উত্তর প্রদেশে ধর্মীয় স্থানগুলির নিরাপত্তা আরও উন্নত করা হচ্ছে। অযোধ্য, বৃন্দাবন, কাশী এবং প্রয়াগরাজের মতো প্রধান তীর্থস্থানগুলিতে শীঘ্রই অত্যাধুনিক ফেস রিকগনিশন সিস্টেম (Face Recognition System) চালু করা হবে।
লখনউ: উত্তর প্রদেশ সরকার পর্যটন স্থানগুলির নিরাপত্তা এবং জনসাধারণের ব্যবস্থাপনার জন্য উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহারের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। লখনউয়ের আলীগঞ্জ হনুমান মন্দিরে চালু করা ফেস রিকগনিশন সিস্টেমের পরীক্ষামূলক প্রকল্পের সাফল্যের পরে, এই অত্যাধুনিক প্রযুক্তি রাজ্যের প্রধান ধর্মীয় স্থানগুলি যেমন অযোধ্য, কাশী, বৃন্দাবন এবং প্রয়াগরাজেও প্রয়োগ করা হবে।
পরীক্ষামূলক প্রকল্পের সাফল্যে আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি
লখনউয়ের আলীগঞ্জস্থিত নতুন হনুমান মন্দিরে পরীক্ষামূলকভাবে ফেস রিকগনিশন সিস্টেম স্থাপন করা হয়েছিল। এই সিস্টেম এখন পর্যন্ত ৬৫০০-এর বেশি অনন্য দর্শনার্থীকে রেকর্ড করেছে এবং প্রায় ৯৬% সঠিকতার সাথে মুখ চিহ্নিত করতে সক্ষম হয়েছে। এই প্রযুক্তি বাস্তব সময়ে কাজ করে এবং সন্দেহজনক কার্যকলাপ শনাক্ত করতে পারে।
এই সিস্টেমের সাফল্যের পরে, পর্যটন ও সংস্কৃতি বিভাগ রাজ্যের অন্যান্য ধর্মীয় ও পর্যটন স্থানগুলিতে এটি প্রয়োগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী হবে।
কোন স্থানগুলিতে এই সিস্টেমটি স্থাপন করা হবে?
পর্যটন ও সংস্কৃতি মন্ত্রী জয়বীর সিংহ জানিয়েছেন যে, এই প্রযুক্তি অযোধ্যার শ্রীরাম জন্মভূমি মন্দির এবং হনুমানগড়ী, বারাণসীর কাশী বিশ্বনাথ মন্দির এবং বটুক ভৈরব মন্দির, প্রয়াগরাজের বড় হনুমান মন্দির এবং অলোপী দেবী মন্দির, বৃন্দাবনের শ্রী বঙ্কে বিহারী মন্দির এবং প্রেম মন্দির এবং মথুরার কুসুম সরোবরের মতো প্রধান স্থানগুলিতে স্থাপন করা হবে।
কিভাবে কাজ করবে সিস্টেমটি?
ফেস রিকগনিশন সিস্টেম উচ্চ-রেজোলিউশন ক্যামেরার মাধ্যমে দর্শনার্থীদের মুখ চিহ্নিত করে। এই ব্যবস্থা জনসমাগমের ধরণ বুঝতে পারে, সন্দেহজনক কার্যকলাপ ট্র্যাক করতে পারে এবং প্রথমবার আসা ব্যক্তিদের তথ্য সংগ্রহ করতে পারে। এই প্রযুক্তি নিরাপত্তা কর্মীদের এমন ব্যক্তিদের শনাক্ত করতে সাহায্য করবে যারা কোনও অনুচিত কাজে জড়িত বা যাদের আগে থেকেই ব্ল্যাকলিস্ট করা হয়েছে।
তদুপরি, এই সিস্টেম কোনও নির্দিষ্ট স্থানে কতজন পর্যটক প্রথমবার এসেছেন তা জানতেও সাহায্য করবে, যা ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায় সহায়ক হবে।
ডাটাবেস আরও শক্তিশালী করার প্রস্তুতি
পর্যটন বিভাগ এখন ভারতীয় অনন্য পরিচয় কর্তৃপক্ষ (UIDAI)-এর সাথে মিলে একটি ব্যাপক এবং আরও শক্তিশালী ডাটাবেস তৈরির পরিকল্পনার উপর কাজ করছে। এই ডাটাবেসের সাহায্যে স্থানীয় বাসিন্দা, বারবার আসা ভক্ত এবং প্রথমবার আসা পর্যটকদের মধ্যে স্পষ্ট পার্থক্য করা যাবে।
এর জন্য মন্দির এলাকার সকল প্রধান প্রবেশ ও প্রস্থান দ্বারে উচ্চ-সংজ্ঞা ক্যামেরা স্থাপন করা হবে, যাতে প্রত্যেক আগমন-প্রস্থানকারীর উপর নজর রাখা যায়। এই ব্যবস্থায় শুধুমাত্র নিরাপত্তা ব্যবস্থাই শক্তিশালী হবে না, পর্যটনের বিশ্লেষণেও এটি সহায়ক হবে। এই ডেটা পর্যটন প্রবণতা বোঝা, ব্যবস্থা উন্নত করা এবং পর্যটকদের অভিজ্ঞতা নিরাপদ ও আরামদায়ক করায় সাহায্য করবে।