ভারত পাকিস্তানকে সতর্ক করে দিয়েছে যে, হাফিজ সঈদ ও অন্যান্য সন্ত্রাসবাদীদের হস্তান্তর না করা পর্যন্ত অপারেশন সিন্দুর থামবে না। এটি সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের একটা সিদ্ধান্তমূলক পদক্ষেপ।
অপারেশন-সিন্দুর: ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চলমান সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে "অপারেশন সিন্দুর" একটি বড় নাম হয়ে উঠেছে। যদিও সীমান্তে যুদ্ধবিরতি হয়েছে, তবে ভারতের অপারেশন সিন্দুর এখনও শেষ হয়নি। ভারত স্পষ্ট করে দিয়েছে যে, যতক্ষণ না পাকিস্তান সন্ত্রাসবাদীদের ভারতের কাছে হস্তান্তর করে, ততক্ষণ এই অভিযান চালু থাকবে।
কী অপারেশন সিন্দুর?
অপারেশন সিন্দুর ভারত কর্তৃক শুরু করা একটি বিশেষ সামরিক অভিযান যা বিশেষ করে পাকিস্তানে অবস্থিত সন্ত্রাসবাদী ঘাঁটিগুলিকে লক্ষ্য করে। এই অভিযানের সূচনা হয় যখন জম্মু-কাশ্মীরের পাহলগামে সন্ত্রাসবাদীরা নিরীহ নাগরিকদের উপর হামলা চালায়। সন্ত্রাসবাদীরা প্রথমে মানুষদের ধর্ম জিজ্ঞাসা করে এবং তারপর তাদের গুলি করে। এই হামলায় ২৬ জন নিরীহ মানুষ নিহত হয়।
ভারতের রাষ্ট্রদূতের কঠোর সতর্কবার্তা
ইসরায়েলে ভারতের রাষ্ট্রদূত জে.পি. সিং এক সাক্ষাৎকারে স্পষ্ট করে বলেছেন যে অপারেশন সিন্দুর এখনও শেষ হয়নি। এটি কিছু সময়ের জন্য বন্ধ রাখা হয়েছে। তিনি জোর দিয়ে বলেছেন যে, যতক্ষণ না পাকিস্তান হাফিজ সঈদ, সাজিদ মীর, জাকির উর রহমান লখবির মতো নৃশংস সন্ত্রাসবাদীদের ভারতের কাছে হস্তান্তর করে, ততক্ষণ অপারেশন সিন্দুর চালু থাকবে।
কেন অপারেশন সিন্দুর প্রয়োজন?
ভারতের এই অবস্থান শুধুমাত্র নিরাপত্তার দিক থেকে নয়, বরং একটি নতুন কৌশলগত চিন্তাভাবনার অংশ যাকে জে.পি. সিং "নিউ নর্মাল" বলেছেন। এখন ভারত শুধুমাত্র রক্ষণাত্মক নয়, আক্রমণাত্মক নীতি গ্রহণ করবে। সন্ত্রাসবাদীরা যেখানেই থাকুক না কেন—ভারতের সীমান্তে অথবা বাইরে—তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জে.পি. সিং জানিয়েছেন যে, এই অভিযানের অধীনে ভারত পাকিস্তানে অবস্থিত সন্ত্রাসবাদীদের ঘাঁটি লক্ষ্য করেছে। এর প্রতিশোধে পাকিস্তান ভারতের সামরিক ঘাঁটি ও আবাসিক এলাকাকে লক্ষ্য করেছে। কিন্তু ভারত স্পষ্ট করে দিয়েছে যে সন্ত্রাসবাদ সহ্য করা হবে না।
পাকিস্তানে আতঙ্কের সৃষ্টি
১০ মে সকালে পাকিস্তানের নুর খান এয়ারবেসে ভারতীয় অভিযানের পর সেখানে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পাকিস্তানের DGMO (Director General of Military Operations) ভারতে ফোন করে যুদ্ধবিরতির দাবি জানায়। এতে স্পষ্ট হয়ে যায় যে অপারেশন সিন্দুর পাকিস্তানকে বড় ধাক্কা দিয়েছে।
সিন্ধু জল চুক্তিও কি বিপন্ন?
জে.পি. সিং সিন্ধু জল চুক্তি (Indus Water Treaty) নিয়েও বড় কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন যে ১৯৬০ সালে এই চুক্তির উদ্দেশ্য ছিল ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে শান্তি বজায় রাখা। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে পাকিস্তান পানি নিচ্ছে এবং বিনিময়ে সন্ত্রাসবাদ পাঠাচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ইতিমধ্যেই বলেছেন যে এখন "পানি ও রক্ত একসাথে প্রবাহিত হবে না"। অর্থাৎ, যদি পাকিস্তান সিন্ধু জল চুক্তি বজায় রাখতে চায়, তাহলে তাকে সন্ত্রাসবাদকে সমূলে উৎপাটন করতে হবে।