সকট চতুর্থী: সকট চতুর্থী বা সংকষ্টী চতুর্থী, বিশেষ করে মাঘ মাসের কৃষ্ণপক্ষের চতুর্থী তিথিতে পালিত হয়। এই ব্রত বিশেষ করে নারীরা তাদের সন্তানের দীর্ঘায়ু ও কল্যাণের জন্য পালন করেন। এই দিন নারীরা গণেশের পূজা করেন এবং চন্দ্রমাকে অর্ঘ্য দিয়ে ব্রত ভঙ্গ করেন। এই বছর এই ব্রত ১৭ জানুয়ারী, শুক্রবার পালিত হবে।
সকট চতুর্থী ব্রতের গুরুত্ব
সকট চতুর্থী ব্রত সংকট দূরীকরণ ও সন্তানের সমৃদ্ধির জন্য। বিশেষ করে এটি গণেশের সাথে যুক্ত একটি ব্রত, যিনি প্রতিটি শুভ কাজের পূর্বে পূজিত হন। এই দিন নারীরা নিরজলা ব্রত পালন করে গণেশের পূজা করেন এবং তাঁর আরাধনার মাধ্যমে সুখ, সমৃদ্ধি ও শান্তির প্রাপ্তির কামনা করেন। বিশ্বাস করা হয় যে এই ব্রত পালনের ফলে সন্তান জীবনে বৃহৎ সাফল্য লাভ করে এবং তাদের কর্মজীবন উন্নত হয়।
সকট চতুর্থী ব্রতের পূজাবিধি
সকট চতুর্থী তিথিতে সূর্যোদয়ের পূর্বে উঠে স্নান করা আবশ্যক। এরপর হলুদ বা পরিষ্কার পোশাক পরে ব্রতের সঙ্কল্প নিতে হবে। গণেশের পূজার জন্য একটি চৌকিতে সবুজ বা লাল কাপড় বিছিয়ে তাঁর প্রতিমূর্তি বা ছবি রাখতে হবে। গণেশকে সিঁদুর, ফল, মিষ্টান্ন, দূর্বা এবং তিল দিয়ে তৈরি জিনিসপত্র অর্পণ করতে হবে। তারপর সকট ব্রত কথা পড়তে হবে এবং গণেশের আরতি করতে হবে। পূজার পর প্রসাদ সকলের মধ্যে বিতরণ করতে হবে। এই দিনের পূজার ফলে জীবনের সংকট দূর হয় এবং সন্তানের আয়ু বৃদ্ধি পায়।
সকট চতুর্থী ব্রতের শুভ মুহূর্ত: পূজার সঠিক সময়
• সকট চতুর্থী ব্রতে পূজার জন্য দুটি বিশেষ মুহূর্ত ধরা হয়।
• প্রথম মুহূর্ত: সকাল ৫ টা ২৭ মিনিট থেকে ৬ টা ২১ মিনিট পর্যন্ত।
• দ্বিতীয় মুহূর্ত: সকাল ৮ টা ৩৪ মিনিট থেকে ৯ টা ৫৩ মিনিট পর্যন্ত।
এরপর, সন্ধ্যায় প্রদোষ কালে গণেশের পূজা করা হয় এবং ব্রত কথা পাঠ করা হয়। প্রদোষ কালের সময় দিনের বাকি সময়ের তুলনায় অধিক ফলপ্রসূ বলে মনে করা হয়।
সকট চতুর্থী ব্রত: চন্দ্রোদয়ের সময় ও পূজা
সকট চতুর্থী ব্রতে চন্দ্রোদয়ের সময় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই দিন চন্দ্রমা রাত ৯ টা ৯ মিনিটে উদিত হবে। মনে করা হয় এই সময় চন্দ্রমাকে অর্ঘ্য দেওয়ার ফলে ভক্তদের উপর তাঁর কৃপা বর্ষিত হয় এবং সন্তানের আয়ু বৃদ্ধি পায়। চন্দ্রমাকে অর্ঘ্য দেওয়ার পর নারীরা ব্রত ভঙ্গ করেন এবং সন্তানের সুখময় জীবনের কামনা করেন।
সকট চতুর্থী ব্রত কেন এত গুরুত্বপূর্ণ?
সকট চতুর্থীকে সন্তানের কল্যাণ ও পরিবারের কল্যাণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হয়। এই দিন গণেশের পূজার বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। গণেশের আশীর্বাদ লাভের ফলে সকল সংকট দূর হয় এবং পরিবারে সুখ-শান্তি বজায় থাকে। এই দিন নারীরা ব্রত পালন করে তাদের পরিবারের জন্য শুভকামনা প্রার্থনা করেন এবং ভাল ফলাফলের আশা করেন।
সকট চতুর্থী ব্রত এক অমূল্য अवसर, যখন নারীরা তাদের পরিবার ও সন্তানের কল্যাণের জন্য কঠোর ব্রত পালন করেন এবং বিধিপূর্ণভাবে পূজা করেন। গণেশের পূজা, ব্রত কথা ও চন্দ্রমাকে অর্ঘ্য দেওয়ার ফলে জীবনে সুখ-সমৃদ্ধি ও শান্তি আসে। এই ব্রত পালনের ফলে ধর্মীয় আস্থার বৃদ্ধি ঘটে, পাশাপাশি জীবনে আসা সমস্যা থেকেও মুক্তি পাওয়া যায়।