মোদীর ‘অপারেশন সিন্দুর’: ১০০+ সন্ত্রাসবাদী নিহত

🎧 Listen in Audio
0:00

প্রধানমন্ত্রী মোদী জাতিকে উদ্দেশ্য করে ‘অপারেশন সিন্দুর’ সম্পর্কে তথ্য দিয়েছেন। ভারত পাকিস্তানে সন্ত্রাসবাদী ঘাঁটিতে সঠিক আঘাত হানিয়া ১০০+ সন্ত্রাসবাদীকে নির্মূল করেছে।

PM Modi: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সোমবার রাতে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের নতুন নীতির ঘোষণা করেছেন। তিনি স্পষ্ট ভাষায় বলেছেন যে, ২২শে এপ্রিল জম্মু-কাশ্মীরের পালঘামে সন্ত্রাসবাদী হামলার জবাব ভারত কঠোর এবং সিদ্ধান্তমূলকভাবে দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী মোদী এই অভিযানের নাম দিয়েছেন "অপারেশন সিন্দুর", যা দেশের মেয়েদের সম্মান ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের শূন্য সহনশীলতার নীতির প্রতীক।

পালঘাম সন্ত্রাসবাদী হামলার প্রতিশোধ

প্রধানমন্ত্রী মোদী জানিয়েছেন যে, ২২শে এপ্রিলের হামলায় নির্দোষ নাগরিকদের নির্মমভাবে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছিল। সন্ত্রাসবাদীরা নিরীহ মানুষদের হত্যা করে কেবল জঘন্য অপরাধই করেনি, বরং ভারতের আত্মসম্মানকেও চ্যালেঞ্জ করেছে। এর প্রতিশোধে ভারত ‘অপারেশন সিন্দুর’ এর আওতায় সীমান্ত পার হয়ে সন্ত্রাসবাদী ঘাঁটিগুলিতে সঠিক আঘাত হানে এবং তা ধ্বংস করে দেয়।

অপারেশন সিন্দুর: সন্ত্রাসবাদী ঘাঁটিতে সরাসরি আঘাত

মোদী তার ভাষণে জানিয়েছেন যে, ভারতীয় সেনাবাহিনী বাহাওয়ালপুর এবং মুরিদ প্রভৃতি সন্ত্রাসবাদী ঘাঁটি সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করে দিয়েছে। এগুলি সেই ঘাঁটি যা দীর্ঘদিন ধরে ভারত এবং বিশ্বজুড়ে সন্ত্রাসবাদী হামলার জন্য দায়ী। ভারতের অভিযানে ১০০-এরও বেশি সন্ত্রাসবাদী নিহত হয়েছে, যাদের মধ্যে অনেকেই ছিল খুবই ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসবাদী। প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেছেন, “ভারত সন্ত্রাসবাদীদের মাটিতে মিশিয়ে দিয়েছে।”

পাকিস্তানের সাথে আলোচনার এজেন্ডা স্পষ্ট: শুধুমাত্র সন্ত্রাসবাদ ও পিওকে

প্রধানমন্ত্রী স্পষ্ট ভাষায় পাকিস্তানকে বলেছেন যে, এখন যদি আলোচনা হয়, তবে তা শুধুমাত্র সন্ত্রাসবাদ এবং পাকিস্তান-অধিকৃত কাশ্মীর (পিওকে) নিয়েই হবে। তিনি স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে, ভারত সন্ত্রাসবাদের বিষয়ে কোনও চাপে আসবে না এবং পারমাণবিক ব্ল্যাকমেইলের কৌশল আর কাজ করবে না। মোদী আরও জানিয়েছেন যে, ১০ই মে পাকিস্তান সেনা ভারতের ডিজিএমও-র সাথে যোগাযোগ করে অভিযান বন্ধ করার অনুরোধ করেছিল।

‘মেড ইন ইন্ডিয়া’ অস্ত্রের প্রদর্শন

তার ভাষণে প্রধানমন্ত্রী ‘মেড ইন ইন্ডিয়া’ অস্ত্র ও প্রযুক্তির সাফল্যের উপরও জোর দিয়েছেন। ‘অপারেশন সিন্দুর’ এর সময় ভারত তার নিজস্ব ড্রোন, ক্ষেপণাস্ত্র এবং এয়ার ডিফেন্স সিস্টেমের কার্যকর প্রদর্শন করেছে। পাকিস্তানের হামলা ব্যর্থ করে ভারত বিশ্বকে দেখিয়ে দিয়েছে যে, ভারত আত্মনির্ভর এবং ২১শতকের যুদ্ধনীতিতে সম্পূর্ণরূপে সক্ষম।

সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের নতুন নর্মাল

প্রধানমন্ত্রী মোদী স্পষ্ট করেছেন যে, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের নীতিতে এখন তিনটি বড় পরিবর্তন হয়েছে:

  • ভারতের উপর হামলাকারীদের তাদের নিজস্ব শর্তে কঠোর জবাব দেওয়া হবে।
  • পারমাণবিক ব্ল্যাকমেইল ভারত কখনোই সহ্য করবে না।
  • সন্ত্রাসবাদের রক্ষাকারী ও সন্ত্রাসবাদীদের পৃথকভাবে দেখা হবে না।
  • তিনি বলেছেন যে, ‘অপারেশন সিন্দুর’ সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের নতুন নীতির রূপরেখা তৈরি করেছে, যা ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।

পাকিস্তানের রাষ্ট্রপৃষ্ঠপোষিত সন্ত্রাসবাদ উন্মোচন

প্রধানমন্ত্রী পাকিস্তানের আসল চেহারা উন্মোচন করে বলেছেন যে, পাকিস্তান সেনার উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা নিহত সন্ত্রাসবাদীদের শ্রদ্ধাঞ্জলি জানাতে এসেছিলেন, যা প্রমাণ করে যে পাকিস্তান সন্ত্রাসবাদকে খোলাখুলি সমর্থন করছে। মোদী সতর্ক করে বলেছেন যে, যদি পাকিস্তানকে নিজেকে বাঁচাতে হয়, তবে তাকে তার সন্ত্রাসবাদী অবকাঠামো (Terror Infrastructure) ধ্বংস করতেই হবে।

ভারতের ঐক্য ও শক্তিই প্রকৃত উত্তর

প্রধানমন্ত্রী মোদী তার ভাষণে দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, “শক্তির ব্যবহার শান্তি, সমৃদ্ধি ও মানবতার জন্য প্রয়োজন। ভারতের সেনা, বিজ্ঞানী ও নাগরিকদের উৎসাহ ‘অপারেশন সিন্দুর’ কে সফল করেছে।”

তিনি আরও পুনরায় জোর দিয়ে বলেছেন যে, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের এই লড়াই অব্যাহত থাকবে এবং প্রয়োজন হলে দেশ তার শক্তির ব্যবহারে কখনো দ্বিধা করবে না।

Leave a comment