জেডিইউ নেতার রাহুল গান্ধীর বিদেশনীতি সমালোচনার তীব্র প্রতিক্রিয়া

জেডিইউ নেতার রাহুল গান্ধীর বিদেশনীতি সমালোচনার তীব্র প্রতিক্রিয়া
সর্বশেষ আপডেট: 24-05-2025

বিদেশ নীতি নিয়ে রাহুল গান্ধীর অভিযোগের তীব্র প্রতিক্রিয়া জেডিইউ নেতা কেসি ত্যাগীর। তিনি জয়শঙ্করকে সমর্থন করে বলেছেন, এইরকম সংকটকালে আপত্তিকর বক্তব্য দেওয়া ঠিক নয়।

নয়াদিল্লি: দেশের রাজনৈতিক পরিবেশে আবারও উত্তাপ ছড়িয়ে পড়েছে। কংগ্রেসের সিনিয়র নেতা এবং লোকসভায় বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এবং ভারতের বিদেশ নীতি সম্পর্কে যে অভিযোগ করেছেন, তার প্রতি তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন জনতা দল (যুক্ত) -এর নেতা কেসি ত্যাগী। কেসি ত্যাগী রাহুল গান্ধীকে সতর্ক করে দিয়েছেন সংকটকালে এ ধরণের আপত্তিকর ও অপ্রয়োজনীয় বক্তব্য না দেওয়ার জন্য এবং বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করকে তাঁর পূর্ণ সমর্থন দিয়েছেন।

রাহুল গান্ধীর অভিযোগে আবারও বাড়ল রাজনৈতিক উত্তেজনা

গত কয়েকদিন আগে লোকসভায় রাহুল গান্ধী কেন্দ্রীয় সরকারের বিদেশ নীতি এবং বিশেষ করে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের বিদেশ নীতিকে কঠোর ভাষায় সমালোচনা করেছিলেন। রাহুল গান্ধী প্রশ্ন তুলেছিলেন ভারতের বিদেশ নীতি ‘ধ্বংসস্তূপে’ পরিণত হয়েছে এবং পাকিস্তানের নিন্দা করতে কোনও দেশ ভারতের পাশে দাঁড়ায়নি। তিনি অভিযোগ করেছেন যে, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যে ‘অপারেশন সিন্দুর’ চালানো হয়েছিল, তাতে ভারতীয় বিমানবাহিনীর বেশ কিছু বিমান ধ্বংস হয়েছে, যাকে তিনি একটা বড় ভুল বা অপরাধ বলে মনে করেন।

রাহুল গান্ধী সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্স (পূর্বের টুইটার)-এও এই বিষয়ে বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্করের নীরবতা নিন্দনীয় বলে উল্লেখ করেছেন এবং ভারত সরকারের কাছে পুরো বিষয়টির সত্যতা জনসাধারণের সামনে তুলে ধরার দাবি জানিয়েছেন।

‘অপারেশন সিন্দুর’ কী ছিল?

‘অপারেশন সিন্দুর’ ২০২৩ সালের মে মাসে ভারতের পক্ষ থেকে পরিচালিত একটি সামরিক অভিযান ছিল। জম্মু ও কাশ্মীরের পাহালগাম এলাকায় ২২ এপ্রিল সংঘটিত জঙ্গি হামলার প্রতিশোধ হিসেবে এই অভিযান চালানো হয়েছিল, যেখানে ২৬ জন সাধারণ মানুষ নিহত হয়েছিলেন। এই অভিযানে ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী পাকিস্তান এবং পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরে জঙ্গিদের আস্তানায় হামলা চালিয়ে জয়শ-ই-মোহাম্মদ, লস্কর-ই-তৈয়বা এবং হিজবুল মুজাহিদিন-এর মতো জঙ্গি সংগঠনের ১০০-র বেশি জঙ্গিকে নিহত করেছে। এই অভিযানকে ভারতের সামরিক সাফল্য বলে মনে করা হলেও, রাহুল গান্ধী প্রশ্ন তুলেছেন যে, এই সময় কতগুলি বিমান হারিয়েছে ভারত।

জেডিইউ নেতা কেসি ত্যাগীর রাহুল গান্ধীর উপর তীব্র আক্রমণ

জবাবে জেডিইউ নেতা কেসি ত্যাগী বলেছেন, যখন দেশকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে বাইরের চ্যালেঞ্জের মোকাবেলা করতে হচ্ছে, তখন রাহুল গান্ধীর মত বিরোধী দলের নেতাকে এ ধরণের আপত্তিকর বক্তব্য দেওয়া উচিত নয়। তিনি বলেছেন, "কেউই সংকটকালে এ ধরণের অপ্রয়োজনীয় ও বিতর্কিত বক্তব্য দেওয়া উচিত নয়। এটা দেশের স্বার্থে নয়।"

কেসি ত্যাগী স্পষ্ট করে বলেছেন যে, বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করকে পূর্ণ সমর্থন দেওয়া উচিত, কারণ তিনি দেশের স্বার্থে কাজ করছেন। তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে নীতি আয়োগের সাম্প্রতিক বৈঠকের কথাও উল্লেখ করেছেন, যেখানে ২০৪৭ সালের মধ্যে উন্নত ভারতের দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ত্যাগী বলেছেন, বিহারের মুখ্যমন্ত্রী এবং জেডিইউ-র প্রধান নীতিশ কুমারও এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন এবং ভারতের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল।

রাহুল গান্ধী কী বলেছিলেন?

রাহুল গান্ধী লোকসভায় বলেছিলেন যে, পাকিস্তানের নিন্দা করতে বিশ্বের কোনও দেশই ভারতের পাশে দাঁড়ায়নি। তিনি আমেরিকার প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভারত-পাকিস্তান মধ্যস্থতা করার প্রয়াসের কথাও উল্লেখ করেছিলেন। এছাড়াও তিনি প্রশ্ন তুলেছিলেন ‘অপারেশন সিন্দুর’-এর সময় কতগুলি ভারতীয় বিমান ধ্বংস হয়েছে এবং এটা কি ভুল নয়, বরং একটা গুরুতর অপরাধ কি না।

তার বক্তব্য ছিল, ভারত সরকারকে এই বিষয়ের সম্পূর্ণ সত্যতা জনসাধারণের সামনে তুলে ধরতে হবে এবং বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্করের নীরবতা নিন্দনীয়।

Leave a comment