‘অপারেশন সিন্দুর’ ও যুদ্ধবিরতি: কংগ্রেসের একাকী সংগ্রাম

🎧 Listen in Audio
0:00

কংগ্রেস ‘অপারেশন সিন্দুর’ এবং যুদ্ধবিরতির বিষয়ে সংসদের বিশেষ অধিবেশন আহ্বানের দাবি জানিয়েছে, কিন্তু বিরোধী দলগুলির সমর্থন না পাওয়ায় দলটি একাকী হয়ে পড়েছে।

অপারেশন-সিন্দুর: পাকিস্তানের সন্ত্রাসবাদী শিবিরগুলির বিরুদ্ধে চলমান ‘অপারেশন সিন্দুর’-এর মধ্যে, যুদ্ধবিরতির সিদ্ধান্ত সংসদে নতুন বিতর্কের সূত্রপাত করেছে। কংগ্রেস এই বিষয়ে সংসদের বিশেষ অধিবেশন আহ্বানের দাবি করেছিল। রাহুল গান্ধী, মল্লিকার্জুন খড়গে এবং জয়রাম রমেশ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লিখে এই বিষয়ে আলোচনার আহ্বান জানিয়েছিলেন। তাঁদের বক্তব্য ছিল, এটি জাতীয় নিরাপত্তার সাথে জড়িত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এবং সংসদে এর উপর খোলামেলা আলোচনা হওয়া উচিত।

কিন্তু, বিরোধীদের মধ্যে কংগ্রেসের এই দাবিতে ব্যাপক মতবিরোধ দেখা দিয়েছে। শরদ পাওয়ার, মমতা ব্যানার্জী এবং অখিলেশ যাদবের মতো প্রধান বিরোধী নেতারা এই বিশেষ অধিবেশনের বিরোধী এবং তাঁদের বক্তব্য, জাতীয় নিরাপত্তার এই বিষয়টি অত্যন্ত সংবেদনশীল, সংসদে এর উপর আলোচনা করা উচিত নয়।

যুদ্ধবিরতি এবং আমেরিকার রাষ্ট্রপতি ট্রাম্পের দাবিতে কংগ্রেসের প্রশ্ন

কংগ্রেস নেতারা আমেরিকার রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের দাবিকে নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন, যেখানে তিনি পাকিস্তানের সাথে যুদ্ধবিরতির কথা বলেছিলেন। কংগ্রেস প্রধানমন্ত্রীকে প্রশ্ন করেছে যে, ট্রাম্পের দাবি সঠিক কিনা? কংগ্রেসের বক্তব্য, ভারত সরকার এ বিষয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া দেয়নি, এবং এটি দেশের জন্য সঠিক নয়। এ কারণেই কংগ্রেস এই বিষয়ে সংসদে বিশেষ অধিবেশন আহ্বানের দাবি করছে।

শরদ পাওয়ারের বিরোধ: কেন এর উপর আলোচনা হওয়া উচিত নয়?

শরদ পাওয়ার তার বক্তব্যে বলেছেন, জাতীয় নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়ে সংসদে খোলামেলা আলোচনা করা ঠিক নয়। তিনি আরও বলেছেন, এ ধরণের সংবেদনশীল তথ্য গোপন রাখা উচিত এবং এটি জনসমক্ষে প্রকাশ করা জাতীয় নিরাপত্তার জন্য ক্ষতিকারক হতে পারে। তাঁর মতে, এই বিষয়ে সর্বদলীয় বৈঠক করা উচিত, যাতে সকল পক্ষের মতামত শোনা যায় এবং কোনও সংবেদনশীল তথ্য প্রকাশিত না হয়।

বিরোধী দলগুলির চাপ এবং কংগ্রেসের একাকীত্ব

কংগ্রেসের জন্য এটি অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতি হয়ে উঠেছে, কারণ বিরোধী দলগুলি যেমন সমাজবাদী পার্টি এবং তৃণমূল কংগ্রেস (টিএমসি) এই বিষয়ে কংগ্রেসের সাথে ঐক্যবদ্ধ দেখা যাচ্ছে না। নির্বাচনের চাপের কারণে এই দলগুলি এখন কংগ্রেস থেকে আলাদা হয়ে যাচ্ছে। সমাজবাদী পার্টি এবং টিএমসি উভয়েই এই বিষয়ে সময়ের প্রতি লক্ষ্য রেখে কোনো স্পষ্ট মতামত দিচ্ছে না, কারণ তাদের কয়েক বছর পর আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের উদ্বেগ রয়েছে।

তেজস্বী যাদব এবং CPI-এর সমর্থন

আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদব সংসদ অধিবেশন আহ্বানের দাবিকে সমর্থন করেছেন এবং প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন করেছেন যে, সংসদের বিশেষ অধিবেশন আহ্বান করা উচিত, যাতে পুলওয়ামায় হওয়া সন্ত্রাসবাদী হামলা এবং যুদ্ধবিরতি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দেওয়া যায়। CPIও এই দাবিকে সমর্থন করে, কিন্তু কংগ্রেস অন্যান্য বিরোধী দলগুলির সমর্থন পাচ্ছে না।

সংসদে জাতীয় নিরাপত্তা নিয়ে আলোচনার কী প্রভাব হবে?

শরদ পাওয়ার এবং অন্যান্য নেতাদের মতে, জাতীয় নিরাপত্তার মতো বিষয়ে সংসদে আলোচনার কোনো লাভ হবে না। তাঁদের বক্তব্য, এ ধরণের বিষয় জনসমক্ষে তোলা দেশের নিরাপত্তার জন্য ক্ষতিকারক হতে পারে। এর পরিবর্তে, একটি সর্বদলীয় বৈঠক করা উচিত, যেখানে সকল দল মিলে এ বিষয়ে আলোচনা করবে এবং সরকারের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় তথ্য পাবে।

Leave a comment