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে। সম্প্রতি ইসরায়েল ইরানের কিছু কৌশলগত ঘাঁটিতে আক্রমণ চালিয়েছে, যেখানে বলা হচ্ছে পারমাণবিক সংক্রান্ত অবকাঠামোকেও লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে।
এই আক্রমণের জবাবে ইরানও তার বিমানবাহিনীর প্রদর্শন করেছে। তেহরান ড্রোন ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের মাধ্যমে ইসরায়েলি সামরিক ঘাঁটি লক্ষ্যবস্তু করার চেষ্টা করেছে। তবে, ইসরায়েলের আয়রন ডোম প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা অনেক আক্রমণ ব্যর্থ করেছে।
আমেরিকার সামরিক প্রস্তুতি উদ্বেগ বৃদ্ধি করেছে
ইসরায়েল আমেরিকার প্রকাশ্য সমর্থন পাচ্ছে। সম্প্রতি আমেরিকার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় (পেন্টাগন) ইঙ্গিত দিয়েছে যে, প্রয়োজন হলে আমেরিকা তার সেনা পাঠাতে পারে। আমেরিকার যুদ্ধজাহাজ ও যুদ্ধবিমান ইতোমধ্যেই মধ্যপ্রাচ্যে মোতায়েন করা হয়েছে এবং আমেরিকার সৈন্য মোতায়েন বৃদ্ধির খবরও পাওয়া গেছে।
ডোনাল্ড ট্রাম্প, যিনি আমেরিকার সাবেক রাষ্ট্রপতি এবং আসন্ন নির্বাচনে রিপাবলিকান দলের শক্তিশালী প্রার্থী বলে মনে করা হচ্ছে, তিনিও ইরান নিয়ে কঠোর বক্তব্য দিয়েছেন। ট্রাম্প বলেছেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনেই কর্মকাণ্ডে দেরি করেছেন। ট্রাম্পের মতে, আমেরিকা যেকোনো সময় আক্রমণ করতে পারে আবার নাও করতে পারে, এটা সম্পূর্ণরূপে পরিস্থিতির উপর নির্ভর করবে।
রাশিয়ার সরাসরি সতর্কবার্তা: যুদ্ধের সূত্রপাতে জ্বালানি দেবেন না
রাশিয়া আমেরিকাকে সরাসরি সতর্ক করে দিয়েছে যে, যদি এই সংঘাতে সে সামরিক হস্তক্ষেপ করে, তাহলে এর ফলাফল ধ্বংসাত্মক হবে। রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা বলেছেন, আমেরিকা যদি ইসরায়েলকে সরাসরি সামরিক সহায়তা করে, তাহলে মধ্যপ্রাচ্যের স্থিতিশীলতা সম্পূর্ণরূপে ঝুঁকির মুখে পড়বে।
জাখারোভা আরও বলেছেন, ইসরায়েল যেভাবে ইরানের পারমাণবিক অবকাঠামোতে আক্রমণ করছে, তাতে বিশ্ব একটি বড় বিপদের দিকে এগোচ্ছে। তিনি প্রশ্ন তুলেছেন বিশ্ব সম্প্রদায় এবং পরিবেশ সংক্রান্ত সংগঠনের নীরবতা কেন? তিনি আরও বলেছেন, বিকিরণ কেবল সীমাবদ্ধ থাকবে না, বরং এর প্রভাব বিশ্বব্যাপী হবে।
এছাড়াও রাশিয়ার উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই রিয়াবকোও আমেরিকাকে সতর্ক করে দিয়েছেন যে, সে এই সংঘাতে সামরিক হস্তক্ষেপ থেকে বিরত থাকুক। রিয়াবকোর মতে, আমেরিকা যদি ইরানের বিরুদ্ধে কোনো বড় পদক্ষেপ নেয়, তাহলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে।