ঝারখণ্ডের রাজধানী রাঁচিতে অবস্থিত ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অফ স্টাডি অ্যান্ড রিসার্চ ইন ল (NUSRL) আন্তর্জাতিক পর্যায়ে একটি নতুন কীর্তিমান স্থাপন করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের লিগ্যাল এড অ্যান্ড অ্যাওয়ারনেস প্রোগ্রাম সেন্টার ‘CLAP’ সম্মানিত ‘ম্যাক্সজেনেট প্রাইজ ফর গ্লোবাল সিটিজেনশিপ ২০২৫’ -এ বিশ্বের ৯২ টি দেশ এবং ৪০০ টি বিশ্ববিদ্যালয়কে ছাড়িয়ে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছে। এই সম্মান কেবলমাত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য নয়, সমগ্র রাজ্য এবং দেশের জন্য একটি বৃহৎ সাফল্য।
কী CLAP এবং এর ভূমিকা?
CLAP (Community Legal Aid and Awareness Programme) NUSRL-এর একটি সমাজ-ন্যায় কেন্দ্রিক লিগ্যাল এড সেন্টার, যার উদ্দেশ্য গ্রামীণ এবং বঞ্চিত জনগোষ্ঠীর কাছে ন্যায়িক তথ্য, আইনি সহায়তা এবং অধিকার সম্পর্কে সচেতনতা ছড়িয়ে দেওয়া। এই কেন্দ্রটি ছাত্রদের দ্বারা পরিচালিত, যারা গ্রামে গিয়ে মানুষকে তাদের আইনি অধিকার, সরকারী পরিকল্পনা এবং ন্যায়িক প্রক্রিয়া সম্পর্কে শিক্ষিত করে।
CLAP-এর কার্যকলাপে এটি বিশেষত্ব হলো যে এটি কেবল আইনি তথ্যই প্রদান করে না, বরং স্থানীয় পর্যায়ে গিয়ে মামলা-পূর্ব পরামর্শ, অভিযোগ নিষ্পত্তি এবং নারী-সশক্তিকরণ শিবিরেরও আয়োজন করে।
ম্যাক্সজেনেট পুরষ্কার কী?
‘MacJannet Prize for Global Citizenship’ একটি সম্মানিত আন্তর্জাতিক পুরষ্কার, যা বিশ্বের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে সমাজসেবা, বিশ্ব নাগরিকত্ব, সম্প্রদায়ের সাথে সম্পৃক্ততা এবং মানবাধিকার সচেতনতার ক্ষেত্রে উৎকৃষ্ট কাজ করা ছাত্র সংগঠনগুলিকে প্রদান করা হয়। এই পুরষ্কার আমেরিকা অবস্থিত টাফটস ইউনিভার্সিটি এবং Talloires Network of Engaged Universities যৌথভাবে প্রদান করে।
কীভাবে হয়েছে নির্বাচন?
এই বছরের পুরষ্কারে ৯২ টি দেশের মোট ৪০০ টি বিশ্ববিদ্যালয় সংগঠন অংশগ্রহণ করে। বিভিন্ন পর্যায়ের পর্যালোচনা প্রক্রিয়ায় কাজের কার্যকারিতা, সামাজিক প্রভাব, উদ্ভাবন এবং স্থায়িত্বের মত মানদণ্ডের ভিত্তিতে নির্বাচন হয়েছে। NUSRL-এর CLAP সেন্টারকে দ্বিতীয় স্থানে নির্বাচিত করা হয়েছে, যা এখন পর্যন্ত ভারতের সবচেয়ে বড় সাফল্যগুলির মধ্যে একটি।
এর সাথে সাথে CLAP কে $5,000 (প্রায় ₹4.2 লক্ষ) মানপত্রও দেওয়া হয়েছে, যা সেন্টারের সম্প্রসারণ এবং নতুন আইনি সহায়তা অভিযানের জন্য ব্যবহার করা হবে।
কুলপতি এবং দলের প্রতিক্রিয়া
NUSRL-এর কুলপতি প্রফেসর (ড.) অশোক প্যাটেল এই সাফল্যে গর্ব প্রকাশ করে বলেছেন, CLAP গ্রাম এবং সমাজের প্রান্তে থাকা মানুষদের জন্য যা কাজ করেছে, তা আজ আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সম্মানিত হয়েছে। এটি আমাদের ছাত্রদের পরিশ্রম, প্রতিশ্রুতি এবং সংবেদনশীলতার ফল। CLAP দলের নেতৃত্ব দানকারী LLM ছাত্রী ভাবনা তিওয়ারী জানিয়েছেন, আমাদের চেষ্টা হলো সমাজের শেষ মানুষের কাছে আইনি জ্ঞান পৌঁছানো। এই সম্মান আমাদের আরও দায়িত্বশীল করে তোলে।
CLAP-এর প্রধান সাফল্য
- ঝারখণ্ডের ১২ টি গ্রামে ৮০ টিরও বেশি আইনি সচেতনতা শিবিরের আয়োজন
- নারী অধিকার, শিশু বিবাহ, গার্হস্থ্য সহিংসতা এবং मनरेगा-এর মতো বিষয় নিয়ে হস্তক্ষেপ
- জেলে বন্দী সাহায্য শিবির এবং জামিন পরামর্শ
- স্কুলে শিশু অধিকার সচেতনতা অভিযান
CLAP এখন এই আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি নিয়ে আরও গ্রামে তার পৌঁছানো বাড়াবে। আগামীতে তারা ডিজিটাল লিগ্যাল হেল্পলাইন, মোবাইল লিগ্যাল ক্লিনিক এবং ট্রান্সজেন্ডার অধিকারের উপর বিশেষ অভিযান চালানোর পরিকল্পনা করছে।
