২০২৫ সালের ১৪ই জুন, শনিবার হিন্দু পঞ্জিকা অনুযায়ী আষাঢ় কৃষ্ণ পক্ষের তৃতীয়া তিথি থাকবে, যা দুপুর ৩ টা ৪৭ মিনিট পর্যন্ত মেনে চলা যাবে। এর পর চতুর্থী তিথির আরম্ভ হবে। এই দিনের বিশেষ গুরুত্ব এজন্যও রয়েছে কারণ এদিনই সংকষ্টী চতুর্থী ব্রত পালিত হয়, যা শ্রীগণেশকে উৎসর্গীকৃত উপবাস হিসেবে পরিচিত। ধর্মীয় দিক থেকে এই দিন অত্যন্ত শুভ ও ফলপ্রসূ।
যদি আপনি পূজা-পাঠ, ব্রত, ভ্রমণ, ব্যবসা অথবা কোনো নতুন কাজের পরিকল্পনা করছেন, তাহলে এই দিনের শুভ মুহূর্ত, যোগ, নক্ষত্র, রাহুকাল এবং সূর্যোদয়-সূর্যাস্তের সময় অবশ্যই জেনে নিন।
তিথি, নক্ষত্র এবং যোগের তথ্য
- তৃতীয়া তিথি সমাপ্তি: ১৪ জুন ২০২৫ দুপুর ৩:৪৭ টা পর্যন্ত
- চতুর্থী তিথি আরম্ভ: ১৪ জুন ২০২৫ দুপুর ৩:৪৮ টা থেকে
- ব্রহ্ম যোগ: দুপুর ১:১৩ টা পর্যন্ত
- নক্ষত্র: উত্তরাষাঢ়া, যা রাত ১২:২২ টা পর্যন্ত প্রভাব বিস্তার করবে
- সংকষ্টী চতুর্থী ব্রত: চন্দ্রদর্শন সহযোগে সমাপ্ত হবে, এই দিন চন্দ্রমার দর্শন করে ব্রত ভাঙা হয়।
বিশেষ সংযোগ – গুরুর নক্ষত্র গোচর
১৪ জুন গুরু গ্রহের প্রভাব একটি বিশেষ সংযোগ তৈরি করে। গুরুর অবস্থান জীবনে ধর্মীয় আস্থা, সামাজিক মর্যাদা এবং আধ্যাত্মিক চেতনা জাগ্রত করে। যারা এই দিন ব্রত করবেন, তাদের বিশেষ করে বুদ্ধি ও স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে লাভের সম্ভাবনা থাকবে।
শুভ কাজের জন্য মুহূর্ত
অভিজিত মুহূর্ত: সকাল ১১:৫৩:০৯ টা থেকে দুপুর ১২:৪৮:৫৭ টা পর্যন্ত (এই মুহূর্ত কোনো নতুন কাজ শুরু করার জন্য অত্যন্ত শুভ বলে মনে করা হয়)। দুপুর ১:১৩ টা পর্যন্ত ব্রহ্ম যোগ থাকার কারণে এই সময় আধ্যাত্ম, জপ-তপ এবং ব্রতের দিক থেকে অতি লাভজনক হবে।
রাহুকালের সময় (শুভ কাজ থেকে বিরত থাকুন)
- দিল্লি: ০৮:৫২ - ১০:৩৭ টা
- মুম্বাই: ০৯:২০ - ১০:৫৯ টা
- চণ্ডীগড়: ০৮:৫১ - ১০:৩৭ টা
- লখনউ: ০৮:৩৯ - ১০:২৩ টা
- ভোপাল: ০৮:৫৭ - ১০:৩৯ টা
- কলকাতা: ০৮:১৪ - ০৯:৫৫ টা
- আহমেদাবাদ: ০৯:১৬ - ১০:৫৮ টা
- চেন্নাই: ০৮:৫৬ - ১০:৩২ টা
সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্তের সময়
- সূর্যোদয়: সকাল ০৫:২২:৩৬ টা
- সূর্যাস্ত: সন্ধ্যা ০৭:১৯:২৯ টা
সূর্যের এই উদয়-অস্ত সময়ের মধ্যেই পুরো দিনের পূজা-পাঠ এবং ব্রত পালন করা হয়। চতুর্থী ব্রত রাখা ব্যক্তিদের বিশেষ করে চন্দ্রমার দর্শন করে ব্রতের সমাপ্তি করতে হবে।
সংকষ্টী চতুর্থীর গুরুত্ব
সংকষ্টী চতুর্থীর ব্রত ভগবান গণেশকে উৎসর্গীকৃত। এটিকে সংকট দূরকারী চতুর্থী বলে মনে করা হয়। বিশ্বাস করা হয় যে, এই দিন বিধিপূর্বক ব্রত রাখা এবং চন্দ্রদর্শন করে গণেশজীর পূজা করলে ধন, বুদ্ধি, সুখ এবং সন্তান লাভ হয়। এই দিন ব্রতধারীরা নিরজল উপবাস পালন করেন এবং রাতে চন্দ্রমাকে অর্ঘ্য দিয়ে ফলাহার করেন। শ্রীগণেশকে দূর্বা, মোদক এবং লাল ফুল বিশেষ প্রিয়।
পূজনবিধি সংক্ষেপে
- সকালে স্নান করে পরিষ্কার পোশাক পরিধান করুন।
- বাড়ির মন্দিরে গণেশজীর প্রতিমা স্থাপন করুন।
- দীপ জ্বালান, গণেশজীকে দূর্বা, লাল পুষ্প এবং মোদক অর্পণ করুন।
- ॐ গং গণপতয়ে নমঃ মন্ত্রের ১০৮ বার জপ করুন।
- পুরো দিন ব্রত রাখুন এবং রাতে চন্দ্রমাকে অর্ঘ্য দিন।
- চন্দ্রদর্শনের পরেই ব্রত ভাঙুন।
২০২৫ সালের ১৪ই জুন ধর্মীয় দিক থেকে অতি গুরুত্বপূর্ণ। সংকষ্টী চতুর্থী, ব্রহ্ম যোগ, গুরুর গোচর এবং উত্তরাষাঢ়া নক্ষত্রের মতো শুভ সংযোগ এটিকে বিশেষ করে তুলে ধরে। তাই, যদি আপনি কোনো সংকটে পড়ে থাকেন, তাহলে এই দিন ভগবান গণেশের আরাধনা আপনার জন্য সৌভাগ্যের দ্বার উন্মোচন করতে পারে। যাদের স্বাস্থ্য, সন্তান, বুদ্ধি অথবা কোনো বিশেষ সিদ্ধির কামনা রয়েছে, তারা এই দিন বিধিপূর্বক ব্রত পালন করুন এবং শ্রীগণেশের কৃপা লাভ করুন।