কংগ্রেসের জনসমর্থন পুনরুদ্ধারে নতুন কৌশল

🎧 Listen in Audio
0:00

রাজনৈতিক দল কংগ্রেস তাদের হারিয়ে যাওয়া জনসমর্থন পুনরুদ্ধারের জন্য নতুন কৌশল অবলম্বন করছে। ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে ৯৯ টি আসন পেয়ে কংগ্রেসের পুনরায় উত্থানের আশা জেগেছিল।

নয়াদিল্লি: দেশের প্রাচীনতম রাজনৈতিক দল কংগ্রেস তাদের হারিয়ে যাওয়া জনসমর্থন পুনরুদ্ধারের জন্য নতুন কৌশল অবলম্বন করছে। ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে ৯৯ টি আসন পেয়ে যেখানে কংগ্রেসের পুনরায় উত্থানের আশা জেগেছিল, সেখানে হরিয়ানা, মহারাষ্ট্র এবং দিল্লির নির্বাচনের ফলাফল সেই আশাকে ধাক্কা দিয়েছে। এখন কংগ্রেস তাদের ভিত্তি পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য সাংগঠনিক পরিবর্তন এবং শক্তিশালী কৌশলগুলিতে জোর দিচ্ছে।

বিহারে দলিত নেতৃত্বে ফোকাস

বিহারে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে কংগ্রেস রাজ্য সংগঠনে বড় পরিবর্তন এনেছে। ভূমিহার সমাজের অন্তর্গত অখিলেশ প্রসাদ সিংহের স্থলে এখন দলিত নেতা রাজেশ কুমারকে রাজ্য সভাপতি নিযুক্ত করা হয়েছে। এই পরিবর্তন কংগ্রেসের দলিত ভোটারদের উপর ফোকাসের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ। রাহুল গান্ধীর নেতৃত্বে কংগ্রেস এখন পিছিয়ে পড়া এবং বঞ্চিত শ্রেণীগুলিকে তাদের পক্ষে আনার কৌশল তৈরি করছে।

দিল্লিতে তিনটি ব্যাচে ৭০০ জেলা সভাপতির বৈঠক

কংগ্রেস সংগঠনকে শক্তিশালী করার জন্য ২৭-২৮ মার্চ এবং ৩ এপ্রিল দিল্লিতে দেশজুড়ে ৭০০ জেলা কংগ্রেস কমিটি (DCC) সভাপতিদের বৈঠক করা হয়েছে। এই বৈঠকটি তিনটি পৃথক গোষ্ঠীতে আয়োজন করা হবে, যেখানে কংগ্রেস সংগঠনকে স্থানীয় পর্যায়ে শক্তিশালী করার কৌশল নিয়ে আলোচনা হবে। বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে কংগ্রেস সংগঠনের এই নতুন মডেলটি প্রথমে গুজরাটে প্রয়োগ করা হবে, যেখানে ২০২৭ সালে বিধানসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। গুজরাটে এটিকে 'পাইলট প্রকল্প' হিসেবে পরীক্ষা করা হবে এবং এর সাফল্যের উপর ভিত্তি করে অন্যান্য রাজ্যে প্রয়োগ করা হবে।

প্রিয়ংকা গান্ধীর বর্ধিত ভূমিকা

প্রিয়ংকা গান্ধী ওয়াদ্রা সংগঠনকে শক্তিশালী করার এই পরিকল্পনায় সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন। তিনি বুথ কমিটি এবং জেলা কংগ্রেসকে শক্তিশালী করার প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিয়েছেন। কংগ্রেস মহাসচিব মুকুল ওয়াসনিক এই সম্পূর্ণ পরিকল্পনার দায়িত্বে থাকবেন, যার মধ্যে প্রিয়ংকা গান্ধীও প্রধান সদস্য। কংগ্রেস মহাসচিব জয়রাম রমেশ জানিয়েছেন যে ৮ এপ্রিল আহমেদাবাদে কংগ্রেস কার্যকরী সমিতির বৈঠক হবে, আর ৯ এপ্রিল সর্বভারতীয় কংগ্রেস কমিটি (AICC) এর অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে। এই বৈঠকে ২০২৫ সালকে 'সংগঠন সৃজন বর্ষ' ঘোষণা করা এবং কংগ্রেস সংগঠনকে স্থানীয় পর্যায়ে পুনরুজ্জীবিত করার কৌশল নিয়ে আলোচনা হবে।

কী কংগ্রেস পুনরায় উত্থান করতে পারবে?

কংগ্রেস তাদের 'নবসত্যাগ্রহ বৈঠকে' ২০২৫ সালকে 'সংগঠন সৃজন বর্ষ' হিসেবে পালন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই পরিকল্পনার অধীনে জেলা কংগ্রেস সভাপতিদের অধিক ক্ষমতা দেওয়া হবে, যাতে তারা দলের জন্য শক্তিশালী প্রার্থী নির্বাচন করতে পারে এবং কংগ্রেসের স্থানীয় দখল শক্তিশালী করতে পারে। বিহার এবং গুজরাটে নতুন পরীক্ষার সাথে কংগ্রেস তাদের সংগঠনকে পুনঃশক্তিশালী করার দিকে কাজ করছে। তবে, তাদের আসল পরীক্ষা আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে হবে, যেখানে স্পষ্ট হবে যে তাদের নতুন কৌশল কতটা কার্যকরী হবে।

Leave a comment