ইন্দোরের রাজা রঘুবংশী হত্যা রহস্য: ৮ দিনের রিমান্ড শেষ, তদন্ত অব্যাহত

🎧 Listen in Audio
0:00

মধ্যপ্রদেশের ইন্দোরের চর্চিত রাজা রঘুবংশী হত্যা রহস্যে তদন্ত দ্রুত এগিয়ে চলেছে। শিলং পুলিশ কর্তৃক গ্রেপ্তার পাঁচ আসামীর মধ্যে সোনম সহ সকলের আট দিনের রিমান্ড সম্পূর্ণ হয়েছে। এখন পুলিশ সকল আসামীকে আবার আদালতে হাজির করতে যাচ্ছে।

শিলং: রাজা রঘুবংশী হত্যাকাণ্ড একটি প্রেম-প্রণয়ের জটিল ষড়যন্ত্রের অন্ধকার দিক উন্মোচন করেছে। নতুন জীবন শুরুর স্বপ্ন নিয়ে শিলংয়ে আসা ইন্দোর निवासी রাজা রঘুবংশীকে তার নিজের স্ত্রী ও তার প্রেমিকের কাছ থেকে এমন মৃত্যু উপহার পেয়েছেন যা সমগ্র দেশকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে। সর্বশেষ আপডেট অনুসারে, মেঘালয় পুলিশ রাজার হত্যার রহস্য প্রায় সমাধান করে ফেলেছে।

হত্যার অভিযোগে গ্রেপ্তার সোনম রঘুবংশী সহ পাঁচজন আসামীর আট দিনের রিমান্ড শেষ হয়েছে। পুলিশ এখন তাদের শিলং আদালতে হাজির করবে।

রিমান্ড শেষ, কিন্তু তদন্ত নয়

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, তদন্ত এখনও অনেক পর্যায়ে চলছে। আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ অনেক সূত্র পেয়েছে, যা থেকে সম্পূর্ণ হত্যাকাণ্ডের স্পষ্ট ছবি উঠে আসছে। আরও প্রমাণ সংগ্রহের জন্য পুলিশ আদালতের কাছে এই পাঁচজনের রিমান্ড বাড়ানোর আবেদন করতে পারে। রাজার স্ত্রী সোনম রঘুবংশীকে এই হত্যাকাণ্ডের মাস্টারমাইন্ড বলে অভিযোগ করা হয়েছে। বিবাহের মাত্র দুই সপ্তাহ পরেই সে তার প্রেমিক রাজ কুশওয়াহা এবং আরও তিন সহযোগীর সাথে মিলে তার স্বামীর হত্যার পরিকল্পনা করেছিল।

কিভাবে ষড়যন্ত্র রচিত হয়েছিল?

২৩ মে রাজা ও সোনম শিলংয়ে থাকাকালীন উভয়েই নিখোঁজ হয়ে যায়। পরিবারের উদ্বেগের পর স্থানীয় পুলিশ একটি নিখোঁজের ঘটনা রেকর্ড করে তল্লাশি শুরু করে। ২ জুন রাজার মৃতদেহ একটি গভীর খাদে পাওয়া যায়, যার ফলে পুরো ঘটনার ধারণাই বদলে যায়। মৃতদেহের অবস্থা দেখে পুলিশ হত্যার সন্দেহ করে এবং তদন্ত ত্বরান্বিত হয়।

কিছুদিন পরে সোনমকে উত্তরপ্রদেশের গাজীপুর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়, যেখানে সে আত্মসমর্পণ করে। জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, সোনম রাজ কুশওয়াহা নামের এক যুবকের সাথে প্রেম বিবাহ করতে চেয়েছিল। কিন্তু পারিবারিক চাপে সে রাজার সাথে বিবাহ করে এবং পরে স্বামীকে পথ থেকে সরানোর সিদ্ধান্ত নেয়।

তিনবার হত্যাচেষ্টা

তদন্তে উঠে আসে যে, রাজার হত্যা কোনো হঠাৎ সিদ্ধান্ত ছিল না। এজন্য সুপরিকল্পিত ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল এবং শিলংয়ে আসার আগেই তিনবার রাজাকে হত্যা করার চেষ্টা করা হয়েছিল। প্রথম চেষ্টা গুয়াহাটিতে, দ্বিতীয়টি নোংগ্রিয়াট গ্রামের কাছে এবং তৃতীয়টি ওয়েইসাডং জলপ্রপাতে। কিন্তু তিনবারই পরিস্থিতি অনুকূল হয়নি। অবশেষে ২৩ মে খাদের ধারে নিয়ে গিয়ে রাজাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।

অস্ত্র ও প্রমাণের সন্ধান চলছে

ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ একটি ডাও (বড় ছুরি) উদ্ধার করেছে, অন্য একটি ডাও সেই খাদেই ফেলে রাখা হয়েছিল যেখানে রাজার মৃতদেহ পাওয়া গেছে। ফরেনসিক দল এখন সেই ডাওটি উদ্ধার করার চেষ্টা করছে। এদিকে পুলিশ পুরো হত্যাকাণ্ডের দৃশ্য পুনর্নির্মাণ করেছে, যাতে ঘটনাক্রমের সূক্ষ্মতা বোঝা যায়। পাশাপাশি কল ডিটেইলস, হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট এবং আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত অনেক ডিজিটাল প্রমাণ সংগ্রহ করা হচ্ছে।

মেঘালয় পুলিশ এখন আদালতে পাঁচজন আসামীর রিমান্ড বাড়ানোর আবেদন করবে। পুলিশের মতে, এখনও অনেক দিকের গভীর তদন্ত বাকি আছে — যেমন হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত অস্ত্র কেনা, হত্যার পরিকল্পনায় আর কারা ছিল এবং এই ষড়যন্ত্রে কোনো স্থানীয় ব্যক্তির ভূমিকা ছিল কিনা।

Leave a comment