প্রধানমন্ত্রী মোদী গুজরাটে বলেছেন যে দেশভাগের পর প্রথম সন্ত্রাসবাদী হামলা হয়েছিল। সর্দার প্যাটেলের কৌশল গ্রহণ করা হলে সন্ত্রাসবাদ হত না। উন্নয়নের উপরও জোর দিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী গুজরাটের গান্ধীনগরে জনতাকে সম্বোধন করে বলেন, যদি স্বাধীনতার সময় দেশকে তিন ভাগে ভাগ করা না হত এবং সর্দার প্যাটেলের কৌশল মেনে নেওয়া হত, তাহলে হয়তো পুলওয়ামার মতো সন্ত্রাসবাদী হামলা কখনোই হত না। তিনি সন্ত্রাসবাদকে পাকিস্তানের পরিকল্পিত যুদ্ধ কৌশল বলে অভিহিত করে বলেন, ভারত সর্বদা এর সঠিক এবং কঠোর জবাব দিয়েছে। আসুন জানি প্রধানমন্ত্রী মোদীর ভাষণের ১০টি বড় কথা, যা দেশের ইতিহাস, উন্নয়ন এবং ভবিষ্যৎ দিক বোঝার ক্ষেত্রে সাহায্য করবে।
সর্দার প্যাটেলের কৌশল মেনে নেওয়া হলে সন্ত্রাসবাদ হত না
প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেছেন, ১৯৪৭ সালে যখন দেশকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছিল, সেই রাতেই কাশ্মীরে প্রথম সন্ত্রাসবাদী হামলা হয়েছিল। তিনি জানান, যদি সেই সময় সর্দার প্যাটেলের কথা মেনে নেওয়া হত এবং সন্ত্রাসবাদীদের অবিলম্বে নির্মূল করা হত, তাহলে এই ৭৫ বছর ধরে চলে আসা সন্ত্রাসবাদের ধারা শুরুই হত না। মোদী বলেন, সেই সময় দেশকে একত্রিত করার পরিবর্তে তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছিল, যার ফলে আমাদের সন্ত্রাসবাদীর মতো বড় সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছে।
সন্ত্রাসবাদ পাকিস্তানের পরিকল্পিত যুদ্ধ কৌশল
প্রধানমন্ত্রী মোদী স্পষ্ট ভাষায় বলেছেন, পাকিস্তানের সন্ত্রাসবাদী কর্মকাণ্ড কোন প্রক্সি ওয়ার (গুলাম যুদ্ধ) নয় বরং সম্পূর্ণ যুদ্ধ কৌশল। তিনি বলেন, ৬ মে রাতে যাদেরকে হত্যা করা হয়েছিল, পাকিস্তান তাদের জানাজায় রাষ্ট্রীয় সম্মান প্রদান করে, তাবুতের উপর নিজের পতাকা লাগিয়ে এবং সেনার সালাম দিয়ে এই কথা প্রমাণ করেছে। মোদী জোর দিয়ে বলেছেন, যদি কেউ যুদ্ধ করে, তাহলে তার জবাবও একইভাবে পাওয়া যায়।
ক্যামেরার সম্পূর্ণ ব্যবস্থা থেকে পাওয়া শক্তি
মোদী জানান, এই বার ভারত সাবধানতার সাথে ক্যামেরার ব্যবস্থা করেছে, যাতে সন্ত্রাসবাদের প্রমাণ লুকানো যায় না। এতে পাকিস্তান এবং তার সমর্থকদের জবাব দেওয়ার ক্ষেত্রে সাহায্য হয়েছে এবং তিনি এই বার্তাও দিয়েছেন যে ভারত প্রমাণ লুকানো দেশ নয়।
দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতির উপর জোর
প্রধানমন্ত্রী সন্ত্রাসবাদের সাথে সাথে দেশের উন্নয়নের কথাও বলেছেন। তিনি বলেন, দেশ ২০২৪ সালে ১১তম অর্থনীতি হিসেবে শুরু করেছিল, কিন্তু এখন ভারত চতুর্থ অর্থনীতি হয়ে উঠেছে। তিনি কোভিড-১৯ মহামারী, প্রতিবেশী দেশ থেকে চ্যালেঞ্জ এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগের কথাও উল্লেখ করেছেন, যার পরও ভারত অগ্রগতি করেছে।
গুজরাটের উন্নয়নের উদাহরণ
মোদী গুজরাটের উন্নয়নের প্রশংসা করে বলেছেন, এখানে অনেক বড় বড় পরিবর্তন হয়েছে। রিভার ফ্রন্ট নির্মাণ, বিশ্বের বৃহত্তম স্টেডিয়াম এবং মূর্তির স্বপ্ন বাস্তবায়িত হয়েছে। তিনি কচ্ছের মরুভূমির কথাও বলেছেন, যেখানে আগে কেউ যেত না, কিন্তু এখন পর্যটন এত বেড়েছে যে বুকিং পূর্ণ হয়ে যায়। তিনি পর্যটনকে দেশের আগামী উন্নয়নের বড় ভিত্তি বলে মনে করেন।
২০১৪ সালের স্মৃতি এবং দেশের অগ্রগতি
প্রধানমন্ত্রী মোদী ২৬ মে ২০১৪ সালকে স্মরণ করেছেন, যখন তিনি প্রথমবারের জন্য প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেছিলেন। সেই সময় ভারতের অর্থনীতি ১১তম স্থানে ছিল। তিনি বলেছেন, সেই সময় থেকে এখন পর্যন্ত দেশ চতুর্থ স্থানে পৌঁছেছে, যা উন্নয়নের গল্প।
সন্ত্রাসবাদকে পরাজিত করার সংকল্প
মোদী বলেছেন, দেশ সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করার পূর্ণ সংকল্প নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। সন্ত্রাসবাদীদের জবাব দেওয়া সরকারের অগ্রাধিকার। দেশের জনগণও এই লড়াইয়ে সরকারের সাথে আছে।
পাকিস্তানের ষড়যন্ত্রের জবাব
প্রধানমন্ত্রী পাকিস্তানের উপর আক্রমণ করে বলেছেন, ভারত প্রতিবার তার ষড়যন্ত্রকে ব্যর্থ করে দিচ্ছে। তিনি বলেছেন, ভারতের নিরাপত্তা শক্তিশালী এবং সন্ত্রাসবাদের প্রতিটি চ্যালেঞ্জের কঠোর জবাব দেওয়া হবে।
সরকারের সাফল্য জনগণের সামনে
মোদী বলেছেন, সরকার দেশের প্রতিটি ক্ষেত্রে উন্নয়ন করেছে, চাই সেটা অবকাঠামো হোক, স্বাস্থ্য হোক বা অর্থনীতি। করোনা মহামারীর সময় দেশ যেমন লড়াই করেছে, তা একটা উদাহরণ।