বিহারের আরার থেকে এক অত্যন্ত মর্মান্তিক সংবাদ প্রকাশ পেয়েছে, যেখানে একজন পিতা তার চার সন্তানকে বিষ মিশ্রিত দুধ খাইয়ে দিয়েছেন এবং নিজেও বিষ সেবন করেছেন।
পাটনা: বিহারের আরার থেকে এক অত্যন্ত মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে, যেখানে একজন পিতা তার চার সন্তানকে দুধে বিষ মিশিয়ে খাইয়ে দিয়েছেন এবং পরে নিজেও বিষ পান করেছেন। এই ঘটনায় এলাকায় তীব্র আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনায় তিন সন্তানের মৃত্যু হয়েছে, এবং পিতা ও এক সন্তানের অবস্থা সংকটাপন্ন, তাদের চিকিৎসা চলছে। জানা গেছে, এই ভয়াবহ পদক্ষেপটি অরবিন্দ কুমার নামক ব্যক্তি নিয়েছেন, যার কারণ এখনও স্পষ্ট হয়নি। পুলিশ ঘটনার তদন্ত করছে এবং ঘটনার পেছনে কারণগুলি খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে।
ঘটনার পুরো বিবরণ কি?
ঘটনাটি ভোজপুর জেলার বেনওয়ালিয়া বাজারে ঘটেছে, যেখানে অরবিন্দ কুমার নামক এক ব্যক্তি তার চার সন্তানসহ বিষ সেবন করেছেন। জানা গেছে, অরবিন্দ কুমারের স্ত্রীর আট মাস আগে অসুস্থতার কারণে মৃত্যু হয়েছে, এর পর থেকে তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন। তিনি একটি ছোট ইলেকট্রনিক্স দোকান চালিয়ে তার সন্তানদের লালন-পালন করতেন, কিন্তু স্ত্রীর মৃত্যুর পর একাই সন্তানদের দেখাশোনা করা তার পক্ষে অসম্ভব হয়ে পড়েছিল।
মঙ্গলবার রাতে অরবিন্দ তার সন্তানদের পছন্দের পুরি-সবজি খাইয়ে দিয়েছিলেন, তারপর প্রত্যেককে এক এক গ্লাস দুধ দিয়েছিলেন, যাতে আগে থেকেই বিষ মিশিয়ে রেখেছিলেন। দুধ পান করার পর সবার অবস্থা খারাপ হতে শুরু করে। ঘরে অন্য কেউ উপস্থিত ছিলেন না, যার কাছ থেকে সাহায্য পাওয়া যেত। অনেকক্ষণ পরে যখন দরজা খোলা হয়, তখনই প্রতিবেশীরা ঘটনার কথা জানতে পারে এবং সকলকে দ্রুত আরার সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
চিকিৎসার সময় তিন সন্তানের মৃত্যু
হাসপাতালে পৌঁছানোর পর চিকিৎসকরা সকলের চিকিৎসা শুরু করেন, কিন্তু ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গিয়েছিল। অরবিন্দের দুই কন্যা এবং এক পুত্রের মৃত্যু হয়েছে, আর অরবিন্দ ও তার বড় ছেলের চিকিৎসা এখনও চলছে। স্থানীয় গ্রামবাসীদের মতে, ঘটনার সময় গ্রামে একটি বিবাহ অনুষ্ঠান ছিল, যার ফলে অধিকাংশ প্রতিবেশী বারাতে গিয়েছিলেন।
এদিকে, অরবিন্দের ভাতিজা পরিবারের সদস্যদের ফোন করে জানিয়েছিলেন যে সবার শারীরিক অবস্থা হঠাৎ খারাপ হয়ে গেছে এবং তাদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। পরে জানা যায় যে সবাই বিষ সেবন করেছে। চিকিৎসকদের মতে, বিষের ধরন এখনও স্পষ্ট হয়নি, কিন্তু রোগীদের চোখের পুতুল ফুলে গিয়েছিল, শরীরে তীব্র ব্যথা ছিল, বমি হচ্ছিল এবং মুখ থেকে ফেনা বের হচ্ছিল। বর্তমানে চিকিৎসা দলের তত্ত্বাবধানে অরবিন্দ ও তার ছেলের চিকিৎসা চলছে।
পুলিশ ঘটনার তদন্ত করছে এবং অরবিন্দ কেন এত বড় পদক্ষেপ নিয়েছিলেন তা খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে। প্রাথমিক তদন্তে স্পষ্ট হয়েছে যে স্ত্রীর মৃত্যুর পর থেকে তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন এবং সন্তানদের লালন-পালনের কথা ভেবে চিন্তিত ছিলেন।