রাজস্থানের সিরোহি জেলায় অবস্থিত মাউন্ট আবুতে অারাবল্লি পর্বতশ্রেণীর মধ্যে অবস্থিত একটি প্রাচীন ও অলৌকিক মন্দির আছে, যাকে অধর দেবী মন্দির নামে জানা যায়। এই মন্দির প্রায় ৫৫০০ বছর পুরানো এবং এখানে ভক্তদের সকল মনের ইচ্ছা পূর্ণ হয়। মায়ের দর্শনের জন্য ভক্তদের গুহার ভেতর দিয়ে যেতে হয়, যা এই মন্দিরকে আরও বিশেষ করে তোলে।
মাউন্ট আবু রাজস্থানের একমাত্র পার্বত্য পর্যটন স্থল, যেখানে অবস্থিত অর্বুদা দেবী মন্দির দেশের ৫১টি শক্তিপীঠের মধ্যে একটি। এই শক্তিপীঠের বিশেষত্ব হল এখানে মাতা কাত্যায়নীর গোপনে পূজা করা হয়। অধর দেবী মন্দির কেবলমাত্র তার ধর্মীয় গুরুত্বের জন্যই নয়, বরং এখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং ঐশ্বরিক পরিবেশও ভক্তদের আকর্ষণ করে। মন্দিরে প্রতিদিন ভক্তদের ঢল নেমে আসে এবং এখানে এসে লোকেরা তাদের মনের ইচ্ছা পূর্ণ হওয়ার প্রার্থনা করে।
পৌরাণিক গুরুত্ব এবং প্রতিষ্ঠা
অর্বুদা দেবী মন্দির প্রায় ৫৫০০ বছর পুরানো এবং এটি অারাবল্লি পর্বতশ্রেণীর গুহায় অবস্থিত। মন্দিরের প্রধান দ্বার একটি প্রাকৃতিক গুহা দিয়ে যাওয়ার পথ, যেখানে প্রায় ৩৫০টি সিঁড়ি উঠতে হয়। এখানে দেবী কাত্যায়নীর গোপনে পূজা হয়, যা এটিকে অন্যান্য শক্তিপীঠ থেকে আলাদা করে তোলে। এই মন্দির কেবলমাত্র ধর্মীয় দিক থেকেই গুরুত্বপূর্ণ নয়, বরং প্রাকৃতিক সৌন্দর্যেও সমৃদ্ধ। গুহার ভেতরে অবস্থিত দেবীর রূপ মনকে শান্তি ও আস্থায় ভরে তোলে। স্কন্দ পুরাণেও এই স্থানের বর্ণনা দেবী কাত্যায়নীর রূপে করা হয়েছে।
কাত্যায়নী এবং অম্বাজীর পৌরাণিক সম্পর্ক
নবরাত্রির সময় মন্দিরে ভক্তদের ভিড় জমে। অষ্টমীর রাতে বিশেষ মহাযজ্ঞ এবং নবমীর দিন পূর্ণাহুতির আয়োজন করা হয়। এই দিনগুলিতে মন্দিরে অখণ্ড পাঠও চলে, যা ভক্তদের কাছে বিশেষ আকর্ষণের কেন্দ্র। মাউন্ট আবুর এই শক্তিপীঠের গুজরাটের বিখ্যাত অম্বাজী মন্দিরের সাথেও সম্পর্ক আছে। বিশ্বাস করা হয় যে অর্বুদা দেবী এবং অম্বাজী দেবী বোন। অম্বাজীতে দেবীর অষ্টম রূপের পূজা হয়, যেখানে মাউন্ট আবুতে ষষ্ঠ রূপের।
আস্থা এবং পর্যটনের সংমিশ্রণ
অর্বুদা দেবী মন্দির কেবলমাত্র ভক্তদের জন্যই নয়, পর্যটকদের জন্যও আকর্ষণের কেন্দ্র। মাউন্ট আবুর একমাত্র পার্বত্য স্থলে অবস্থিত এই মন্দির ভক্তদের সকল মনের ইচ্ছা পূর্ণ করার জন্য বিখ্যাত। মন্দির মাউন্ট আবুর প্রধান শহর থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। এখানে পৌঁছানোর জন্য সিঁড়ির পথ ব্যবহার করতে হয়। পাহাড়ি পথ এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মাঝে মন্দির পর্যন্ত যাত্রা একটি অনন্য অভিজ্ঞতা প্রদান করে।
অর্বুদা দেবী মন্দির কেবলমাত্র একটি ধর্মীয় স্থল নয়, বরং আধ্যাত্মিক শান্তির কেন্দ্রও। নবরাত্রির সময় এখানে আসা ভক্তরা দেবীর কৃপা এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্য একসাথে অনুভব করেন।
