প্রতি বছর ১২ই মার্চ জাতীয় কর্মরত মা দিবস পালিত হয়, যা পরিবার ও কর্মজীবন, উভয়ের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য অবিরত প্রচেষ্টারত মা-দের উৎসর্গীকৃত। চাই তাঁরা নিজের বাড়িটি পরিচালনা করুন, কোনও সংস্থার নেতৃত্ব দিন, অথবা নিজস্ব ছোটো ব্যবসা বাড়ান, কর্মরত মায়েরা সমাজের মেরুদণ্ড। এই দিনটি তাঁদের পরিশ্রম, সংগ্রাম ও সাফল্য উদযাপনের এক সুন্দর উপলক্ষ্য।
কর্মরত মা: শক্তি ও সমর্পণের প্রতীক
আজকের যুগে নারীরা শুধুমাত্র গৃহস্থালীর দায়িত্বে সীমাবদ্ধ নন, বরং কর্পোরেট জগৎ, ব্যবসা, চিকিৎসা, বিজ্ঞান, শিক্ষা ও রাজনীতির মতো ক্ষেত্রেও অগ্রণী ভূমিকা পালন করছেন। কর্মরত মায়েরা শুধুমাত্র নিজেদের পরিবারের ভরণ-পোষণই করেন না, বরং সমাজ ও অর্থনীতির উন্নয়নেও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন।
জাতীয় কর্মরত মা দিবস প্রথমবারের জন্য ২০২০ সালে ওয়ার্কিং মমস অফ মিলওয়াকি (WMM)-এর প্রতিষ্ঠাতা সুজানা লাগো চালু করেছিলেন। এই দিনের উদ্দেশ্য হল সেইসব মায়েদের প্রশংসা করা যারা পরিবার ও কর্মজীবনের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য দিন-রাত পরিশ্রম করেন।
কর্মরত মায়ের সংগ্রাম ও সাফল্যের গল্প
কর্মরত মায়েরা অনেক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হন—সময় ব্যবস্থাপনা, সন্তানদের যত্ন, অফিসের দায়িত্ব এবং সামাজিক প্রত্যাশা। কিন্তু তারা এই সকল বাধা পেরিয়ে সাফল্যের নতুন অধ্যায় রচনা করছেন। অনেক মা মাল্টিটাস্কিংয়ে পারদর্শী। তারা একই সাথে মিটিংয়ে অংশগ্রহণ করেন এবং সন্তানদের অনলাইন ক্লাসের তত্ত্বাবধানও করেন।
ভারতের ইন্দিরা নূই (পূর্ব পেপসিকো সিইও), কিরণ মজুমদার-শো (বায়োকন-এর প্রতিষ্ঠাতা) এর মতো অনেক নারী অনুপ্রেরণামূলক উদাহরণ, যারা মাতৃত্ব ও কর্মজীবনে চমৎকার ভারসাম্য স্থাপন করেছেন।
কিভাবে পালন করবেন জাতীয় কর্মরত মা দিবস?
* কর্মরত মায়ের মালিকানাধীন ছোটো ব্যবসাগুলিকে সমর্থন করুন
* তাঁদের পরিশ্রমের প্রশংসা করুন এবং ধন্যবাদ জানান
* সন্ধ্যার খাবারের দায়িত্ব নিজের উপর নিন, যাতে তাঁরা আরাম করতে পারেন
* কর্মরত মায়েদের নিজের জন্য সময় বের করার জন্য উৎসাহিত করুন
কর্মরত মা হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতা
* সময় ব্যবস্থাপনা: অফিস ও গৃহস্থালীর কাজের মধ্যে সমন্বয় স্থাপন
* যোগাযোগ দক্ষতা: পরিবার ও কর্মক্ষেত্রের মধ্যে সঠিক সমন্বয় বজায় রাখা
* মাল্টিটাস্কিং: একাধিক কাজ একসাথে করার ক্ষমতা
নতুন এক যুগের সূচনা
আজকের নারীরা ঘর ও অফিস উভয় ক্ষেত্রেই নিজস্ব পরিচয় তৈরি করছেন। তারা শুধুমাত্র পরিবারের যত্নে সীমাবদ্ধ নন, বরং সমাজ ও দেশের উন্নয়নেও অবদান রাখছেন। জাতীয় কর্মরত মা দিবস শুধুমাত্র একটি উৎসব নয়, বরং একটি অনুপ্রেরণাও, যা আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় যে একজন মায়ের পরিশ্রম ও সংগ্রামকে স্বীকৃতি দেওয়া কতটা গুরুত্বপূর্ণ। তাই এবার ১২ই মার্চ, আপনার জীবনে থাকা কর্মরত মায়ের জন্য কিছু বিশেষ করুন, কারণ তারা প্রতিদিন আমাদের জন্য বিশেষ করে তোলে।