ইঞ্জিনিয়ারিং ও মেডিকেল ছাড়াও লাখ লাখ টাকা আয়ের পেশা

ইঞ্জিনিয়ারিং ও মেডিকেল ছাড়াও লাখ লাখ টাকা আয়ের পেশা
সর্বশেষ আপডেট: 27-05-2025

ইঞ্জিনিয়ার বা ডাক্তার ছাড়াও এমন অনেক পেশা আছে যেখানে লক্ষ লক্ষ টাকা আয় করা সম্ভব। মার্কেটিং ম্যানেজার, প্রোডাক্ট ম্যানেজার, সিএ, ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকার, কমার্শিয়াল পাইলট এবং ম্যানেজমেন্ট কনসালট্যান্ট—এই ধরণের বিকল্পগুলিতে মনোযোগ দিন।

চাকরি: আজকের সময়ে অনেক এমন কর্মসংস্থানের বিকল্প রয়েছে যা ইঞ্জিনিয়ারিং এবং মেডিকেল পড়াশোনার বাইরে, কিন্তু আয়ের দিক থেকে কম নয়। প্রায়শই দেখা যায় যে ছাত্ররা কর্মজীবনের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার কথা ভাবে। কিন্তু সত্যি কথা হল, এখন বাজারে এমন অনেক ক্ষেত্র আছে যেখানে আপনি ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ার না হয়েও চমৎকার কর্মজীবন গড়ে তুলতে পারেন এবং লক্ষ লক্ষ টাকা আয় করতে পারেন।

শুধু প্রয়োজন আপনার আগ্রহকে চিনতে পারা এবং সেই ক্ষেত্রে কঠোর পরিশ্রম করা। আজ আমরা আপনাকে এমন ৬টি কর্মসংস্থানের বিকল্প সম্পর্কে বলবো যেখানে আপনি ভালো বেতন এবং চমৎকার উন্নয়ন পেতে পারেন। তাহলে চলুন জেনে নিই সেগুলো সম্পর্কে।

১. মার্কেটিং ম্যানেজার

মার্কেটিং ম্যানেজার কোনও পণ্য বা সেবার বাজারে সাফল্য নিশ্চিত করার জন্য সম্পূর্ণ কৌশল তৈরি করে। মার্কেট রিসার্চ থেকে শুরু করে ব্র্যান্ড প্রচার, ক্যাম্পেইন ডিজাইনিং এবং দলের নেতৃত্ব—সবকিছুই তাদের দায়িত্ব। এই ক্ষেত্রে কর্মজীবন গড়ে তুলতে মার্কেটিং, ম্যানেজমেন্ট বা যোগাযোগ বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি প্রয়োজন। বেতনের কথা বললে, একজন নতুন কর্মীর বার্ষিক ৫ লক্ষ টাকা থেকে শুরু হতে পারে। অভিজ্ঞতা এবং দক্ষতার সাথে এটি বেড়ে ২০-২৬ লক্ষ টাকা বার্ষিক পর্যন্ত হতে পারে।

২. প্রোডাক্ট ম্যানেজার

কোনও কোম্পানির নতুন পণ্যের পরিকল্পনা, নকশা, উৎপাদন এবং বাজারে উন্মোচনের দায়িত্ব প্রোডাক্ট ম্যানেজারের। এর জন্য আপনাকে কম্পিউটার সায়েন্স, মার্কেটিং বা বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনে স্নাতক ডিগ্রি করতে হবে। প্রোডাক্ট ম্যানেজার হিসেবে শুরুর বেতন বার্ষিক ৬ লক্ষ টাকা থেকে শুরু হতে পারে, যা অভিজ্ঞতা এবং দক্ষতার উপর নির্ভর করে বার্ষিক ৪০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত যেতে পারে।

৩. ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকার

যদি আপনি অর্থ এবং বাজারের জগতে আগ্রহী হন, তাহলে ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকিং আপনার জন্য একটি চমৎকার কর্মসংস্থানের বিকল্প। ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকার কোম্পানি এবং সরকারের জন্য পুঁজি সংগ্রহ, বড় আর্থিক চুক্তি, একীকরণ এবং বিনিয়োগের কাজ পরিচালনা করে। এর জন্য বিকম, বিবিএ, বা অর্থনীতিতে স্নাতক ডিগ্রি প্রয়োজন। শুরুর বেতন বার্ষিক ৩ লক্ষ টাকা থেকে শুরু হয়, যা ৪৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত যেতে পারে।

৪. চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট (CA)

সিএ হওয়া সবসময়ই একটি উচ্চমানের কর্মসংস্থানের বিকল্প ছিল। কর পরিকল্পনা, আর্থিক নিরীক্ষণ, হিসাবরক্ষণ এবং কোম্পানির আর্থিক স্বাস্থ্যের দায়িত্ব সিএ-র উপর থাকে। ১২তম শ্রেণীর পর কমার্স বিভাগ নির্বাচন করে এবং সিএ কোর্স সম্পন্ন করে আপনি এই কর্মজীবনে প্রবেশ করতে পারেন। শুরুর বেতন বার্ষিক ৩-৫ লক্ষ টাকা, কিন্তু কয়েক বছরের অভিজ্ঞতার পর এটি ২০ লক্ষ টাকা বার্ষিক পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে।

৫. কমার্শিয়াল পাইলট

যদি উড়ান ভরার স্বপ্ন থাকে, তাহলে কমার্শিয়াল পাইলট হওয়া আপনার জন্য সঠিক কর্মসংস্থানের বিকল্প। যাত্রী বা পণ্যকে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় নিরাপদে পৌঁছে দেওয়া পাইলটের দায়িত্ব। ১২তম শ্রেণীতে পদার্থবিজ্ঞান এবং গণিত প্রয়োজন, এর পর কমার্শিয়াল পাইলট লাইসেন্স (CPL) প্রয়োজন। এই কর্মজীবনে শুরুর বেতনই বার্ষিক ১০-১৫ লক্ষ টাকা থেকে শুরু হয় এবং ৮৫ লক্ষ টাকা বার্ষিক পর্যন্ত যেতে পারে।

৬. ম্যানেজমেন্ট কনসালট্যান্ট

কোম্পানিগুলিকে তাদের বৃদ্ধি, কৌশল এবং কার্যক্রমে উন্নতি আনার জন্য পরামর্শ দেওয়া ম্যানেজমেন্ট কনসালট্যান্টের কাজ। এতে বিবিএ এবং এমবিএ ডিগ্রি আপনার জন্য উপকারী হবে। এই ক্ষেত্রে শুরুর বেতন বার্ষিক ১০ লক্ষ টাকা হতে পারে এবং এটি ৪৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত যেতে পারে।

কেন ভাববেন ভিন্ন কর্মজীবনের কথা?

আজকের পরিবর্তিত সময়ে শুধুমাত্র মেডিকেল বা ইঞ্জিনিয়ারিংই আয়ের উৎস নয়। অনেক এমন ক্ষেত্র আছে যেখানে আপনি আপনার আগ্রহ এবং দক্ষতার উপর ভিত্তি করে চমৎকার কর্মজীবন গড়ে তুলতে পারেন। তাই যদি আপনার আগ্রহ এই বিকল্পগুলির মধ্যে কোনও একটিতে থাকে, তাহলে সময় নষ্ট না করে প্রস্তুতি শুরু করুন।

Leave a comment