বিহারের তারাপুর আসনে ২০২৫-এর নির্বাচনের আগেই রাজনৈতিক উত্তাপ

বিহারের তারাপুর আসনে ২০২৫-এর নির্বাচনের আগেই রাজনৈতিক উত্তাপ
সর্বশেষ আপডেট: 20-06-2025

২০২৫ সালের বিহার বিধানসভা নির্বাচনের আগেই তারাপুর আসনে রাজনৈতিক উত্তাপ বেড়ে গেছে। জেডিইউ এবং আরজেডির অনেক বড় নেতা টিকিটের জন্য দাবিদারিত্ব জানাচ্ছেন। জনতার মধ্যে ঘুরে বেড়ানো এবং সমর্থন আদায়ের প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে গেছে।

বিহার নির্বাচন ২০২৫: ২০২৫ সালের বিহার বিধানসভা নির্বাচনের ঘোষণার আগেই রাজ্যের বিখ্যাত বিধানসভা আসনগুলির মধ্যে একটি তারাপুরে রাজনীতি উত্তাল হয়ে উঠেছে। এই আসনটি কেবল রাজনৈতিক ইতিহাসের দিক থেকেই গুরুত্বপূর্ণ নয়, বরং এখান থেকে অনেক दिग्गज নেতার রাজনৈতিক যাত্রা শুরু হয়েছে। বর্তমানে এই আসনটি জেডিইউ-র কাছে রয়েছে এবং বিধায়ক রাজীব কুমার সিংহ, যিনি ক্রমাগত এলাকায় সক্রিয়তা দেখিয়ে সরকারের পরিকল্পনার প্রচার করছেন।

জেডিইউতে টিকিটের অনেক দাবিদার

শাসক দল জেডিইউতে এইবার টিকিটের জন্য অনেক মুখ দেখা যাচ্ছে। রাজীব কুমার সিংহ যেখানে আবারও টিকিটের দাবিদারিত্ব জানাচ্ছেন, সেখানে ইঞ্জিনিয়ার রোহিত চৌধুরী এবং প্রাক্তন পুলিশ কর্মকর্তা রাজেশ কুশওয়াহাও জোরদার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। রোহিত চৌধুরীর রাজনৈতিক সম্পর্ক অত্যন্ত শক্তিশালী। তাঁর পিতা শকুনি চৌধুরী ছয়বার তারাপুর থেকে নির্বাচনে জিতেছেন এবং বিহারের স্বাস্থ্যমন্ত্রীও ছিলেন। আর তাঁর মাতা, প্রয়াত পার্বতী দেবীও একবার বিধায়ক ছিলেন। তাঁর ভাই সম্রাট চৌধুরী বর্তমানে বিহারের উপ-মুখ্যমন্ত্রী।

রোহিত চৌধুরী গতবার উপনির্বাচনে টিকিটের লড়াইয়ে ছিলেন, কিন্তু ললন সিংহ তাঁকে ম্যানেজ করে জেডিইউতে যোগ দিয়েছিলেন। এইবার তিনি জোরেশোরে এলাকায় ঘুরে বেড়ানো শুরু করেছেন এবং জনতার সাথে সরাসরি যোগাযোগ করছেন। অন্যদিকে প্রাক্তন পুলিশ কর্মকর্তা রাজেশ কুশওয়াহাও তাঁর প্রশাসনিক অভিজ্ঞতা এবং এলাকার সাথে যোগাযোগের ভিত্তিতে টিকিটের দাবি করছেন।

আরজেডিতেও অনেক মুখ মাঠে

ইন্ডিয়া জোটের পক্ষ থেকে এই আসনটি রাষ্ট্রীয় জনতা দল (আরজেডি)-র হাতে যাবে, তা প্রায় নিশ্চিত। গতবারের উপনির্বাচনে আরজেডি অরুণ সাহকে মাঠে নামিয়েছিল, যিনি শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন কিন্তু জিততে পারেননি। এইবার অরুণ সাহ আবার এলাকায় সক্রিয় হয়ে উঠেছেন এবং ক্রমাগত জনতার কাছে গিয়ে সমর্থন আদায় করছেন।

আরজেডিতে টিকিটের অন্যান্য দাবিদারদের মধ্যে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জয়প্রকাশ নারায়ণ যাদবের কন্যা দিব্যা প্রকাশের নামও আলোচনায় রয়েছে। জয়প্রকাশ যাদব তাঁর কন্যাকে রাজনীতিতে প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করছেন। এছাড়াও আরজেডি নেতা জিতেন্দ্র কুশওয়াহাও নির্বাচনী প্রস্তুতি নিয়ে ব্যস্ত এবং ক্রমাগত মানুষের সাথে যোগাযোগ রাখছেন।

প্রাক্তন জেলা পরিষদ সদস্য শৈলেশ কুমার অর্থাৎ মন্টু যাদবও টিকিটের জন্য চেষ্টা করছেন। আরজেডিতে অভ্যন্তরীণ লড়াই বেশ তীব্র হবে বলে মনে হচ্ছে এবং সকল দাবিদারই এখন থেকেই স্থলস্তরে সক্রিয় হয়ে উঠেছেন।

কেন গুরুত্বপূর্ণ তারাপুর আসন

তারাপুর বিধানসভা আসনের বিহারের রাজনীতিতে একটি বিশেষ স্থান রয়েছে। এই আসন থেকে অনেকবার এমন নেতা নির্বাচিত হয়েছেন যারা রাজ্যের রাজনীতিকে প্রভাবিত করেছেন। ১৯৫২ সাল থেকে এখন পর্যন্ত এই আসনে কংগ্রেস, সমাজবাদী দল, জনতা দল, কমিউনিস্ট পার্টি, সমতা দল, আরজেডি এবং জেডিইউ-র মতো প্রধান দলগুলির আধিপত্য ছিল।

শকুনি চৌধুরী এই আসন থেকে সবচেয়ে বেশিবার নির্বাচনে জয়লাভের রেকর্ড করেছেন এবং তিনি বিভিন্ন দল থেকে নির্বাচনে জিতেছেন। তিনি নির্দল, কংগ্রেস, সমতা দল এবং আরজেডি থেকে জয়লাভ করেছেন। পার্বতী দেবী এবং নীতা চৌধুরীর মতো ব্যক্তিবর্গও এই আসন থেকে বিধায়ক ছিলেন।

নীতীশ সরকারের পরিকল্পনার উপর ফোকাস

জেডিইউ-র বিধায়ক রাজীব কুমার সিংহ ক্রমাগত এলাকায় নীতীশ সরকারের সাফল্য নিয়ে প্রচার করছেন। তিনি দাবি করেন যে এলাকায় রাস্তা, বিদ্যুৎ, শিক্ষা এবং স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে যথেষ্ট উন্নতি হয়েছে। এছাড়াও সরকারি পরিকল্পনাগুলিকে শেষ ব্যক্তির কাছে পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।

তাঁর এও কথা বলা হচ্ছে যে, তিনি কেবল নির্বাচনের সময় নয়, সম্পূর্ণ মেয়াদে জনতার মধ্যে ছিলেন এবং এটাই তাঁর সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক ভিত্তি। তবে আভ্যন্তরীণভাবে এই আলোচনাও তীব্র হয়ে উঠেছে যে, জেডিইউ তাঁকে আবার সুযোগ দেবে নাকি নতুন মুখকে মাঠে নামাবে।

Leave a comment