খামেনেইয়ের ভাতিজার চমকপ্রদ দাবি: ইসলামী শাসন উচ্ছেদই শান্তির পথ

🎧 Listen in Audio
0:00

ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধের মধ্যেই খামেনেইয়ের ভাতিজা মাহমুদ মোরদখানি ইসলামী শাসন ব্যবস্থা উচ্ছেদের দাবি জানিয়েছেন। তিনি এটাকে শান্তির জন্য অপরিহার্য বলে উল্লেখ করেছেন। পূর্ব শাহের পুত্রও এতে সমর্থন দিয়েছেন।

ইরান: ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান যুদ্ধের মধ্যেই ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনেইয়ের পরিবার থেকেই এক চমকপ্রদ বক্তব্য উঠে এসেছে। ফ্রান্সে নির্বাসিত জীবনযাপনকারী খামেনেইয়ের ভাতিজা মাহমুদ মোরদখানি ইসলামী প্রজাতন্ত্রের শাসনব্যবস্থাকে শান্তির পথে সবচেয়ে বড় বাধা বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেছেন, এই শাসনব্যবস্থার অবসান ঘটানো অপরিহার্য, তার জন্য যাই করতে হোক না কেন। মোরদখানি এবং পূর্ব শাহের পুত্র রেজা পাহলভি উভয়েই শাসন পরিবর্তনের আহ্বান জানিয়েছেন, যার ফলে ইরানে রাজনৈতিক অস্থিরতা আরও তীব্র হয়েছে।

খামেনেইয়ের ভাতিজার কঠোর মন্তব্য

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনেইয়ের ভাতিজা মাহমুদ মোরদখানি এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন যে, তিনি যুদ্ধের সমর্থক নন, কিন্তু তিনি পুরোপুরি বিশ্বাস করেন যে ইরানে সच्ছ শান্তি তখনই আসবে যখন বর্তমান ইসলামী শাসন ব্যবস্থা শেষ হবে।

ফ্রান্সে বসবাসকারী মোরদখানি স্পষ্ট ভাষায় বলেছেন, “যে কেউ এই শাসন ব্যবস্থা উচ্ছেদ করতে পারে, সেই অপরিহার্য। এখন যখন আমরা এই মোড়ে এসে পৌঁছেছি, তখন এটি বাস্তবায়ন করাই অবশ্যম্ভাবী।” এই বক্তব্য এমন এক সময়ে এসেছে যখন ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধ দ্বিতীয় সপ্তাহে প্রবেশ করেছে এবং অঞ্চলে উত্তেজনা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে।

ইসলামী প্রজাতন্ত্রের অবসানই শান্তির একমাত্র পথ

মোরদখানি ১৯৮৬ সালে ইরান ত্যাগ করেছিলেন এবং তখন থেকেই তিনি তার চাচা খামেনেইয়ের ক্ষমতা ও শাসনব্যবস্থার তীব্র সমালোচক ছিলেন। তিনি আরও বলেছেন যে, ইসরায়েলের সাথে সামরিক সংঘর্ষ তাঁকে অত্যন্ত দুঃখিত করেছে, কিন্তু এটি এমন এক শাসনব্যবস্থায় অনিবার্য যা কোনও ধরণের সংস্কার গ্রহণ করতে প্রস্তুত নয়।

তার মতে, “এই শাসনব্যবস্থা নতুন করে নিজেকে গঠন করতে চায় না, পরিবর্তনের চেষ্টাও করে না। এমন পরিস্থিতিতে শান্তির কোন সম্ভাবনা থাকে না। আমার দুঃখ হচ্ছে যে পরিস্থিতি এতদূর এসে পৌঁছেছে, কিন্তু সমাধান এই শাসন ব্যবস্থার অবসানেই লুকিয়ে আছে।”

খামেনেইয়ের মৃত্যু কি শাসন ব্যবস্থার অবসান ঘটাবে?

যখন তাকে জিজ্ঞাসা করা হয় যে খামেনেইয়ের হত্যা কি শাসনব্যবস্থার অবসান ঘটাবে, তখন তিনি বলেছেন, “এটা আলাদা বিষয়। শুধুমাত্র একজন ব্যক্তির মৃত্যুতে পুরো ব্যবস্থা শেষ হয় না। কিন্তু যদি এই ব্যবস্থা তার অবসানের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, তাহলে যত তাড়াতাড়ি এর অবসান হয় ততই ভালো।”

তিনি আরও যোগ করেছেন যে, ইরানে ইন্টারনেট ব্ল্যাকআউটের কারণে তিনি দেশে থাকা তার সমর্থকদের সাথে যোগাযোগ করতে পারছেন না, কিন্তু তিনি বিশ্বাস করেন যে ইরানি জনগণ এই শাসনব্যবস্থার দুর্বলতার ইঙ্গিত দেখে সন্তুষ্ট।

আমেরিকা ও ট্রাম্পের আগ্রাসী ভূমিকা

ইরানের উপর আন্তর্জাতিক চাপও ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমেরিকার সাবেক রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প সোশ্যাল মিডিয়ায় নিঃশর্ত আত্মসমর্পণের দাবি জানিয়ে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় সামরিক অভিযানের ইঙ্গিত দিয়েছেন। রিপোর্ট অনুযায়ী, ট্রাম্প তার উপদেষ্টাদের সাথে পারমাণবিক কর্মসূচি বন্ধ করার জন্য সামরিক বিকল্প নিয়ে আলোচনা করেছেন, যদিও এখনও পর্যন্ত কোন চূড়ান্ত আদেশ জারি করা হয়নি।

পূর্ব শাহের পুত্রের তীব্র আক্রমণ

ইরানের পূর্ব শাহ মোহাম্মদ রেজা পাহলভির পুত্র রেজা পাহলভিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ইসলামী শাসনব্যবস্থার বিরুদ্ধে তীব্র বক্তব্য দিয়েছেন। তিনি বলেছেন যে, খামেনেই “একটি ভীতু ইঁদুরের মতো ভূগর্ভে চলে গেছে এবং ইসলামী প্রজাতন্ত্র তার শেষ পর্যায়ে রয়েছে।”

রেজা পাহলভি আরও বলেছেন, “এই শাসন ব্যবস্থা এখন অবসানের দিকে এগিয়ে চলেছে। যা শুরু হয়েছে, তা আর থামানো যাবে না। ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল এবং আমরা ইরানের ইতিহাসের এই সিদ্ধান্তমূলক মোড় থেকে একসাথে অতিক্রম করব।”

Leave a comment