একটি ছোট গ্রামে একজন বৃদ্ধ বাস করতেন। তিনি দরিদ্র ছিলেন, অর্থাৎ তার কাছে তেমন টাকাপয়সা বা জিনিসপত্র ছিল না। কিন্তু তার হৃদয়ে ছিল অপার দয়া ও প্রেম। তিনি সর্বদা চেষ্টা করতেন যারা দুঃখী বা যাদের সাহায্যের প্রয়োজন, তাদের সাহায্য করার জন্য। গ্রামের লোকেরা তাকে খুব ভালোবাসত কারণ তিনি সবার কথা মনোযোগ সহকারে শুনতেন এবং যতটা সম্ভব সাহায্য করতেন।
একদিনের ঘটনা
একদিন গ্রামে একজন ভিখারি এল। ভিখারি বলতে বোঝায় এমন ব্যক্তি যিনি অন্যদের কাছ থেকে দয়া ভিক্ষা করে জীবন নির্বাহ করেন। তিনি অসুস্থ ও দুর্বল দেখাচ্ছিলেন। তার পোশাক ছিড়ে গেছে এবং নোংরা ছিল, এবং তিনি খুব ক্ষুধার্ত ছিলেন। গ্রামের লোকেরা যখন তাকে দেখত, তখন তারা তাকে কোন সাহায্য করত না। তারা তাকে উপেক্ষা করত।
কিন্তু বৃদ্ধ ব্যক্তি যখন তাকে দেখেন, তখন তিনি দয়ার সাথে তার কাছে গিয়ে জিজ্ঞাসা করেন, “তোমার কি দরকার?” ভিখারি বলল যে তার খাবারের দরকার এবং সে ক্লান্ত, তার বিশ্রামের দরকার।
বৃদ্ধ ব্যক্তি কোনো দ্বিধা ছাড়াই ভিখারিকে তার বাড়িতে নিয়ে গেলেন। তিনি তাকে পরিষ্কার খাবার দিলেন, পানি পান করালেন এবং বিশ্রামের ব্যবস্থা করে দিলেন। ভিখারি খুব খুশি হলো এবং বলল, “আপনি খুব দয়ালু, আমি আপনাকে অনেক ধন্যবাদ জানাই।” বৃদ্ধ ব্যক্তি হেসে উত্তর দিলেন, “যখন আমরা অন্যদের সাহায্য করি, তখন আমাদের মন প্রফুল্ল থাকে। সাহায্য করার মাধ্যমে আমরাও ভালো বোধ করি।”
ভিখারির স্বাস্থ্যের উন্নতি
কিছুদিন কেটে গেল। ভিখারির স্বাস্থ্যের উন্নতি হতে লাগল। সে আগের তুলনায় শক্তিশালী ও সুস্থ দেখাচ্ছিল। এখন সে নিজেও অন্যদের সাহায্য করতে চাইত। বৃদ্ধ ব্যক্তি তাকে তার গ্রামে থাকার অনুমতি দিলেন যাতে সে গ্রামের লোকদের সাহায্য করতে পারে।
ভিখারি গ্রামে থেকে অনেক লোকের সাহায্য করল। সে আর একা ছিল না এবং তার কাছেও মানুষের ভালোবাসা আসতে লাগল।
এই গল্পটি আমাদের শেখায় যে সর্বদা অন্যদের সাহায্য করা উচিত। কেউ দরিদ্র হোক বা ধনী, অসুস্থ হোক বা সুস্থ, আমাদের সবার সাহায্য করা উচিত। সাহায্য করা একটি মহান গুণ। একটু ছোট সাহায্যও কারও জীবনে বড় পরিবর্তন আনতে পারে।
কেন সাহায্য করা জরুরী?
- যখন আমরা কারও সাহায্য করি, তখন আমরা সেই ব্যক্তির দুঃখ কম করি।
- সাহায্য করার ফলে আমরা নিজেরা আনন্দ পাই এবং আমাদের হৃদয় তৃপ্ত হয়।
- সাহায্য করার ফলে সমাজে প্রেম ও ঐক্য বৃদ্ধি পায়।
- যদি আমরা অন্যদের সাহায্য করি, তাহলে যখন আমাদের সাহায্যের প্রয়োজন হবে, তখন মানুষ আমাদের সাহায্য করবে।
ছোট ছোট সাহায্যও বড় প্রভাব ফেলে
কখনও কখনও আমরা ভাবি যে আমার সাহায্য এতটুকু, এতে কিছু ফারাক হবে না। কিন্তু সত্যি কথা হলো যে ছোট ছোট সাহায্যও কারও জীবনে বড় পরিবর্তন আনতে পারে। যেমন এই গল্পে বৃদ্ধ ব্যক্তি ভিখারিকে খাবার ও বিশ্রাম দিয়েছিলেন। এই ছোট সাহায্যটি ভিখারির জন্য অনেক বড় ছিল কারণ সে তখন খুব দুর্বল ও অসুস্থ ছিল।
সাহায্য করতে কেন দ্বিধা করা উচিত নয়?
কখনও কখনও আমরা ভাবি যে সাহায্য করার জন্য আমাদের কিছু বড় করতে হবে, অথবা সাহায্য করার ফলে আমাদের ক্ষতি হতে পারে। কিন্তু তা নয়। মনের সাথে করা যেকোনো সাহায্যই বড়। আপনার তেমন অর্থ বা সম্পদের প্রয়োজন হয় না। শুধু আপনার ইচ্ছা ও দয়ালুতা থাকা জরুরী।
গল্পের অর্থ ও জীবনে ব্যবহার
এই গল্পের অর্থ হলো আমাদের জীবনে দয়ালুতা ও সাহায্য করার भावনাকে বৃদ্ধি করা। ভাবা উচিত যে আমরা অন্যদের ছোট ছোট কিভাবে সাহায্য করতে পারি। চাই তা দরিদ্রকে খাবার দেওয়া হোক, অসুস্থকে ঔষধ দেওয়া হোক, অথবা কারও প্রয়োজনের সময় সহায়তা করা হোক। যদি আমরা সবাই এমনটি করি, তাহলে আমাদের সমাজ আরও উন্নত ও সুখী হবে। এই গল্প থেকে আমরা বুঝতে পারি যে মানুষের সবচেয়ে বড় শক্তি হলো তার দয়ালু হৃদয়।