ব্যাংককে বিমস্টেকের ষষ্ঠ সম্মেলন: প্রধানমন্ত্রী মোদীর উপস্থিতি

ব্যাংককে বিমস্টেকের ষষ্ঠ সম্মেলন: প্রধানমন্ত্রী মোদীর উপস্থিতি
সর্বশেষ আপডেট: 03-04-2025

৪ঠা এপ্রিল ব্যাংককে বিমস্টেক (BIMSTEC) এর ষষ্ঠ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে চলেছে, যেখানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও উপস্থিত আছেন। বিমস্টেক, অর্থাৎ বঙ্গোপসাগরীয় বহু-ক্ষেত্রীয় প্রযুক্তি ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা উদ্যোগ, একটি আঞ্চলিক সংগঠন।

Bimstec 6th Summit: বঙ্গোপসাগরীয় আঞ্চলিক প্রযুক্তি ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা উদ্যোগ (BIMSTEC) এর ষষ্ঠ শীর্ষ সম্মেলন ৪ঠা এপ্রিল ব্যাংককে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে। এই ঐতিহাসিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ইতোমধ্যেই ব্যাংককে পৌঁছে গেছেন, যেখানে তাঁর অভ্যর্থনা জানানো হয়েছে। সম্মেলনের একদিন আগে ৩ এপ্রিল পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে, অন্যদিকে ২ এপ্রিল উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের বৈঠক এই অনুষ্ঠানের ভিত্তি স্থাপন করেছে।

কী BIMSTEC?

BIMSTEC একটি বহুপাক্ষিক সংগঠন যা দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াকে সংযুক্ত করে। এর সাতটি সদস্য দেশ রয়েছে:

বাংলাদেশ
ভারত
ভুটান
শ্রীলঙ্কা
মায়ানমার
নেপাল
থাইল্যান্ড

এই সংগঠনের সদর দপ্তর বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় অবস্থিত। ১৯৯৭ সালে গঠিত এই সংগঠনের প্রাথমিক উদ্দেশ্য অর্থনৈতিক সহযোগিতা এবং প্রযুক্তিগত অংশীদারিত্বকে উন্নত করা। প্রাথমিকভাবে এটি বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, ভারত এবং থাইল্যান্ডের মধ্যে গঠিত হয়েছিল, যা পরবর্তীকালে অন্যান্য দেশের সাথে সম্প্রসারিত হয়।

বিমস্টেকের শক্তি এবং ভারতের ভূমিকা

বিমস্টেক কেবলমাত্র দক্ষিণ এশিয়া নয়, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মধ্যেও একটি সেতু হিসেবে কাজ করে। ভারত এই সংগঠনের সবচেয়ে প্রভাবশালী সদস্যদের মধ্যে একটি। প্রধানমন্ত্রী মোদী ২০১৯ সালে তাঁর শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে বিমস্টেক সদস্য দেশগুলির নেতাদের আমন্ত্রণ জানিয়ে সংগঠনের ভূমিকাকে আরও জোরদার করেছিলেন।

বিমস্টেকের শক্তির অনুমান করা যায় এই ব্যাপার থেকে যে, প্রতি বছর বিশ্বব্যাপী বাণিজ্যের এক-চতুর্থাংশ বঙ্গোপসাগর দিয়ে যায়। সংগঠনের সদস্য দেশগুলির মধ্যে সহযোগিতার ফলে কেবলমাত্র আঞ্চলিক বাণিজ্যের বৃদ্ধিই হয় না, বরং সন্ত্রাসবাদ, জলবায়ু পরিবর্তন এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ইত্যাদি বিষয়েও যৌথ প্রচেষ্টা নেওয়া হয়।

BIMSTEC-এর কূটনৈতিক গুরুত্ব

বিমস্টেকের গুরুত্ব আরও বেড়ে যায় কারণ এই সংগঠন দক্ষিণ এশিয়ার এমন দেশগুলিকে এক প্ল্যাটফর্মে নিয়ে আসে যারা প্রায়শই সার্ক-এ পাকিস্তানের বাধার কারণে তাদের মতামত প্রকাশ করতে পারে না। এর মাধ্যমে ভারত তার প্রতিবেশী দেশগুলির সাথে অর্থনৈতিক ও কৌশলগত সম্পর্ককে নতুন দিক দিতে চেষ্টা করছে।

হিন্দ-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে স্থায়িত্ব ও উন্নয়নের জন্য বিমস্টেককে একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হিসেবে দেখা হচ্ছে। এই সংগঠন কেবলমাত্র আঞ্চলিক সহযোগিতাকে উন্নত করে না, বরং বিশ্বব্যাপী মঞ্চেও এশীয় শক্তির প্রদর্শন করে। বিমস্টেকের ষষ্ঠ শীর্ষ সম্মেলনে সংযোগ, বাণিজ্য, শক্তি এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা নিয়ে আলোচনার আশা করা হচ্ছে। ভারতের চেষ্টা থাকবে সংগঠনের অন্যান্য সদস্যদের সাথে মিলে নতুন অর্থনৈতিক ও কৌশলগত উদ্যোগগুলিকে গতি দেওয়া।

Leave a comment