রাহুল গান্ধীর হরিয়ানা সফর: কংগ্রেসে ঐক্যের আহ্বান

রাহুল গান্ধীর হরিয়ানা সফর: কংগ্রেসে ঐক্যের আহ্বান
সর্বশেষ আপডেট: 04-06-2025

আজ হরিয়ানা কংগ্রেস কমিটির কার্যালয়ে উপস্থিত হলেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। তার অভ্যর্থনা জানিয়েছেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র সিংহ হুড্ডা। পার্টিকে শক্তিশালী করার এবং রাজ্যে ঐক্য স্থাপনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার জন্য এই সফরকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করা হচ্ছে।

চণ্ডীগড়: হরিয়ানা কংগ্রেসে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা আন্তঃদ্বন্দ্ব ও গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের অবসান ঘটানোর জন্য আজ চণ্ডীগড়স্থিত হরিয়ানা কংগ্রেস কমিটির কার্যালয়ে উপস্থিত হলেন দলের জ্যেষ্ঠ নেতা ও সাংসদ রাহুল গান্ধী। সম্প্রতি রাজ্যে ভূপেন্দ্র সিংহ হুড্ডা ও কুমারী শৈলজা-এর দলের মধ্যে মতবিরোধ স্পষ্ট হয়ে ওঠার পর এই সফরকে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ মনে করা হচ্ছে। পার্টিকে শক্তিশালী করার এবং বিধানসভা নির্বাচনের প্রস্তুতির জন্য রাহুল গান্ধী নিজেই নেতৃত্ব গ্রহণ করেছেন।

ভূপেন্দ্র সিংহ হুড্ডা অভ্যর্থনা জানিয়েছেন

রাহুল গান্ধীর কংগ্রেস কার্যালয়ে পৌঁছানোর পর হরিয়ানার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র সিংহ হুড্ডা তাকে আন্তরিকতায় অভ্যর্থনা জানিয়েছেন। এই সফরকে কেবলমাত্র একটি আনুষ্ঠানিক সাক্ষাত্ নয়, বরং হরিয়ানা কংগ্রেসে নতুন উদ্যমের সূচনা হিসেবে দেখা হচ্ছে। রাহুল গান্ধীর সফরের প্রধান উদ্দেশ্য হলো দলের মধ্যে চলমান গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের অবসান ঘটানো এবং সংগঠনকে শক্তিশালী করা।

এজন্য তিনি বৈঠকের শুরুতেই নেতাদের স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন যে, যদি দল ২০২৪ সালের বিধানসভা নির্বাচনে জয়ী হতে চায়, তাহলে সকলকে মিলে কাজ করতে হবে। তিনি বলেছেন, ব্যক্তিগত উচ্চাকাঙ্ক্ষার উপর উঠে সংগঠনের শক্তির জন্য কাজ করা উচিত।

দুই ধাপে বৈঠক

রাহুল গান্ধীর এই বৈঠক দুই ধাপে অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রথম ধাপে ১৭ জন জ্যেষ্ঠ নেতার সাথে আলাপ করা হয়েছে, যাদের মধ্যে রয়েছেন ভূপেন্দ্র সিংহ হুড্ডা, রণদীপ সিং সুরজেওয়ালা, কুমারী শৈলজা, চৌধুরী বীরেন্দ্র সিংহ এবং প্রদেশ প্রভারী বি.কে. হরিপ্রসাদ। এই বৈঠকে রাহুল গান্ধী নেতাদের মতামত জেনেছেন এবং বলেছেন যে, এখন চিন্তাভাবনা থেকে এগিয়ে গিয়ে মাঠ পর্যায়ের কাজ করার সময়।

হরিয়ানা কংগ্রেসে সংগঠনের কাঠামো দীর্ঘদিন ধরে অসম্পূর্ণ ছিল। রাহুল গান্ধী এই সফরে এই পুনর্গঠন প্রক্রিয়াকে চূড়ান্ত রূপ দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছেন। তিনি স্পষ্ট করে বলেছেন যে, কোন জেলায় কোন কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক এবং রাজ্য স্তরের পর্যবেক্ষক পাঠানো হবে, তা আলোচনা ও স্থানীয় প্রয়োজনের ভিত্তিতে ঠিক করা হবে।

রাজ্যে মোট ২১ জন কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক এবং ৭৭ জন রাজ্য স্তরের পর্যবেক্ষক নিয়োগ করা হয়েছে। এদের মধ্যে আটজন সহ-পর্যবেক্ষকও রয়েছেন। ঠিক করা হয়েছে যে, প্রতিটি কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষকের সাথে তিনজন রাজ্য স্তরের পর্যবেক্ষক থাকবেন, যারা জেলাগুলিতে গিয়ে সংগঠনের কাঠামো তৈরি করবেন।

মঙ্গলবার পর্যবেক্ষকদের জেলা নিয়ে আলোচনা

রাহুল গান্ধীর বৈঠকের আগে মঙ্গলবার হরিয়ানা প্রদেশ সভাপতি ও প্রভারী বি.কে. হরিপ্রসাদ বিভিন্ন জেলায় পর্যবেক্ষকদের নিয়োগ নিয়ে আলোচনা করেছেন। এই প্রস্তাবগুলিকে আজকের বৈঠকে চূড়ান্ত রূপ দেওয়া হচ্ছে। রাহুল গান্ধী নিজেই এই প্রক্রিয়ার তত্ত্বাবধান করছেন যাতে সংগঠনের কাজে স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতা বজায় থাকে।

রাহুল গান্ধী নেতাদের উদ্দেশ্যে স্পষ্ট করে বলেছেন যে, দলকে জয়ী করার জন্য নেতাদের পারস্পরিক মতবিরোধ ভুলে এক প্ল্যাটফর্মে আসা প্রয়োজন। এখন আমাদের লড়াই কোন একটা গোষ্ঠী বা ব্যক্তির সাথে নয়, বরং সেই আদর্শের সাথে যা দেশকে ভাগ করে দিচ্ছে। হরিয়ানায় কংগ্রেসকে শক্তিশালী করার জন্য সকলকে একত্রিত হতে হবে।

Leave a comment