বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী জিতেন্দ্র সিংহ রাজ্যসভায় ঘোষণা করেছেন যে, ভারতের অত্যন্ত আকাঙ্ক্ষিত চন্দ্রযান ৪ মিশন ২০২৭ সালে উৎক্ষেপণ করা হবে। এই মিশনের মাধ্যমে প্রথমবারের মতো চাঁদের পাথরের নমুনা পৃথিবীতে আনা হবে। তিনি জানিয়েছেন, এই মিশনে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন এলভিএম ৩ রকেট ব্যবহার করা হবে, যা দুটি পৃথক উৎক্ষেপণের পর পাঁচটি উপাদানকে পৃথিবীর কক্ষপথে পৌঁছে দেবে।
নয়াদিল্লি: কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ডা. জিতেন্দ্র সিংহ ভারতের আসন্ন অত্যন্ত আকাঙ্ক্ষিত অভিযানগুলির তথ্য দিয়ে জানিয়েছেন যে, চন্দ্রযান ৪ মিশনের উদ্দেশ্য হল চাঁদের পৃষ্ঠ থেকে নমুনা সংগ্রহ করে তা পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনা। এই মিশন ২০২৭ সালে উৎক্ষেপণ করা হবে। এছাড়াও, পরবর্তী বছর গগনযান মিশন উৎক্ষেপণ করা হবে, যার মাধ্যমে ভারতীয় মহাকাশচারীদের একটি বিশেষ যানের মাধ্যমে পৃথিবীর নিম্ন কক্ষপথে পাঠানো হবে এবং নিরাপদে ফিরিয়ে আনা হবে।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী আরও ঘোষণা করেছেন যে, ২০২৬ সালে ভারত সমুদ্রযান মিশন উৎক্ষেপণ করবে। এই মিশনের অধীনে তিনটি বৈজ্ঞানিক সাবমেরিনের মাধ্যমে সমুদ্রের ৬,০০০ মিটার গভীরে গিয়ে অনুসন্ধান করা হবে। তিনি বলেছেন, এই সাফল্যগুলি ভারতের ঐতিহাসিক অভিযানগুলির সময়সীমা নির্ধারণ করবে।
এই মিশনগুলিও উৎক্ষেপণ করা হবে
১. গগনযান মিশন (২০২৫)
* উৎক্ষেপণের পরিকল্পনা: পরবর্তী বছর ২০২৫ সালে গগনযান মিশন উৎক্ষেপণ করা হবে।
* উদ্দেশ্য: ভারতীয় মহাকাশচারীদের পৃথিবীর নিম্ন কক্ষপথে পাঠানো এবং নিরাপদে ফিরিয়ে আনা।
* বৈশিষ্ট্য: গগনযান মিশন ভারতের মানবসহ মহাকাশ অভিযানে একটি ঐতিহাসিক পদক্ষেপ হবে।
২. সমুদ্রযান মিশন (২০২৬)
* উৎক্ষেপণের পরিকল্পনা: ভারতের সমুদ্রযান মিশন ২০২৬ সালে উৎক্ষেপণ করা হবে।
* উদ্দেশ্য: সমুদ্রতলে অনুসন্ধানের জন্য তিনজন বৈজ্ঞানিককে ৬,০০০ মিটার গভীরে পাঠানো।
* প্রযুক্তিগত বিবরণ: বৈজ্ঞানিক সাবমেরিনের মাধ্যমে সমুদ্রতল পর্যন্ত যাওয়া হবে।
* প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ উল্লেখ: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী স্বাধীনতা দিবসের ভাষণে এই ঐতিহাসিক মিশনের দিকে ইঙ্গিত করেছিলেন।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ডা. জিতেন্দ্র সিংহ জানিয়েছেন যে,
কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী ডা. জিতেন্দ্র সিংহ ভারতের মহাকাশ ও সমুদ্র অভিযানের অগ্রগতি সম্পর্কে তথ্য দিয়ে বলেছেন যে, সমুদ্রযান মিশনের মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ খনিজ, দুর্লভ ধাতু এবং অজানা সমুদ্রজীব বৈচিত্র্যের তথ্য সংগ্রহ করা হবে। তিনি জানিয়েছেন যে, গগনযান প্রকল্পের মানববিহীন মিশন চলতি বছরই পাঠানো হবে, যাতে রোবট বয়ম মিত্র অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
মন্ত্রী ইসরোর ঐতিহাসিক উন্নয়নের উল্লেখ করে বলেছেন যে, ১৯৬৯ সালে ইসরো প্রতিষ্ঠার পর প্রথম উৎক্ষেপণ কেন্দ্র স্থাপনে দুই দশকেরও বেশি সময় লেগেছিল। দ্বিতীয় উৎক্ষেপণ কেন্দ্র ২০০৪ সালে তৈরি হয়। কিন্তু গত ১০ বছরে মহাকাশ ক্ষেত্রের মৌলিক অবকাঠামো এবং বিনিয়োগে ব্যাপক বিস্তৃতি ঘটেছে। এখন ভারত বৃহৎ রকেটের জন্য তৃতীয় উৎক্ষেপণ স্থল তৈরি করছে এবং ছোট উপগ্রহের জন্য তামিলনাড়ুর তুতিকোরিন জেলায় নতুন উৎক্ষেপণ স্থল স্থাপন করা হচ্ছে, যখন শ্রীহরিকোটার উৎক্ষেপণ স্থলেরও সম্প্রসারণ করা হচ্ছে।
ডা. জিতেন্দ্র সিংহ জানিয়েছেন যে, বর্তমানে ভারতের মহাকাশ অর্থনীতির মূল্য আট বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা আগামী দশকে ৪৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছাতে পারে। এই সম্প্রসারণের ফলে ভারত বিশ্ব মহাকাশ ক্ষেত্রে একটি মহাশক্তি হিসেবে উঠে আসবে। তিনি আরও বলেছেন যে, গত দশকে করা সংস্কারগুলি ব্যক্তিগত ক্ষেত্রের মহাকাশ ক্ষেত্রে প্রবেশকে সহজ করে তুলেছে, যার ফলে উদ্ভাবন, বিনিয়োগ এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতাকে গতি দেওয়া হয়েছে।