গঙ্গোত্রী, যমুনোত্রী ও কেদারনাথ ধামের কपाট খোলার পরে এখন ভক্তদের বদ্রীনাথ ধামের কपाট খোলার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করতে হচ্ছে। ৩০শে এপ্রিল থেকে উত্তরাখণ্ডের চারধাম যাত্রা আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়ে গেছে।
বদ্রীনাথ কপাট উদ্বোধন ২০২৫: উত্তরাখণ্ডের পবিত্র চারধাম যাত্রার শেষ এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্থান হল বদ্রীনাথ ধাম, যেখানে ভগবান বিষ্ণু নিজেই বাস করেন। ২০২৫ সালে এই তীর্থযাত্রা আরও বিশেষ হতে চলেছে কারণ বদ্রীনাথ ধামের কপাট ৪ঠা মে সকাল ৬টায় ভক্তদের দর্শনের জন্য খোলা হবে।
এর আগে যমুনোত্রী, গঙ্গোত্রী এবং কেদারনাথ ধামের কপাট যথাক্রমে ৩০শে এপ্রিল এবং ২রা মে খুলে গেছে। বদ্রীনাথের কপাট খোলার সাথে সাথেই আনুষ্ঠানিকভাবে চারধাম যাত্রা সম্পূর্ণ বলে মনে করা হয়।
কেন বিশেষ বদ্রীনাথ ধাম
সমুদ্রতল থেকে প্রায় ৩১০০ মিটার উচ্চতায় অলকানন্দা নদীর তীরে অবস্থিত বদ্রীনাথ ধাম গড়ওয়াল অঞ্চলের একটি প্রধান তীর্থস্থান। এই মন্দির ভগবান বিষ্ণুকে উৎসর্গ করা হয়েছে এবং এখানে তাঁর নর-নারায়ণ রূপে পূজা করা হয়। বিশ্বাস করা হয় যে এই স্থানে নিজেই ভগবান বিষ্ণু নর ও নারায়ণ রূপে তপস্যা করেছিলেন। এটাই কারণ যে এখানে আসা ভক্তদের মোক্ষ লাভের পথ সহজ হয়।
কপাট খোলার পূর্ব পরম্পরা
বদ্রীনাথ ধামের কপাট প্রতি বছর অক্ষয় তৃতীয়ার পর নির্দিষ্ট একটি তারিখে এবং শুভ মুহূর্তে খোলা হয়। ২০২৫ সালে এই শুভ দিন ৪ঠা মে নির্ধারিত হয়েছে। কপাট খোলার পূর্বে যোশীমঠস্থিত নৃসিংহ মন্দির থেকে ভগবানের চলমান মূর্তিকে বিশেষ পূজা-অর্চনার পরে বড় ধুমধাম করে বদ্রীনাথে নিয়ে আসা হয়। এই যাত্রার সময় পথে অনেক গ্রামে ভক্তরা ফুল এবং গান দিয়ে ভগবানের স্বাগত জানায়।
পূজার বিশেষ গুরুত্ব
বদ্রীনাথ মন্দিরের পূজা ব্যবস্থা অত্যন্ত বিশেষ। এখানকার প্রধান পুরোহিতকে "রাওয়াল" বলা হয়, যারা কেরালার নামবুদ্রী ব্রাহ্মণ হন। শুধুমাত্র রাওয়ালই গর্ভগৃহে প্রবেশ এবং ভগবান বদ্রীনাথের মূর্তিকে স্পর্শ করার অধিকার রাখেন। কপাট খোলার সাথে সাথে মন্দিরে তিলের তেল দিয়ে ভগবানের বিশেষ অলংকার করা হয়, যা পরবর্তী ছয় মাস ধরে চলে।
যেহেতু বদ্রীনাথ ধাম উঁচু স্থানে অবস্থিত, তাই এখানকার আবহাওয়া অপ্রত্যাশিত থাকে। ভক্তদের উষ্ণ কাপড়, ছাতা, ঔষধ এবং প্রয়োজনীয় সামগ্রী নিয়ে যাত্রায় বেরোনো উচিত। মন্দিরে পৌঁছানোর জন্য এখন সুবিধাজনক সড়কপথ এবং হেলিকপ্টার সেবাও পাওয়া যায়।