মোসাদের গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে ইরানে একজনকে ফাঁসি

🎧 Listen in Audio
0:00

ইরানে মোসাদের জন্য গুপ্তচরবৃত্তি করার অভিযোগে ইসমাইল ফেকরিকে ফাঁসিতে ঝুলানো হয়েছে। সরকার জানিয়েছে, আরও নয়জন গুপ্তচরকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ইসরায়েল-ইরান উত্তেজনার মধ্যেই এই ঘটনা সামনে এসেছে।

ইরান: তেহরান ও তেল আবিবের মধ্যে চলমান সংঘাত আরও তীব্র হয়ে উঠেছে। ইরান ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের জন্য গুপ্তচরবৃত্তি করার অভিযোগে একজনকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দিয়েছে। সরকারি গণমাধ্যমের খবরে জানানো হয়েছে, ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তি ইসমাইল ফেকরি, যাকে ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে গ্রেফতার করা হয়েছিল।

কর্তৃপক্ষের দাবি, ফেকরি ইসরায়েলি সংস্থার দুই এজেন্টের সাথে যোগাযোগ করে ইরানের নিরাপত্তা সংক্রান্ত অনেক গোপন তথ্য প্রকাশ করেছিল। বিনিময়ে সে অর্থ পেত। ইরানের গোয়েন্দা সংস্থা ইসমাইল ফেকরির উপর মাসের পর মাস নজরদারি করে প্রমাণ সংগ্রহ করে এবং পরে তাকে গ্রেফতার করে। দীর্ঘ তদন্ত ও মামলার পর আদালত তাকে দেশদ্রোহিতা ও বিদেশি সংস্থার জন্য গুপ্তচরবৃত্তির দোষী সাব্যস্ত করে ফাঁসির আদেশ দেয়।

মোসাদের নেটওয়ার্কের উপর ইরানের বড় অভিযান

ইরান কেবলমাত্র ইসমাইল ফেকরিকেই নয়, গত এক সপ্তাহে মোসাদ-সম্পৃক্ত বলে অভিযোগে আরও নয়জন সন্দেহভাজনকে গ্রেফতার করেছে। মনে করা হচ্ছে, তারা সকলেই একটি সংগঠিত গুপ্তচর নেটওয়ার্কের অংশ ছিল যারা ইসরায়েলকে গোপন তথ্য সরবরাহ করছিল।

কর্তৃপক্ষ এই গ্রেফতারকে ‘নিরাপত্তা ব্যবস্থার বড় সাফল্য’ বলে অভিহিত করেছে। এই অভিযান নিয়ে বলা হচ্ছে, ইরানি গোয়েন্দা সংস্থা দীর্ঘদিন ধরে এমন নেটওয়ার্কের খোঁজ করছিল যা দেশের প্রতিরক্ষা, পারমাণবিক কর্মসূচি ও সামরিক ঘাঁটি সম্পর্কিত তথ্য ফাঁস করছিল।

যুদ্ধের মাঝে গুপ্তচরবৃত্তির জন্য ফাঁসি

এই ঘটনা তখন ঘটেছে যখন ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে সামরিক উত্তেজনা চরমে রয়েছে। গত চার দিন ধরে দুই দেশের মধ্যে সীমিত যুদ্ধের মতো পরিস্থিতি বিরাজ করছে। ইসরায়েলি আকাশ আক্রমণে ইরানের ২০০-রও বেশি নাগরিক ও নিরাপত্তাকর্মীর মৃত্যু হয়েছে এবং ১২০০-রও বেশি মানুষ আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। অন্যদিকে, ইরানি প্রতিরোধ আক্রমণে ইসরায়েলের ২২ জন নাগরিক নিহত হয়েছে এবং কয়েক ডজন আহত হয়েছে বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।

ফেকরি কি একা ছিল নাকি মোসাদের এক অংশ?

ইসমাইল ফেকরির গ্রেফতার ও ফাঁসির পর সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হলো, সে কি একা কাজ করছিল নাকি সে কোনো বড় নেটওয়ার্কের অংশ ছিল? ইরানের গোয়েন্দা সংস্থা এখন এই দিকে গভীর তদন্ত করছে। প্রাথমিক তদন্তে ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে যে ফেকরি কেবল একজন এজেন্ট ছিল না, তার পেছনে একটি পরিকল্পিত পরিকল্পনা এবং শক্তিশালী নেটওয়ার্ক ছিল যা ইসরায়েলের জন্য কাজ করছিল। কিছু গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফেকরি বহু বছর ধরে মোসাদের সাথে যোগাযোগে ছিল এবং ধীরে ধীরে ইরানের বিভিন্ন নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠানের সাথে জড়িত তথ্য সংগ্রহ করতে সক্ষম হয়েছিল।

Leave a comment