মার্কিন আদালত ট্রাম্প প্রশাসনের বিশ্বব্যাপী শুল্ক বজায় রাখার অনুমতি দিয়েছে। ৯ জুলাই শুল্ক বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে, চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত সুপ্রিম কোর্টের হাতে।
আমেরিকা: ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন মার্কিন আদালত থেকে বিশ্বব্যাপী শুল্ক নীতির ক্ষেত্রে বড় সুযোগ পেয়েছে। আদালত অস্থায়ীভাবে শুল্ক নীতি বহাল রাখার অনুমতি দিয়েছে। ৯ জুলাইয়ের পর শুল্কের হার বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত মার্কিন সুপ্রিম কোর্টের উপর নির্ভর করবে।
মার্কিন আদালতের রায় ট্রাম্পের পক্ষে
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মঙ্গলবার আদালত সাবেক রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের গ্লোবাল শুল্ক নীতি নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ রায় দিয়েছে। আদালত ট্রাম্প প্রশাসনকে অস্থায়ীভাবে এই নীতি বহাল রাখার অনুমতি দিয়েছে। এই রায় এমন এক সময়ে এসেছে যখন আগামী সপ্তাহগুলিতে ট্রাম্পের দ্বারা শুল্কের হার বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে।
এই রায় অনুসারে, আদালত নিম্ন আদালতের সেই আদেশে স্থগিতাদেশ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে যা ট্রাম্পের শুল্ক নীতিতে প্রশ্ন তুলেছিল। এর ফলে ট্রাম্প প্রশাসন তাদের অর্থনৈতিক নীতি বজায় রাখার অস্থায়ী অনুমতি পেয়েছে।
৯ জুলাই শুল্ক স্থগিতাদেশ শেষ হচ্ছে
ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক নীতি অনুসারে "প্রত্যুত্তর শুল্ক" ৯০ দিনের জন্য স্থগিত ছিল, যা ৯ জুলাই শেষ হতে চলেছে। এর অর্থ হল, যদি কোনও দেশের সাথে আমেরিকার বাণিজ্য চুক্তি না হয়, তাহলে সেই দেশের উপর আমদানি শুল্ক বা ট্যারিফ রেটস ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেতে পারে।
আদালতের এই অন্তর্বর্তীকালীন রায়ের ফলে ট্রাম্পের শুল্কের হার সম্ভাব্য বৃদ্ধির পথ স্পষ্ট হচ্ছে। এখন দেখার বিষয় হলো জুলাইয়ের আগে মার্কিন সুপ্রিম কোর্ট এই বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে কি না।
আদালত বিষয়টিকে "অসাধারণভাবে গুরুত্বপূর্ণ" বলে মনে করেছে
রায় প্রদান করার সময় আদালত এই মামলাকে "অসাধারণভাবে গুরুত্বপূর্ণ" বলে উল্লেখ করেছে এবং এটি দ্রুত নিষ্পত্তি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পরবর্তী শুনানির তারিখ ৩১ জুলাই নির্ধারণ করা হয়েছে। এর অর্থ হল শুল্ক নীতি নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এখনও বাকি আছে, তবে ততক্ষণ ট্রাম্পের নীতি কার্যকর থাকবে।
IEEPA আইনের আওতায় শুল্ক নীতি কার্যকর করা হয়েছিল
ডোনাল্ড ট্রাম্প ১৯৭৭ সালের ইন্টারন্যাশনাল ইমার্জেন্সি ইকোনমিক পাওয়ার্স অ্যাক্ট (IEEPA) এর আওতায় এই শুল্ক নীতি কার্যকর করেছিলেন। এই আইন সাধারণত যুদ্ধ, জাতীয় নিরাপত্তা বা জরুরি পরিস্থিতিতে ব্যবহার করা হয়।
IEEPA এর আওতায় ট্রাম্প প্রশাসন বিশ্বব্যাপী শুল্কের আওতায় ১০% শুল্ক আরোপ করেছিল, যার মধ্যে চীন, কানাডা, মেক্সিকো এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলিতে অতিরিক্ত শুল্কও অন্তর্ভুক্ত ছিল। যদিও একটি ট্রেড কোর্ট আগে IEEPA এর এই ব্যবহারকে অনুচিত বলে উল্লেখ করে বলেছিল যে এটি রাষ্ট্রপতিকে অসীম আমদানি শুল্ক আরোপ করার অনুমতি দেয় না।
নিম্ন আদালতের রায়কে চ্যালেঞ্জ
এই নীতি নিয়ে বেশ কিছু বাণিজ্যিক গোষ্ঠী এবং কোম্পানি আদালতে গিয়েছিল। এর মধ্যে নিউইয়র্কের ওয়াইন আমদানিকারক কোম্পানি V.O.S. Selectionsও রয়েছে, যা দাবি করেছিল যে শুল্ক বৃদ্ধির ফলে তাদের ব্যয় অত্যধিক বৃদ্ধি পাবে এবং তারা দেউলিয়া হতে পারে।
এছাড়াও, অনেক ডেমোক্র্যাট-শাসিত রাজ্যও এই নীতিকে অসংবিধানবদ্ধ বলে উল্লেখ করে মামলা দায়ের করেছিল। তাদের দাবি ছিল যে এই শুল্ক নীতি স্থানীয় অর্থনীতির জন্য ক্ষতিকারক এবং আমেরিকার বাণিজ্য জগতকে অস্থির করে তুলতে পারে।
ব্যবসায়ীদের জন্য অনিশ্চয়তার পরিস্থিতি
যদিও আদালতের এই রায়ে ট্রাম্প প্রশাসন স্বস্তি পেয়েছে, তবে আমেরিকান এবং বিশ্বব্যাপী ব্যবসায়ী সম্প্রদায় এখনও অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছে। যদি ৯ জুলাইয়ের পর শুল্কের হার বৃদ্ধি পায় এবং সুপ্রিম কোর্ট হস্তক্ষেপ না করে, তাহলে অনেক ব্যবসার ব্যাপক ক্ষতি হতে পারে।
আমদানিকারক, বিশেষ করে খাদ্য, ফ্যাশন এবং প্রযুক্তি খাতের সাথে যুক্ত ব্যবসায়ীরা ইতিমধ্যেই দাম বৃদ্ধি এবং সরবরাহ শৃঙ্খলে বাধার সম্মুখীন হয়েছে। এই নীতির ফলে ছোট ব্যবসায়ী এবং ভোক্তাদের উপর সরাসরি প্রভাব পড়তে পারে।