আমেরিকা শুল্কের সময়সীমা নিয়ে নমনীয়, সময়সীমা বাড়তেও পারে

আমেরিকা শুল্কের সময়সীমা নিয়ে নমনীয়তা দেখাচ্ছে। ট্রাম্প বললেন, সময়সীমা বাড়তে বা কমতে পারে। ভারত প্রতিনিধিদল পাঠিয়েছে, ইউরোপীয় ইউনিয়নও নতুন প্রস্তাব পেয়েছে।

ট্রাম্প: আমেরিকার রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প পারস্পরিক শুল্কের সময়সীমা নিয়ে আরও একবার স্পষ্ট করেছেন যে, এটি কোনো চূড়ান্ত তারিখ নয়। ট্রাম্পের বক্তব্য, তিনি এই সময়সীমা বাড়াতে বা কমাতে পারেন, যা বাণিজ্য চুক্তি কত দ্রুত এগোচ্ছে তার উপর নির্ভর করে। ভারত সহ একাধিক দেশ আমেরিকার সঙ্গে আলোচনার জন্য সক্রিয়, যেখানে হোয়াইট হাউসের প্রেস সচিব এবং অর্থমন্ত্রীও ইঙ্গিত দিয়েছেন যে এই প্রক্রিয়া লেবার ডে পর্যন্ত গড়াতে পারে।

ট্রাম্পের নমনীয় মনোভাব

মার্কিন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প আবারও তাঁর স্পষ্ট এবং চমকপ্রদ মন্তব্যের কারণে শিরোনামে। হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় ট্রাম্প বলেন যে ৯ জুলাই পর্যন্ত নির্ধারিত পারস্পরিক শুল্ক (reciprocal tariff) প্রয়োগের সময়সীমা চূড়ান্ত নয়। তিনি বলেন – “আমরা যা চাই, তা করতে পারি। আমি চাই সময়সীমা কম হোক, তবে এটি বাড়ানোও সম্ভব।” তিনি আরও যোগ করেন, যদি প্রয়োজন হয়, তবে তিনি সরাসরি সব দেশকে জানাতে পারেন যে, এখন থেকে তাঁদের ২৫ শতাংশ শুল্ক দিতে হবে।

হোয়াইট হাউসও জানাল – “সময়সীমা জরুরি নয়”

ট্রাম্পের এই বিবৃতির আগে, হোয়াইট হাউসের প্রেস সচিব ক্যারোলিন লেভিটও বৃহস্পতিবার ইঙ্গিত দেন যে, ৮-৯ জুলাইয়ের সময়সীমা কোনো কঠোর সময়সীমা নয়। তাঁর বক্তব্য ছিল, রাষ্ট্রপতির এই অধিকার আছে যে তিনি পরিস্থিতি অনুযায়ী সময়সীমা পরিবর্তন করতে পারেন। লেভিট আরও যোগ করেন – “যদি দেশগুলি আলোচনার জন্য এগিয়ে না আসে, তাহলে প্রেসিডেন্টের কাছে সরাসরি প্রস্তাব পাঠানোর বিকল্প রয়েছে।”

ভারত পাঠাল তাদের প্রতিনিধিদল

ট্রাম্প সরকারের শুল্ক পরিকল্পনা নিয়ে ভারতও সতর্ক হয়েছে। ভারত সরকার তাদের বাণিজ্য প্রতিনিধিদলকে ওয়াশিংটন পাঠিয়েছে, যাতে আমেরিকার সঙ্গে সরাসরি আলোচনা করা যায়। এই পদক্ষেপ এমন সময়ে নেওয়া হয়েছে যখন আমেরিকা একসঙ্গে একাধিক ফ্রন্টে সক্রিয় – ইরান-এর উপর বিমান হামলার পরিকল্পনা থেকে শুরু করে মার্কিন কংগ্রেসে কর এবং খরচ নিয়ে বিতর্ক পর্যন্ত।

লেবার ডে পর্যন্ত বাড়তে পারে চুক্তির সময়সীমা

মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্টও এই বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করেছেন। তিনি Fox Business Network-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন – “দুনিয়ার অনেক দেশ ভালো প্রস্তাব নিয়ে আসছে। আমাদের ১৮ জন প্রধান বাণিজ্যিক সহযোগী রয়েছে। যদি এদের মধ্যে ১০-১২ জনের সঙ্গে চুক্তি হয়ে যায় এবং আমরা আরও ২০টি বড় অর্থনীতির সঙ্গেও কথা বলছি, তাহলে এই প্রক্রিয়া লেবার ডে পর্যন্ত সম্পূর্ণ হতে পারে।”

৮ জুলাই শেষ হচ্ছে ৯০ দিনের ছাড়

পারস্পরিক শুল্ক ব্যবস্থা নিয়ে এপ্রিল মাসে ট্রাম্প প্রশাসন ঘোষণা করেছিল যে, প্রায় সব বিদেশি পণ্যের উপর নতুন শুল্ক আরোপ করা হবে। যদিও, ১০ শতাংশের বেশি শুল্কের ক্ষেত্রে ৯০ দিনের ছাড় দেওয়া হয়েছিল, যাতে সংশ্লিষ্ট দেশগুলি আলোচনার বিকল্প বেছে নিতে পারে। এই ছাড়ের সময়সীমা ৮ জুলাই শেষ হচ্ছে।

ট্রাম্পের হুঁশিয়ারি

মে মাসের শেষে ট্রাম্প ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতি তাঁর মনোভাব আরও কঠোর করে হুঁশিয়ারি দেন যে, যদি চুক্তি না হয়, তাহলে ইইউ থেকে আসা পণ্যের উপর ৫০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করা যেতে পারে। এটিকে একটি বড় হুঁশিয়ারি হিসেবে দেখা হচ্ছে, কারণ এর আগেই অনেক ইউরোপীয় পণ্যের উপর শুল্ক আরোপ করা হয়েছে।