৫৫তম জন্মদিনে প্রধানমন্ত্রী মোদীসহ নেতা ও সমর্থকদের কাছ থেকে শুভেচ্ছা পেলেন রাহুল গান্ধী, ২০২৪-এর দ্বৈত বিজয়ের পর বৃদ্ধি পেল রাজনৈতিক গুরুত্ব।
Rahul Gandhi Birthday: ভারতীয় রাজনীতির অন্যতম প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব এবং লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী বুধবার, ১৯ জুন ২০২৫, তার ৫৫তম জন্মদিন পালন করেন। এই উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী থেকে শুরু করে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়গে, কে.সি. বেণুগোপাল এবং অশোক গেহলোত সহ অনেক বড় নেতা তাকে শুভেচ্ছা জানান।
এই বছরের জন্মদিন বিশেষ হয়েছে কারণ রাহুল গান্ধী সম্প্রতি ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে রায়বেরেলি ও ওয়াইনাদ দুটি আসনেই ঐতিহাসিক বিজয় অর্জন করেছেন। তিনি রায়বেরেলিকে তার কর্মভূমি হিসেবে বেছে নিয়েছেন, অন্যদিকে ওয়াইনাদ আসনে এখন তার বোন প্রিয়াঙ্কা গান্ধী ওয়াদ্রা উপনির্বাচনের মাধ্যমে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
প্রধানমন্ত্রী মোদী শুভেচ্ছা জানান
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী টুইট করে রাহুল গান্ধীকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, 'লোকসভার বিরোধী দলনেতা শ্রী রাহুল গান্ধীকে জন্মদিনের আন্তরিক শুভেচ্ছা। তার দীর্ঘায়ু ও সুস্বাস্থ্য কামনা করছি।'
রাজনৈতিক মতবিরোধ সত্ত্বেও প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া এই শুভেচ্ছা ভারতীয় গণতন্ত্রের মর্যাদা ও গৌরবের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
রাহুল গান্ধী: এক নজর তাঁর জীবন ও শিক্ষা সম্পর্কে
রাহুল গান্ধীর জন্ম ১৯ জুন ১৯৭০ সালে নয়াদিল্লিতে। তিনি প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী এবং প্রাক্তন কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীর জ্যেষ্ঠ পুত্র। তিনি ভারত ও বিদেশে প্রাথমিক শিক্ষা লাভ করেন।
ফ্লোরিডার রোলিংস কলেজ থেকে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করার পর তিনি কেম্ব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রিনিটি কলেজ থেকে এম.ফিল. করেছেন। শিক্ষা শেষে কিছুদিন লন্ডনস্থ মনিটর গ্রুপ নামক পরামর্শদাতা প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন এবং পরে ভারতে ফিরে মুম্বাইতে একটি টেক কোম্পানি প্রতিষ্ঠায় অবদান রাখেন।
২০০৪ থেকে এ পর্যন্ত রাজনৈতিক যাত্রা
রাহুল গান্ধীর রাজনৈতিক যাত্রা শুরু হয় ২০০৪ সালে যখন তিনি আমেঠি থেকে লোকসভা নির্বাচন জিতে সংসদে প্রবেশ করেন। এরপর ২০০৯ এবং ২০১৪ সালেও তিনি আমেঠি থেকে সাংসদ নির্বাচিত হন।
যদিও ২০১৯ সালে তাকে স্মৃতি ইরানীর কাছে পরাজিত হতে হয়, তবে তিনি কেরালার ওয়াইনাদ থেকে নির্বাচন জিতে সংসদে তার উপস্থিতি বজায় রাখেন।
২০২৪ লোকসভা নির্বাচনে তিনি রায়বেরেলি ও ওয়াইনাদ উভয় স্থানেই জয়ী হন। পরে তিনি রায়বেরেলি আসন ধরে রাখেন এবং ওয়াইনাদ আসন তার বোন প্রিয়াঙ্কা গান্ধীকে দেন।
দলের নেতারা শুভেচ্ছা জানান
কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়গে রাহুলকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে তাকে 'সংবিধানের মূল্যবোধের রক্ষাকর্তা' বলে অভিহিত করেন। তিনি লেখেন, 'আপনার সমর্পণ সামাজিক ন্যায়, সমতা ও করুণার জন্য অনুপ্রেরণাদায়ক।'
কংগ্রেস মহাসচিব কে.সি. বেণুগোপালও রাহুলের প্রশংসা করে বলেন, 'দেশকে আজ এমন একজন নেতার প্রয়োজন যিনি ঘৃণার জবাবে প্রেম দেন এবং সামাজিক পরিবর্তনের বাহক।' তিনি ভারত জোড়ো যাত্রাকে সামাজিক অন্যায়ের বিরুদ্ধে একটি বিপ্লবী উদ্যোগ বলে অভিহিত করেন।
অশোক গেহলোত নেতৃত্বের পক্ষে আওয়াজ তোলেন
রাজস্থানের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলোত রাহুল গান্ধীকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, 'আপনি এখন দেশের নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য প্রস্তুত।' তিনি আরও বলেন, রাহুল গান্ধীর সমর্পণ সংবিধান ও গণতন্ত্রের রক্ষার জন্য প্রশংসনীয়।
রাহুল গান্ধীর জনপ্রিয়তা ও ভবিষ্যৎ পথ
রাহুল গান্ধীর রাজনীতি এখন ঐতিহ্যবাহী সীমানা অতিক্রম করে সোশ্যাল মিডিয়া, জনযাত্রা এবং যুবসমাজের সাথে যোগাযোগের দিকে এগিয়ে চলেছে। ভারত জোড়ো যাত্রার মাধ্যমে তিনি দেশের বিভিন্ন স্থানের মানুষের সাথে দেখা করেন এবং সামাজিক বিষয়গুলিতে তাঁর স্পষ্ট মতামত ব্যক্ত করেন।
৫৫তম জন্মদিন উপলক্ষে পাওয়া অসংখ্য শুভেচ্ছা এই ব্যাপারটি স্পষ্ট করে তোলে যে রাহুল গান্ধী দেশের রাজনৈতিক আলোচনায় কতটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন। সমর্থকেরা তাকে ভবিষ্যতের প্রধানমন্ত্রী মনে করেন, অন্যদিকে সমালোচকরাও তার প্রচেষ্টাকে উপেক্ষা করতে পারেন না।