২০২৫ সালের বৈশাখী: তিথি, সময়, গুরুত্ব এবং কাল বৈশাখীর ভয়াবহতা

🎧 Listen in Audio
0:00

২০২৫ সালের বৈশাখী উৎসব এবার ১৩ই এপ্রিল, রবিবার পালিত হবে। এই উৎসব কেবলমাত্র কৃষিকাজ এবং নববর্ষের সূচনার সাথে সম্পর্কিত নয়, এর জ্যোতিষীয় এবং ধর্মীয় গুরুত্বও অত্যন্ত বিশেষ। পঞ্জিকার মতে, যখন সূর্য মীন রাশি থেকে বেরিয়ে মেষ রাশিতে প্রবেশ করে, তখন বৈশাখ সংক্রান্তি বা বৈশাখী উৎসব পালিত হয়। একে মেষ সংক্রান্তিও বলা হয়, যা ভারতীয় সৌর পঞ্জিকার প্রথম দিন।

বৈশাখীর তিথি ও সময়

এই বছর সূর্যের মেষ রাশিতে গোচর ১৩ই এপ্রিল রাত ৩ টা ২১ মিনিটে হবে। তবে, পুণ্যকালের সময় ১৪ই এপ্রিল সকাল ৯ টা ৪৩ মিনিট থেকে শুরু হবে, যখন স্নান এবং দানের বিশেষ গুরুত্ব বলা হয়েছে। ধর্মীয় বিশ্বাস অনুযায়ী, সূর্যের রাশি পরিবর্তনের পর পুণ্যকালের সূচনা হয়, তাই ভক্তরা ১৪ই এপ্রিল গঙ্গাস্নান, দান এবং সূর্যার্ঘ্য করবেন।

কৃষকদের জন্য বৈশাখীর গুরুত্ব

বৈশাখী কৃষকদের জন্য একটি আনন্দের উৎসব, কারণ রবির ফসল এ সময় পুরোপুরি পেকে যায় এবং কাটা শুরু হয়। এই দিনটিকে নতুন শক্তি, নতুন সূচনা এবং কঠোর পরিশ্রমের ফল হিসেবে দেখা হয়। অন্যদিকে, ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকেও এই দিন অত্যন্ত পবিত্র বলে মনে করা হয়। সূর্যদেবের পূজা, হোম এবং অন্নদান শুভ ফল দেয়।

কাল বৈশাখী: পরিবর্তনশীল আবহাওয়ার ভয়ঙ্কর রূপ

বৈশাখ মাসে আরও একটি শব্দ শোনা যায়, 'কাল বৈশাখী'। এটি কোনো উৎসব নয়, বরং আবহাওয়ার হঠাৎ পরিবর্তনের ভয়ঙ্কর রূপ, যাতে প্রচণ্ড ঝড়, বজ্রপাত, বৃষ্টি এবং মूसলধার বৃষ্টি হয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ঘটনা গরম ও ঠান্ডা বাতাসের সংঘর্ষের ফলে ঘটে, যার ফলে ঘূর্ণিঝড়ের মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়।

কলকাতা আবহাওয়া দপ্তরের সাবেক পরিচালক এবং কাল বৈশাখীর বিশেষজ্ঞ এ.কে. সেনের মতে, এই সময় বাতাসের দিক দক্ষিণ-পশ্চিম থেকে উত্তর-পূর্ব দিকে থাকে। একে 'পশ্চিমী ঝঞ্ঝা'ও বলা হয়। বাতাসের গতিবেগ ৭০ থেকে ১০০ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টা পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে, যার ফলে জনজীবনে প্রভাব পড়ে। বিগত বছরগুলিতে বিহার, ঝাড়খণ্ড, বাংলা এবং ওড়িশা প্রভৃতি রাজ্যে এর প্রভাব দেখা গেছে। এ বছর আবহাওয়া বিজ্ঞানীরা সতর্ক করেছেন যে, বৈশ্বিক উষ্ণায়নের ফলে কাল বৈশাখীর প্রভাব আরও বেশি ধ্বংসাত্মক হতে পারে।

কখন এবং কীভাবে সতর্কতা অবলম্বন করবেন

রাষ্ট্রীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগ এবং আবহাওয়া দপ্তর সংবেদনশীল এলাকায় বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করার নির্দেশ দিয়েছে। মোবাইল সতর্কতা, রেডিও এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের মাধ্যমে দ্রুত সতর্কবার্তা জারি করা হবে যাতে সাধারণ জনগণ সময়মতো নিরাপদ স্থানে যেতে পারে। কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে যে তারা খোলা মাঠে কাজ করার আগে আবহাওয়ার আপডেট অবশ্যই নেবেন।

Leave a comment