অবিকা গৌরের প্রেমিক মিলিন্দ চন্দওয়ানি IIM গ্র্যাজুয়েট এবং কুকু এফএম-এ সিনিয়র ম্যানেজার। তিনি ‘ক্যাম্প ডায়েরিজ’ NGO-র মাধ্যমে সমাজসেবার সাথেও যুক্ত।
টেলিভিশন ইন্ডাস্ট্রির জনপ্রিয় অভিনেত্রী অবিকা গৌর বর্তমানে তার ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে ব্যাপক আলোচনায় রয়েছেন। ‘বালিকা বধূ’ ধারাবাহিকে ছোট্ট আনন্দের চরিত্রে অভিনয় করে লাখো দর্শকের মন জয় করা অবিকা সম্প্রতি তার দীর্ঘদিনের বয়ফ্রেন্ড মিলিন্দ চন্দওয়ানির সাথে সগায়েদী করেছেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় অবিকা সগায়েদের সুন্দর ছবি শেয়ার করে এই ঘোষণা করেছেন, যার পর থেকেই তার ভক্ত এবং ইন্ডাস্ট্রির সহকর্মীরা তাকে অভিনন্দন জানাচ্ছেন।
কর্পোরেট পেশাদার এবং সমাজসেবী মিলিন্দ
অবিকা গৌরের প্রেমিক মিলিন্দ চন্দওয়ানি গ্ল্যামার জগৎ থেকে দূরে, কর্পোরেট সেক্টরের একজন পরিচিত ব্যক্তি। তিনি IIM লখনউ থেকে MBA করেছেন এবং বর্তমানে কুকু এফএম (Kuku FM)-এ সিনিয়র প্রোডাক্ট ম্যানেজার পদে কর্মরত আছেন। বেঙ্গালুরুর DSCE থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রি নেওয়ার পর মিলিন্দ তার কর্মজীবনে নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছেন।
মিলিন্ডের পেশাদার জীবন যতটা অনুপ্রেরণাদায়ক, ততটাই আকর্ষণীয় তার সামাজিক অবদান। তিনি ‘ক্যাম্প ডায়েরিজ’ নামে একটি NGO প্রতিষ্ঠা করেছেন, যার লক্ষ্য তরুণদের সমাজসেবার সাথে জড়িত করা। এই সংগঠনের মাধ্যমে তিনি তরুণদের মধ্যে সংবেদনশীলতা এবং সমাজের জন্য কিছু করার উদ্যম জাগ্রত করেন।
প্রথম দেখা এবং ফ্রেন্ডজোনের গল্প
অবিকা এবং মিলিন্ডের প্রেমকাহিনীও কোনও চলচ্চিত্রের গল্প থেকে কম নয়। একটা ইন্টারভিউতে অবিকা জানিয়েছিলেন, তাঁর এবং মিলিন্ডের প্রথম দেখা হয়েছিল একজন সাধারণ বন্ধুর মাধ্যমে। শুরুতে তাদের মধ্যে শুধুমাত্র বন্ধুত্ব ছিল, কিন্তু অবিকা মিলিন্দকে প্রথম দেখাতেই পছন্দ করেছিলেন। যদিও মিলিন্দ তাকে প্রায় ৬ মাস ফ্রেন্ডজোনে রেখেছিলেন।
কিন্তু সময়ের সাথে সাথে তাদের বন্ধুত্ব গভীর হতে থাকে এবং ধীরে ধীরে এই সম্পর্ক প্রেমে পরিণত হয়। এই সময় তারা পরস্পরকে ভালোভাবে বুঝতে শুরু করে এবং একটি শক্তিশালী বন্ধন তৈরি হয়। অবিকার মতে, মিলিন্ডের সততা, সংবেদনশীলতা এবং সমাজের প্রতি নিষ্ঠা তাকে অত্যন্ত আকর্ষণ করে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে জুটি
গত কয়েক বছর ধরে অবিকা এবং মিলিন্দ তাদের সম্পর্ক নিয়ে কখনোই কোনো পর্দা টানেননি। তারা প্রায়ই সোশ্যাল মিডিয়ায় একসাথে ছবি এবং ভিডিও শেয়ার করেছেন। ছুটির দিনের ভ্রমণ, উৎসবের ছবি, অথবা NGO-র কোনও প্রকল্পের ঝলক—এই জুটি সবসময়ই তাদের ভক্তদের তাদের সম্পর্কের অংশীদার করেছে।
এখন যখন তারা তাদের সগায়েদের ছবি শেয়ার করেছে, তখন ভক্তরা অত্যন্ত উৎসাহিত। তাদের সগায়েদী একটি আত্মীয়সুলভ অনুষ্ঠানে পরিবার এবং ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের উপস্থিতিতে হয়েছে। অবিকা সগায়েদের ছবিতে সুন্দর ঐতিহ্যবাহী পোশাকে দেখা গেছে, যখন মিলিন্দ সরল কিন্তু মার্জিত পোশাক পরেছিলেন।
বিয়ের প্রস্তুতি নিয়ে ব্যস্ত দুজনে
এখন যখন সম্পর্কটি আনুষ্ঠানিক হয়ে গেছে, তখন ভক্তরা জানতে আগ্রহী যে বিয়ে কবে হবে। রিপোর্ট অনুযায়ী, অবিকা এবং মিলিন্ডের বিয়ের প্রস্তুতি জোরেশোরে চলছে এবং শীঘ্রই তারা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হতে পারেন। তবে, বিয়ের তারিখ নিয়ে এখনও কোনও আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করা হয়নি।
অবিকা গৌর একবার তার ইন্টারভিউতে বলেছিলেন যে তিনি এমন এক জীবনসঙ্গীর খোঁজে ছিলেন, যে শুধুমাত্র বুদ্ধিমানই নয় বরং সমাজের প্রতি সংবেদনশীলও হবে। মিলিন্দে তিনি এসবই পেয়েছেন এবং এটাই কারণ যে তিনি আজ এই সম্পর্ককে একটি নতুন দিকে নিয়ে যাচ্ছেন।
টিভি থেকে চলচ্চিত্র পর্যন্ত যাত্রা
উল্লেখ্য, অবিকা গৌর অল্প বয়সেই অভিনয় জীবনের সূচনা করেছিলেন। ‘বালিকা বধূ’তে ছোট্ট আনন্দের চরিত্র তাকে রাতারাতি তারকা করে তুলেছিল। এরপর তিনি ‘সসুরাল সিমর কা’তেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় অভিনয় করেন এবং দক্ষিণ ভারতীয় চলচ্চিত্রেও অভিনয় করেন।
বর্তমানে অবিকা চলচ্চিত্র ছাড়াও ডিজিটাল প্রকল্পেও সক্রিয়। অন্যদিকে, তার ব্যক্তিগত জীবনের এই নতুন সূচনাও ভক্তদের কাছে অত্যন্ত বিশেষ।
অবিকার প্রেমকাহিনী কেন বিশেষ?
এই প্রেমকাহিনীকে বিশেষ করে তোলে এর সাদামাটা কিন্তু শক্তিশালী সম্পর্ক। একদিকে যেখানে মিলিন্দ শোবিজ থেকে দূরে, অন্যদিকে অবিকা সম্পূর্ণরূপে অভিনয়ের জগতের অংশ। তবুও তারা পরস্পরকে বুঝেছে, সময় দিয়েছে এবং একটি শক্তিশালী সম্পর্ক গড়ে তুলেছে।
আজকাল যেখানে সম্পর্ক দ্রুত ভেঙে পড়ে, সেখানে এই দম্পতি একটি আদর্শ হয়ে উঠেছে। অবিকা এবং মিলিন্ডের জুটি প্রমাণ করে যে প্রেমে যদি বন্ধুত্ব, বোঝাপড়া এবং শ্রদ্ধা থাকে, তাহলে সেটা সব বাধা পেরিয়ে যেতে পারে।