ভারতের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ডাঃ এপিজে আব্দুল কালামের জীবনী নির্ভর চলচ্চিত্র নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে আলোচনা চলে আসছিল, কিন্তু এখন সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কান চলচ্চিত্র উৎসব ২০২৫-এ একটি বিশাল মঞ্চে এই অতি প্রতীক্ষিত চলচ্চিত্র ‘কালাম: মিসাইল ম্যান অফ ইন্ডিয়া’র আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করা হয়েছে।
APJ আব্দুল কালাম বায়োপিক: ডাঃ এপিজে আব্দুল কালামের জীবনী নির্ভর অতি প্রতীক্ষিত বায়োপিকের অবশেষে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করা হয়েছে। কান চলচ্চিত্র উৎসবে এই চলচ্চিত্রের ঘোষণা করা হয়, যা বিশ্বজুড়ে ভারতীয়দের এবং বিজ্ঞানপ্রেমীদের মধ্যে উৎসাহ বৃদ্ধি করেছে। সবচেয়ে আকর্ষণীয় দিক হল, এই চলচ্চিত্রে ধনুষ ডাঃ কালামের ভূমিকায় অভিনয় করবেন। ধনুষের অভিনয় দক্ষতা এবং সংবেদনশীলতা এই চরিত্রের জন্য একদম উপযুক্ত বলে মনে করা হচ্ছে।
ডাঃ কালাম কেবল ভারতের ১১তম রাষ্ট্রপতিই ছিলেন না, তাঁকে ‘মিসাইল ম্যান অফ ইন্ডিয়া’ হিসেবেও পরিচিত। তাঁর জীবনযাত্রা – একজন সাধারণ মৎস্যজীবীর ছেলে থেকে ভারতের রাষ্ট্রপতি হওয়া পর্যন্ত – যুবসমাজের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস। এই চলচ্চিত্র আগামী প্রজন্মকে ডাঃ কালামের চিন্তাধারা, সংগ্রাম এবং নিষ্ঠার সাথে পরিচয় করিয়ে দেবে।
পোস্টারে তোলপাড়, ভক্তদের আশা সপ্তম আকাশে
চলচ্চিত্রের প্রথম ঝলক পোস্টার প্রকাশিত হওয়ার সাথে সাথেই সোশ্যাল মিডিয়ায় তোলপাড় শুরু হয়ে যায়। পোস্টারে ধনুষ গম্ভীর ভঙ্গিতে দেখা যাচ্ছে, তার পিছনে মহাকাশ, ক্ষেপণাস্ত্র এবং ভারতের পতাকা উঠে আসছে। এই দৃশ্য দর্শকদের মধ্যে চলচ্চিত্র নিয়ে অসাধারণ উৎসাহ জাগিয়ে তুলেছে। ধনুষ টুইটারে (এখন X) পোস্টারটি শেয়ার করে লিখেছেন, “আমি নিজেকে ভাগ্যবান মনে করছি যে আমাকে ভারতের সবচেয়ে অনুপ্রেরণামূলক বিজ্ঞানী এবং নেতা ডাঃ কালামের জীবন বড় পর্দায় উপস্থাপনের সুযোগ পেয়েছি। এটি আমার সবচেয়ে দায়িত্বপূর্ণ ভূমিকাগুলির মধ্যে একটি।”
পরিচালকের নাম নিয়ে ভক্তদের মিশ্র প্রতিক্রিয়া
একদিকে চলচ্চিত্রের ঘোষণা নিয়ে আনন্দের পরিবেশ বিরাজ করছে, অন্যদিকে চলচ্চিত্রের পরিচালক ওম রাউতকে কেন্দ্র করে সোশ্যাল মিডিয়ায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। ওম রাউত গতবার প্রভাস অভিনীত ‘আদিপুরুষ’ পরিচালনা করেছিলেন, যা সমালোচক ও দর্শক উভয়ের কাছ থেকে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া পাওয়ার পর বক্স অফিসে ব্যর্থ হয়েছিল।
অনেক লোক টুইটারে লিখেছে, “ধনুষের কাস্টিংয়ে আশা জেগেছে, কিন্তু ওম রাউতের নাম দেখে একটু ভয় পাচ্ছি।” অন্যদিকে কিছু ভক্ত এটাও বলেছেন যে ওম রাউতকে এবার বেশি দায়িত্বশীলতার সাথে কাজ করতে হবে কারণ এটি মাত্র একটি চলচ্চিত্র নয়, বরং দেশের কোটি কোটি মানুষের আবেগের সাথে জড়িত একটি গল্প।
চলচ্চিত্রের প্রযোজক হলেন অভিষেক আগরওয়াল, যিনি এর আগে ‘দ্য কাশ্মীর ফাইলস’র মতো বিতর্কিত কিন্তু প্রশংসিত চলচ্চিত্র প্রযোজনা করেছেন। চিত্রনাট্যের দায়িত্বে আছেন সাইভিন কুয়াদ্রাস, যিনি ‘নীর্জা’, ‘পরমাণু’ এবং ‘ময়দান’ এর মতো প্রভাবশালী বায়োপিক লিখেছেন। এতে চলচ্চিত্রের চিত্রনাট্য নিয়ে ভক্তদের অনেক আশা।
জাতীয় পুরষ্কারের আলোচনা শুরু
ধনুষের গম্ভীরতা এবং তাঁর এ পর্যন্ত অভিনয় জীবনকে বিবেচনায় নিয়ে ভক্তরা ইতোমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় দাবি করছেন যে তাঁকে এই ভূমিকার জন্য জাতীয় পুরষ্কার পাওয়া নিশ্চিত। অনেক ব্যবহারকারী লিখেছেন, “থলাইভা ধনুষের এটিই হবে সবচেয়ে বড় চরিত্র। জাতীয় পুরষ্কার পাক্কা।” ডাঃ এপিজে আব্দুল কালাম কেবল ভারতের রাষ্ট্রপতিই ছিলেন না, তিনি কোটি কোটি যুবসমাজের আদর্শ। তাঁর জীবনের সরলতা, নিষ্ঠা এবং বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি আজও অনুপ্রেরণার উৎস।
এই চলচ্চিত্রের মাধ্যমে নতুন প্রজন্ম তাঁর জীবনের অনাবিষ্কৃত দিকগুলি বুঝতে পারবে। বিশেষ করে বিজ্ঞান এবং দেশসেবার ক্ষেত্রে কর্মজীবন গঠন করতে চাওয়া শিশুদের জন্য এই চলচ্চিত্র একটি নির্দেশিকার ভূমিকা পালন করতে পারে।