সোনিপতে বিখ্যাত মডেল শীতলের হত্যাকাণ্ড: গ্ল্যামার জগতের অন্ধকার দিক

🎧 Listen in Audio
0:00

সোনিপতের খান্ডা গ্রামের কাছে এনসিআর ওয়াটার চ্যানেলে বিখ্যাত মডেল শীতলের মৃতদেহ উদ্ধারের ঘটনা হৃদয়বিদারক। যুবতীকে নির্মমভাবে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে, যার ফলে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।

মডেল হত্যা: গ্ল্যামার, নাম, টাকা এবং খ্যাতি—এই সবই সেই আকর্ষণ যা হাজার হাজার যুবতীকে মডেলিং এবং সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সারের জগতে টেনে নিয়ে যায়। কিন্তু এই চকচকে জগতের পিছনে লুকিয়ে আছে এমন এক অন্ধকার যা প্রায়শই তখনই সামনে আসে যখন কোনও মডেলের মৃত্যুর খবর সংবাদপত্রের শিরোনামে জায়গা করে নেয়।

হালে হরিয়ানার সোনিপত জেলার খান্ডা গ্রামের কাছে এনসিআর ওয়াটার চ্যানেলে বিখ্যাত মডেল শীতলের মৃতদেহ উদ্ধারের ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। গলা কেটে করা এই নির্মম হত্যাকাণ্ড আবারও এই প্রশ্ন তুলে ধরেছে যে, কি গ্ল্যামার ওয়ার্ল্ডের আলোকের পিছনে অপরাধের কালো ছায়া লুকিয়ে আছে কি না?

শীতল হত্যা মামলা: বিশ্বাসঘাতকতা?

পানিপতের খলিলা মাজরা निবাসী শীতল, কিছুদিন ধরে পানিপতের সতকরতার কলোনিতে তার বোনের সাথে থাকতো। ১৫ই জুন রাতে শেষবার ভিডিও কলে তার বোনের সাথে কথা বলে শীতল জানিয়েছিল যে সে তার পুরুষ বন্ধু সুনীলের সাথে আছে এবং সুনীল তার সাথে মারধর করেছে। এর কিছুক্ষণ পরেই তার ফোন বন্ধ হয়ে যায়।

পরের দিন তার বোন পানিপতের ওল্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল থানায় নিখোঁজের অভিযোগ দায়ের করে। কিন্তু ১৭ই জুন সকালে যখন সোনিপতে নদীতে শীতলের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়, তখন পুরো ঘটনা একটি জঘন্য হত্যাকাণ্ডে পরিণত হয়। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ সুনীলের গাড়িও পেয়েছে, যা সন্দেহ আরও গভীর করেছে।

কি এটাই প্রথম ঘটনা?

না। শীতলের হত্যার আগেও অনেক মডেল এবং সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সারের হত্যার ঘটনা এই ব্যাপারটির প্রমাণ যে খ্যাতির পিছনে বিপজ্জনক এবং হিংস্র সম্পর্ক গড়ে ওঠে, যা কখনও কখনও মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

দিব্যা পাড়ুজা হত্যা মামলা: যখন সম্পর্ক বিষে পরিণত হয়

জানুয়ারী ২০২৪ সালে গুরুগ্রামে হোটেলের ঘরে গুলি করে হত্যা করা হয় মডেল দিব্যা পাড়ুজাকে। প্রাথমিক তদন্তে জানা যায় যে, দিব্যা তার সঙ্গী অভিজিৎ থেকে ৩০ লক্ষ টাকা চেয়েছিল, যার কারণে বিরক্ত হয়ে অভিজিৎ দিব্যাকে হত্যা করে। দিব্যার অতীতও বিতর্কিত ছিল। সে গ্যাংস্টার সন্দীপ গাদোলী হত্যা মামলায় জেলে ছিল। জেলে থেকে মুক্তির কয়েক মাসের মধ্যেই তার হত্যার ঘটনা সবাইকে চমকে দিয়েছিল।

ইশপ্রীত কৌর মক্কড়ের রহস্যময় মৃত্যু

জুলাই ২০২৪ সালে বিদানের মডেল ও অভিনেত্রী ইশপ্রীত কৌর মক্কড় তার প্রেমিক জয়রাজ তাঁওয়ারের ঘরে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। উভয়ে গত ৮ বছর ধরে সম্পর্কে ছিল। হত্যা না আত্মহত্যা—এই রহস্য এখনও সম্পূর্ণভাবে উন্মোচিত হয়নি, তবে ইশপ্রীতের বাবা জয়রাজের বিরুদ্ধে হত্যার মামলা দায়ের করেছিলেন। এই ঘটনাটিও এই দিকে ইঙ্গিত করে যে দীর্ঘ সম্পর্কে লুকিয়ে থাকা বিষ কখনও কখনও মারাত্মক রূপ নিতে পারে।

কমল কৌর ভাবি: ভাইরাল মুখ, বেদনাদায়ক অবসান

পাঞ্জাবের জনপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার কাঞ্চন কুমারী অর্থাৎ কমল কৌর ভাবীর মৃতদেহ হালে বাথিন্ডার একটি হাসপাতালের পার্কিংয়ে রাখা গাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয়। হত্যার অভিযোগে অমৃতপাল মহরো এবং তার সঙ্গীদের নাম করে পুলিশ। হত্যার পর অমৃতপাল ইউএই পালিয়ে যায়, যা স্পষ্ট করে যে এটি একটি পূর্ব পরিকল্পিত অপরাধ ছিল।

কি বলে তদন্ত?

এই সব ঘটনার পুলিশ তদন্ত থেকে স্পষ্ট হচ্ছে যে গ্ল্যামার ওয়ার্ল্ডের সাথে যুক্ত এই হত্যাকাণ্ডগুলিতে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত সম্পর্ক, অর্থ সংক্রান্ত বিরোধ এবং প্রতিশোধের भावनाয় প্রধান ভূমিকা পালন করেছে। প্রায়শই দেখা যায় যে মডেলরা তাদের পুরুষ বন্ধু বা ব্যবসায়িক অংশীদারদের জালে পড়ে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়, যা কখনও কখনও হত্যা जैसी চরম পরিস্থিতিতে পৌঁছে যায়।

Leave a comment