নাগৌরের ১১ চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত হাসপাতাল চালানোর অভিযোগ

🎧 Listen in Audio
0:00

রাষ্ট্রের নাগৌর জেলা থেকে একটি চাঞ্চল্যকর ঘটনা সামনে এসেছে যেখানে সরকারি সেবায় কর্মরত ১১ জন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে নিজস্ব ব্যক্তিগত হাসপাতাল ও ক্লিনিক পরিচালনার অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ পাওয়ার সাথে সাথেই প্রশাসন ও চিকিৎসা বিভাগ সচল হয়ে উঠেছে এবং তদন্ত শুরু করেছে। এই ঘটনাটি শুধুমাত্র সরকারি বিধি-বিধান লঙ্ঘনের ঘটনা নয়, এটি স্বাস্থ্য সেবার নিরপেক্ষতা ও সততা নিয়েও প্রশ্ন তুলে ধরেছে।

সম্পূর্ণ ঘটনা কী?

সূত্রমতে, নাগৌরের জেলা হাসপাতাল এবং তার সাথে যুক্ত প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র (PHC) ও সম্প্রদায় স্বাস্থ্য কেন্দ্র (CHC)-এ কর্মরত ১১ জন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে যে তারা সরকারি কর্তব্য পালনের সাথে সাথে ব্যক্তিগত চিকিৎসা পরিচালনা করছেন। বিশেষত, এদের মধ্যে অনেকেই নিজের নামে অথবা পরিবারের সদস্যদের নামে ব্যক্তিগত হাসপাতাল ও নার্সিংহোম খুলে রেখেছেন।

এই চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ উঠেছে যে তারা সরকারি হাসপাতালে রোগীদের যথাযথ চিকিৎসা না দিয়ে তাদের নিজস্ব ব্যক্তিগত হাসপাতালে রেফার করতেন, যাতে তারা আর্থিক লাভ উঠাতে পারেন। এর ফলে সরকারি হাসপাতালের বিশ্বাসযোগ্যতা ও সেবার উপর গুরুতর প্রভাব পড়েছে।

কীভাবে ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসে?

কিছুদিন আগে স্বাস্থ্য বিভাগ RTI ও গোপন অভিযোগের মাধ্যমে তথ্য পেয়েছিল যে কিছু চিকিৎসক তাদের কর্তব্যকালে অনুপস্থিত থাকেন এবং ব্যক্তিগত ক্লিনিকে দেখা যায়। এরপর জেলা প্রশাসন একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে, যারা কিছু চিকিৎসকের ব্যক্তিগত কার্যকলাপের উপর নজরদারি করে। প্রাথমিক তদন্তে দেখা যায় যে রাজস্থানের স্বাস্থ্যসেবা নিবন্ধন পোর্টালে অনেক চিকিৎসকের নামে ব্যক্তিগত নার্সিংহোম নিবন্ধিত আছে। কিছু ক্ষেত্রে তাদের আত্মীয়-স্বজনের নামে প্রতিষ্ঠান চালানো হলেও, পরিচালনার দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকেরই।

বিভাগীয় ব্যবস্থা শুরু

রাষ্ট্রের চিকিৎসা ও স্বাস্থ্য বিভাগ এই ঘটনাকে গুরুত্বের সাথে নিয়ে বলেছে যে দোষী সাব্যস্ত হলে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে স্থগিতাদেশ থেকে শুরু করে চাকরিচ্যুতি পর্যন্ত ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে। বিভাগীয় সূত্রমতে, অনেক চিকিৎসকের দৈনিক উপস্থিতি ও সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা করা হচ্ছে। নাগৌরের সিএমএইচও (মুখ্য চিকিৎসা ও স্বাস্থ্য কর্মকর্তা) ডা. হরিশ গোধা বলেছেন: অভিযোগ যাচাই হওয়ার সাথে সাথেই যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সরকারি চিকিৎসকদের ব্যক্তিগত চিকিৎসা করা বিধি-বিধানের বিরুদ্ধে। তদন্তে যারা দোষী পাওয়া যাবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বিধি কী বলে?

সরকারি সেবায় কর্মরত চিকিৎসকদের জন্য স্পষ্ট নিয়ম আছে যে তারা কর্তব্যকালে কোনও ধরণের ব্যক্তিগত চিকিৎসা অথবা বাণিজ্যিক কার্যকলাপে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না। এমনকি কর্ম শেষেও যোগ্য কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া ব্যক্তিগত চিকিৎসা করা অবৈধ। রাজ্য সরকারের কর্মসংস্থান শর্ত অনুযায়ী, সরকারি চিকিৎসকদের দ্বারা ব্যক্তিগত হাসপাতাল পরিচালনা করা "স্বার্থের সংঘাত" (Conflict of Interest) এর আওতায় পড়ে।

এই প্রকাশ্যে আসার পর স্থানীয় জনসাধারণের মধ্যেও ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। একজন রোগীর আত্মীয় রাজকুমার রাও বলেছেন: আমরা যখন সরকারি হাসপাতালে গেলাম, চিকিৎসক বললেন যে এখানে পরীক্ষা ঠিকমতো হবে না, আপনি এমন নার্সিংহোমে চলে যান। পরে জানা গেল সেই হাসপাতালটি ওই চিকিৎসকেরই। এটা স্পষ্ট প্রতারণা।

Leave a comment