মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার কাঁচি দরগাহ-বিদুপুর ছয় লেন সেতুর প্রথম পর্যায়ের উদ্বোধন করবেন। গঙ্গা নদীর উপর নির্মিত এই সেতু পটনা থেকে রাঘোপুরের দূরত্ব কমিয়ে আঞ্চলিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
বিহার: মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার কাঁচি দরগাহ থেকে বিদুপুর পর্যন্ত নির্মিত ছয় লেনের গঙ্গা সেতুর প্রথম পর্যায়ের উদ্বোধন করবেন। ৪.৫৭ কিমি দীর্ঘ এই অংশটি এখন সম্পূর্ণ হয়েছে। এই প্রকল্পটি কেবলমাত্র পটনা ও রাঘোপুরের মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত করবে না, বরং সমগ্র অঞ্চলের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নের নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে। ৪৯৮৮.৪০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই গ্রিনফিল্ড প্রকল্পকে বিহারের মৌলিক অবকাঠামো উন্নয়নের ক্ষেত্রে একটি বড় সাফল্য হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।
রাঘোপুর পেতে যাচ্ছে সরাসরি যোগাযোগ
বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার কাঁচি দরগাহ-বিদুপুর ছয় লেন সেতুর প্রথম পর্যায়ের উদ্বোধন করতে যাচ্ছেন। এই উদ্বোধন রাঘোপুর পর্যন্ত সম্পূর্ণ হওয়া ৪.৫৭ কিমি দীর্ঘ অংশের। এই অংশটি এখন পটনা থেকে রাঘোপুরের যাত্রাপথকে অনেক সহজ ও দ্রুত করে তুলবে।
এই সেতু চালু হওয়ার আগে রাঘোপুরের মতো এলাকা পটনার সাথে যুক্ত হতে অনেক সময় লাগত। কিন্তু এখন এই সেতুর মাধ্যমে সেখানকার মানুষ রাজধানীর সাথে সরাসরি ও সুবিধাজনক যোগাযোগ পেতে পারবে।
২০১৫ সালে শুরু হয়েছিল প্রকল্প
এই সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার ২০০৫ সালের ২৩ আগস্ট পটনার অধিবেশন ভবনে স্থাপন করেছিলেন। এর পর থেকে এর নির্মাণ কাজ অব্যাহত ছিল। এখন এই প্রকল্পের প্রথম পর্যায় সম্পূর্ণ হয়েছে এবং জনগণের জন্য উন্মুক্ত করার প্রস্তুতি চলছে।
তিনটি পর্যায়ে সম্পূর্ণ হবে নির্মাণ কাজ
এই প্রকল্পটি তিনটি পর্যায়ে সম্পূর্ণ করা হচ্ছে। প্রথম পর্যায়ে কাঁচি দরগাহ (এনএইচ-৩১) থেকে রাঘোপুর দিয়ারা পর্যন্ত সেতুর নির্মাণ হচ্ছে।
দ্বিতীয় পর্যায়ে হাজীপুর-মহনার পথ (এনএইচ-১২২ বি) থেকে চকসিকান্দর (এনএইচ-৩২২) পর্যন্ত সেতুটি যুক্ত করা হবে।
তৃতীয় পর্যায় রাঘোপুর দিয়ারা থেকে হাজীপুর-মহনার পথকে যুক্ত করার।
এই তিনটি পর্যায় সম্পূর্ণ হওয়ার পর এই সেতু পটনা-বখতিয়ারপুর ফোর লেন বাইপাস (এনএইচ-৩১) থেকে শুরু করে বৈশালী জেলার চকসিকান্দর (এনএইচ-৩২২) পর্যন্ত একটি শক্তিশালী ও বাণিজ্যিক দিক থেকে উপযোগী পথে পরিণত হবে।
মোট দৈর্ঘ্য এবং যোগাযোগ পথ
এই ছয় লেন সেতুর মোট দৈর্ঘ্য ৯.৭৬ কিমি। এর সাথে সাথে প্রায় ১০ কিমি দীর্ঘ যোগাযোগ পথও তৈরি করা হচ্ছে। এখন যে অংশটি সম্পূর্ণ হয়েছে, সেটি ৪.৫৭ কিমি দীর্ঘ, যা রাঘোপুর পর্যন্ত সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন করবে।
৪৯৮৮.৪০ কোটি টাকার প্রকল্প
এই গ্রিনফিল্ড প্রকল্প বিহার সরকারের সবচেয়ে ব্যয়বহুল ও আধুনিক প্রকল্পগুলির মধ্যে একটি। এর মোট ব্যয় ৪৯৮৮.৪০ কোটি টাকা নির্ধারিত হয়েছে। এর মধ্যে জমি অধিগ্রহণ ও পুনর্বাসন কাজের জন্য ৬৯৬.৬০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। বাকি ৪২৯১.৮০ কোটি টাকা নির্মাণ কাজে ব্যয় করা হচ্ছে।
এই সম্পূর্ণ প্রকল্পের নির্মাণ কাজ ভারতের অগ্রণী অবকাঠামো সংস্থা এল অ্যান্ড টি (Larsen & Toubro) করছে, যারা দেশজুড়ে বৃহৎ প্রকল্প সফলভাবে সম্পন্ন করার জন্য পরিচিত।
উন্নয়ন পাবে নতুন মাত্রা
এই সেতু চালু হওয়ার ফলে কেবলমাত্র যাতায়াত সুবিধা বৃদ্ধিই হবে না, বরং সমগ্র অঞ্চলের উন্নয়নও ত্বরান্বিত হবে। রাঘোপুরের মতো এলাকায় বিনিয়োগ, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কর্মসংস্থানের নতুন সুযোগ সৃষ্টি হবে।
এই সেতু পটনার যানজটের চাপও কমিয়ে দেবে কারণ এখন গঙ্গার অপর দিকের মানুষকে রাজধানীতে পৌঁছাতে ঘণ্টার পরিবর্তে মিনিটের প্রয়োজন হবে। এর সাথে সাথে গ্রামীণ এলাকা থেকে নগর এলাকার সাথে উন্নত সড়ক যোগাযোগ স্থাপিত হবে।
```