ভারতের অধিকাংশ রাজ্যেই আবহাওয়া পরিবর্তন হয়েছে। একদিকে উত্তর ভারত প্রচণ্ড গরম ও লুতে পুড়ছে, অন্যদিকে পূর্ব ও মধ্য ভারতের অনেক অঞ্চলে ঝড়-বৃষ্টির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
আবহাওয়ার খবর: দিল্লি-এনসিআর সহ সারা দেশে আবহাওয়া আবারও বদলে গেছে। একদিকে অনেক রাজ্যে তীব্র গরম ও লুতে মানুষ অসুস্থ হচ্ছে, অন্যদিকে কিছু অঞ্চলে ঝড় ও বৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। ভারতীয় আবহাওয়া বিভাগ (আইএমডি) আগামীকালের জন্য বিস্তারিত আবহাওয়ার পূর্বাভাস প্রকাশ করেছে।
তার মতে, উত্তর ভারতের রাজ্যগুলিতে তাপমাত্রা বেশি থাকবে এবং লুর প্রভাব অব্যাহত থাকবে, যার ফলে মানুষকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে দক্ষিণ ও উত্তর-পূর্বাঞ্চল ভারতে ভারী বৃষ্টিপাত ও ঝড়ো বাতাসের সম্ভাবনা প্রকাশ করা হয়েছে।
দিল্লি-এনসিআরে গরমের মাঝে স্বস্তির ছোঁয়া
রাজধানী দিল্লি ও তার আশপাশের এলাকায় গরম চরম সীমায় পৌঁছেছে। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত পৌঁছানোর সম্ভাবনা রয়েছে, যখন সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২৭-২৯ ডিগ্রি থাকবে। তবে কিছু এলাকায় হালকা বৃষ্টিপাত বা বৃষ্টির ফলে মানুষ কিছুটা স্বস্তি পেতে পারে। আবহাওয়া বিভাগ নাগরিকদের দুপুরের রোদ থেকে নিজেদের রক্ষা করার, ঢিলাঢালা ও হালকা পোশাক পরার এবং প্রচুর পরিমাণে পানি পান করার পরামর্শ দিয়েছে।
রাজস্থানে রেড অ্যালার্ট, গরমে রেকর্ড ভেঙেছে
রাজস্থানে গরমের তীব্রতা অব্যাহত রয়েছে। জয়পুর, জোধপুর, বিকানের ও গঙ্গানগরের মতো শহরগুলিতে তাপমাত্রা ৪৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে। পশ্চিম রাজস্থানের অনেক জেলায় ‘লু’র জন্য রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। চিকিৎসা বিভাগ মানুষকে দুপুর ১২টা থেকে ৪টা পর্যন্ত বাইরে না যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। তবে কোটা ও উদয়পুর বিভাগে কিছু কিছু জায়গায় হালকা বৃষ্টি হতে পারে।
ইউপি-বিহারে গরমের সাথে ঝড়ের আশঙ্কা
উত্তরপ্রদেশে গরমের প্রভাব পুরোদমে চলছে। লখনউ, কানপুর ও প্রয়াগরাজে তাপমাত্রা ৪৪ ডিগ্রি পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে। অন্যদিকে পূর্ব ইউপির গোরখপুর ও বারাণসীর মতো শহরগুলিতে মেঘলা আকাশ ও হালকা বৃষ্টির সম্ভাবনা প্রকাশ করা হয়েছে। বিহারের ভাগলপুর, পাটনা ও গায়ার মতো শহরগুলিতেও তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি পর্যন্ত যেতে পারে। রাজ্যের উত্তর ও পূর্ব অংশে ৩০-৪০ কিমি/ঘণ্টা বেগে বাতাস বয়ে যাওয়া ও বজ্রসহ বৃষ্টির সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
ঝাড়খণ্ডে মেঘের আভাস, ঝড়ো বাতাসের সতর্কতা
ঝাড়খণ্ডে আজ, ১৮ই মে, আবহাওয়ার পরিবর্তনের সম্ভাবনা রয়েছে। রাঁচি, জামশেদপুর ও ধনবাদ-এর মতো শহরগুলিতে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে। আবহাওয়া বিভাগ ৩০-৪০ কিমি/ঘণ্টা বেগে ঝড়ো বাতাস বয়ে যাওয়ার সতর্কতা জারি করেছে। তাপমাত্রা ৩৫-৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকবে। কৃষক ও সাধারণ নাগরিকদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে যে তারা আবহাওয়ার সতর্কতা অনুযায়ী কাজের পরিকল্পনা করুক।
হিমাচল-উত্তরাখণ্ডে শিলাবৃষ্টির সম্ভাবনা
পর্বতীয় রাজ্য হিমাচল প্রদেশ ও উত্তরাখণ্ডেও আবহাওয়া অস্থির থাকবে। চম্বা, শিমলা, কুল্লু ও সিরমৌর-এ ঝড়ো বাতাস, বৃষ্টি ও শিলাবৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। এই অঞ্চলগুলির জন্য ইয়েলো অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। অন্যদিকে উত্তরাখণ্ডের পর্বতীয় জেলাগুলিতে বজ্রপাতসহ হালকা বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকলেও দেহরাডুন ও হরিদ্বারে লুর অবস্থা অব্যাহত থাকবে।
মহারাষ্ট্র ও এমপিতে বজ্রসহ বৃষ্টি
মহারাষ্ট্রের কঙ্কণ, পুনে, নাশিক ও মুম্বাইতে বজ্রসহ মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টি হতে পারে। তাপমাত্রা ৩২-৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। সমুদ্র এলাকায় ঝড়ো বাতাস (৪০-৫০ কিমি/ঘণ্টা) বয়ে যেতে পারে। অন্যদিকে মধ্যপ্রদেশের ইন্দোর, ভোপাল ও জবলপুরেও হালকা বৃষ্টি ও ঝড়-বৃষ্টির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।
দক্ষিণ ভারতে স্বস্তির বৃষ্টি
দক্ষিণ ভারতের উপকূলীয় অন্ধ্রপ্রদেশ, তামিলনাড়ু ও কেরালার অনেক অঞ্চলে ভালো বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলিতেও মিজোরাম, ত্রিপুরা ও আসামে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এই রাজ্যগুলিতে বজ্রপাত ও ভূমিধ্বসের সতর্কতা জারি করা হয়েছে।