আগ্রার সুন্দরপাড়া (থানা নাই কি মণ্ডি) এলাকায় একটি হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটেছে। ই-রিকশা চালক শক্তি তার স্ত্রী পার্বতী ওরফে শিবানীর সাথে অবৈধ সম্পর্কের সন্দেহে নির্মমভাবে হত্যা করেছে।
অপরাধ সংবাদ: আগ্রার সুন্দরপাড়া (থানা নাই কি মণ্ডি) এলাকায় একটি হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটেছে। ই-রিকশা চালক শক্তি তার স্ত্রী পার্বতী ওরফে শিবানীর সাথে অবৈধ সম্পর্কের সন্দেহে হত্যা করেছে। পুলিশ অভিযুক্ত স্বামীকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠিয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে শক্তি জানিয়েছে যে তার স্ত্রীর রিল তৈরির শখ ছিল এবং সে প্রায়শই রিল সম্পর্কিত বিষয়ে অনেকের সাথে কথা বলে। এছাড়াও, সে অনেকবার একা ঘুরতে বেরিয়ে যেত। এইসব কারণে শক্তির পার্বতীর চরিত্র নিয়ে সন্দেহ হতে থাকে।
রিল তৈরির শখ মৃত্যুর কারণ
পার্বতীর সোশ্যাল মিডিয়ায় রিল তৈরির শখ ছিল। সে প্রায়শই ভিডিও তৈরির জন্য অন্যদের সাথে কথা বলত। এই অভ্যাস স্বামী শক্তিকে একদম পছন্দ ছিল না। স্ত্রীর ফোনে অজানা নম্বর থেকে মেসেজ এবং কল আসার কারণে সে চিন্তিত থাকত। তার স্ত্রী অবগত না করে ঘুরতেও বেরিয়ে যেত, যার ফলে সন্দেহ আরও গভীর হয়ে উঠে।
ডিসিপি সিটি সোনম কুমারের মতে, শক্তি পুলিশকে জানিয়েছে যে কয়েকদিন আগে পার্বতী অবগত না করে ভোপাল চলে গিয়েছিল। কিছুকাল পরে তাকে ম্যানেজ করে বাড়ি ফিরিয়ে আনা হলেও পরে স্ত্রী তার ভাতিজি নিয়ে কৈলা দেবীর দর্শন করতে আবার চলে যায়। এ নিয়ে তাদের মধ্যে ঝগড়া বাড়ে।
ভয়াবহ সকাল: রাগে হত্যা
রবিবার সকাল প্রায় ১০টার সময় স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে আবার ঝগড়া শুরু হয়। রাগে শক্তি পার্বতীর মুখ কাপড় দিয়ে জোরে বেঁধে দেয় যাতে সে চিৎকার করতে না পারে। এরপর রান্নাঘর থেকে ছুরি এনে তার গলা কেটে দেয়। স্ত্রীর কাতর অবস্থা দেখে সে নিশ্চিত হতে, যাতে কোনোভাবে সে বেঁচে না যায়, ব্লেড দিয়ে দুই হাতের শিরাও কেটে দেয়।
হত্যার পর শক্তি পার্বতীর মোবাইল পাড়ার লোককে বিক্রি করে এবং মদ কিনে। সে তিন দিন ধরে লাশের পাশে মাটিতে শুয়ে তার নির্মম কাজ গোপন করার চেষ্টা করে। এই সময় সে দিনের বেলায় বাইরে বেরিয়ে পাড়ার লোকদের সাথে স্বাভাবিকভাবে কথা বলে যাতে কারো সন্দেহ না হয়।
পুলিশের পদক্ষেপ এবং অভিযুক্তের গ্রেফতার
যখন শক্তি লাশ গুম করার সুযোগ খুঁজছিল, তখন হঠাৎ পার্বতীর বোন গীতা বাড়ি এল। সে চারপায়ে পড়ে থাকা লাশ দেখে সঙ্গে সঙ্গে চিৎকার করে। বোনের আসার সাথে সাথেই শক্তি পালিয়ে যায়। পুলিশ আসার আগেই পরিবারের অন্যান্য সদস্যও সেখান থেকে চলে যায়। নাই কি মণ্ডি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানিয়েছেন যে শক্তিকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে শক্তি তার অপরাধ স্বীকার করেছে। পুলিশ এই ঘটনার বিস্তারিত তদন্ত করছে এবং পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের ভূমিকারও তদন্ত করবে।
এই মর্মান্তিক ঘটনা সম্পর্কের জটিলতা এবং সন্দেহের ভয়াবহতা তুলে ধরেছে। রিল তৈরির আসক্তি এবং স্ত্রীর চরিত্র নিয়ে সন্দেহ একজন ব্যক্তিকে এতটা অন্ধ করে তুলেছে যে সে তার স্ত্রীকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। এই ঘটনা সমাজের জন্য একটি কঠোর বার্তা যে অবিশ্বাস এবং রাগ কারো জীবন ধ্বংস করতে পারে।