ইরান-আমেরিকা পারমাণবিক আলোচনা: খামেনেই আমেরিকার শর্তকে ‘অপমানজনক’ আখ্যা

🎧 Listen in Audio
0:00

ইরান-আমেরিকা পারমাণবিক আলোচনায় উত্তেজনা বেড়েছে। খামেনেই আমেরিকার শর্তগুলোকে অপমানজনক বলে আখ্যায়িত করেছেন। চার দফা আলোচনার পরেও কোনো সমঝোতা হয়নি। পঞ্চম দফা রোমে হতে পারে।

আমেরিকা - ইরান: ইরান ও আমেরিকার মধ্যে চলমান পারমাণবিক আলোচনার চার দফা সম্পন্ন হলেও কোনো সুনির্দিষ্ট ফলাফল বেরিয়ে আসেনি। এদিকে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনেই আমেরিকার শর্তগুলোকে “অপমানজনক” বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, আমেরিকার আচরণ এমন যেন তারা ইরানকে জোর করে নত করতে চায়।

খামেনেই বলেন- আমেরিকার দাবিগুলো গ্রহণযোগ্য নয়

ইরানের সরকারি গণমাধ্যমের মতে, খামেনেই স্পষ্ট করে বলেছেন যে তিনি পারমাণবিক আলোচনা নিয়ে আশ্বস্ত নন এবং তিনি মনে করেন না যে আমেরিকার সাথে কোনো সন্তোষজনক চুক্তি সম্ভব। তিনি বলেছেন, “আমি মনে করি না যে আমেরিকার সাথে এই আলোচনা কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছাবে। আমেরিকাকে উচিত ইরানের কাছে অত্যাধিক দাবি করা বন্ধ করা।”

ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ নিয়ে আমেরিকা-ইরান आमने-সामने

মূল বিরোধের কেন্দ্রবিন্দু ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ (uranium enrichment)। আমেরিকার দাবি, ইরান যদি ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ অব্যাহত রাখে, তাহলে ভবিষ্যতে পারমাণবিক বোমা তৈরি করতে পারে। অন্যদিকে ইরানের দাবি, তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি সম্পূর্ণরূপে শান্তি ও শক্তি উৎপাদনের জন্য।

ইরানের মন্ত্রী আলোচনা ব্যর্থতার আশঙ্কা প্রকাশ করেন

ইরানের রাজনৈতিক বিষয়ক উপ-বিদেশমন্ত্রী মাজিদ তখত-রওয়ানচি সোমবার স্পষ্ট করে বলেছেন, যদি আমেরিকা ইরানকে দেশীয়ভাবে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ থেকে বিরত রাখতে চায়, তাহলে এই আলোচনা সফল হবে না। তিনি বলেছেন, “আমরা আমাদের সার্বভৌমত্বের সাথে আপোষ করব না।”

গোপন প্রস্তাবে বিবেচনা করছে ইরান

ইরানের আরেকজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, উপ-বিদেশমন্ত্রী কাজেম গরিবা বাদী মঙ্গলবার বলেছেন যে আমেরিকা থেকে একটি নতুন প্রস্তাব এসেছে, যা বিবেচনা করা হচ্ছে। এই প্রস্তাবে কী আছে তা স্পষ্ট নয়, তবে ইঙ্গিত রয়েছে যে আমেরিকা এখনও ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ বন্ধ করার বিনিময়ে ইরানের উপর থেকে কঠোর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করার দাবি করছে।

ট্রাম্পের পুরোনো হুমকি আবার আলোচনায়

এই সমস্ত বিতর্কের মধ্যে, पूर्व আমেরিকান রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের হুমকির কথাও আলোচনায় আছে। ট্রাম্প তার কার্যকালে বারবার সতর্ক করে দিয়েছিলেন যে যদি ইরান চুক্তি না করে, তাহলে তিনি সামরিক পদক্ষেপ নিতে পারেন। তিনি বলেছিলেন, “যদি ইরান দ্রুত পদক্ষেপ না নেয়, তাহলে তার জন্য গুরুতর পরিণতি হবে।”

২০১৫ সালের পারমাণবিক চুক্তি এবং তার ভাঙন

২০১৫ সালে ওবামা প্রশাসনের সময় আমেরিকা ও ইরানের মধ্যে একটি ঐতিহাসিক পারমাণবিক চুক্তি হয়েছিল। এই চুক্তির অধীনে ইরান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণে কঠোর সীমা মেনে নিয়েছিল এবং বিনিময়ে তার উপর আরোপিত আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়েছিল। কিন্তু ট্রাম্প প্রশাসন ২০১৮ সালে এই চুক্তি একতরফাভাবে বাতিল করে এবং আবার ইরানের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে।

ইরান আবার সমৃদ্ধকরণ ক্ষমতা বাড়িয়েছে

ট্রাম্পের সিদ্ধান্তের পর, ইরানও প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ হিসেবে ধীরে ধীরে তার ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ ক্ষমতা বৃদ্ধি করেছে। এতে আমেরিকা ও ইউরোপীয় দেশগুলির উদ্বেগ আরও বেড়েছে। এখন নতুন আলোচনার লক্ষ্য হল ইরানকে আবার নিয়ন্ত্রণে আনা, কিন্তু ইরান নিজেকে কোনও ধরনের চাপে মানতে রাজি নয়।

Leave a comment