শিখ নেতা দয়া সিংহ ওয়াক্ফ সংশোধন আইন ২০২৫ সুপ্রিম কোর্টে চ্যালেঞ্জ করেছেন। তিনি অমুসলিমদের ওয়াক্ফ দান থেকে বিরত রাখাকে মৌলিক অধিকারের লঙ্ঘন বলে উল্লেখ করেছেন।
ওয়াক্ফ আইন: ওয়াক্ফ সংশোধন আইন ২০২৫-এর বিরোধ থামছে বলে মনে হচ্ছে না। এই আইনের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আরও একটি রিট আবেদন দায়ের করা হয়েছে। গুরুগ্রামস্থিত গুরুদ্বার সিংহ সভা-র সভাপতি দয়া সিংহ এই রিট আবেদন দায়ের করেছেন। তিনি কেন্দ্র সরকারের এই নতুন সংশোধনকে "সংবিধানের মূল্যবোধের বিরুদ্ধে" বলে উল্লেখ করেছেন এবং দাবি করেছেন যে এই আইন ভারতের ধর্মনিরপেক্ষতার মূলনীতি এবং ধর্মীয় স্বাধীনতার অধিকারের লঙ্ঘন করে।
আবেদনকারীর আপত্তি কী?
দয়া সিংহ তার আবেদনে বলেছেন যে, ওয়াক্ফ সংশোধন আইন ২০২৫, অমুসলিমদের ওয়াক্ফ প্রতিষ্ঠানে দান করতে বাধা দেয়, যা সংবিধান অনুযায়ী প্রাপ্ত মৌলিক অধিকার—যেমন ধর্মীয় প্রকাশ, বিশ্বাসের স্বাধীনতা এবং সম্পত্তির মালিকানা—এর সরাসরি লঙ্ঘন।
তিনি আরও যুক্তি দিয়েছেন যে, হিন্দু ও শিখ ধর্মীয় ট্রাস্ট যেখানে সম্পূর্ণ স্বায়ত্তশাসন পেয়েছে, সেখানে ওয়াক্ফ বোর্ডের উপর সরকারের নিয়ন্ত্রণ বৃদ্ধি করা হয়েছে। এটি ধারা ১৪ (সমতা অধিকার)-এর লঙ্ঘন।
"দান করা শিখ ধর্মের একটি প্রথা"
দয়া সিংহ তার আবেদনে লিখেছেন যে, শিখ ধর্মে দানকে (দান-ধ্যান) অত্যন্ত পবিত্র বলে মনে করা হয় এবং এর মধ্যে অন্যান্য ধর্মের লোকদের দানও অন্তর্ভুক্ত। তিনি বলেছেন যে, যদি কোনও অমুসলিম ব্যক্তি ওয়াক্ফে সম্পত্তি দান করতে চায়, তাহলে তার উপর "৫ বছর ইসলাম অনুশীলনের শর্ত" আরোপ করা সম্পূর্ণরূপে मनमानী এবং বৈষম্যমূলক।
সরকারের হস্তক্ষেপ নিয়ে প্রশ্ন উত্থাপন
আবেদনকারী রাজ্য সরকার কর্তৃক ওয়াক্ফ সম্পত্তির তত্ত্বাবধান এবং দানের নিয়ন্ত্রণকেও অসংবিধানসম্মত বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেছেন যে, সরকার ধর্মীয় পরিচয়ের ভিত্তিতে কারও দান বা ভক্তিকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। এই আইন সরকার এবং ধর্মের মধ্যে দূরত্ব (ধর্ম ও রাষ্ট্রের পৃথকীকরণ)-এর নীতিরও বিরুদ্ধে।
দয়া সিংহ এই আবেদন আইনজীবী শেখাওয়াত সাইকওয়ালের মাধ্যমে দায়ের করেছেন। ইতিমধ্যে সুপ্রিম কোর্ট বুধবার ওয়াক্ফ আইন ২০২৫-এর উপর ইতোমধ্যে लंबিত আবেদনগুলোর উপরও শুনানি করবে, ফলে এই বিষয়টি জাতীয় ও ধর্মীয় আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে।