বিহারে ‘প্রতিটি ঘর একটি পাঠশালা’ পরিকল্পনা শুরু, অভিভাবকদের ঘরে পড়াশোনার কোণ তৈরি করার জন্য উৎসাহিত করা হবে। ৩১শে মে সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে।
বিহার: সংবাদ: বিহার সরকার সরকারি স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিকল্পনা শুরু করেছে, যার নাম “প্রতিটি ঘর একটি পাঠশালা”। এই পরিকল্পনার অধীনে, প্রতিটি বাড়ির ছাত্রছাত্রীর জন্য এমন একটি কোণ তৈরি করা হবে, যেখানে সে আরাম করে পড়াশোনা করতে পারবে। এর উদ্দেশ্য হল ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনাকে উন্নত করা এবং অভিভাবকদের এই প্রক্রিয়ায় যুক্ত করা।
ঘরে পড়াশোনার জন্য অভিভাবকদের উৎসাহিত করা হবে
এই পরিকল্পনার অধীনে অভিভাবকদের বলা হবে যে তারা তাদের বাড়ির কোনও শান্ত এবং কম শব্দের জায়গা ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনার জন্য প্রস্তুত করুন। এই জায়গাটি বাড়ির দরজার কাছে বা জানালার কাছে হতে পারে, যেখানে ছাত্রছাত্রীরা মনোযোগ সহকারে পড়াশোনা করতে পারবে। এই কোণে চেয়ার থাকতে পারে অথবা মেঝেতে চটাই বিছিয়ে বসার জায়গা তৈরি করা যেতে পারে। পড়াশোনার পরিবেশ আরও উন্নত করার জন্য দেয়ালে পড়াশোনা সম্পর্কিত পোস্টার এবং রুটিন লাগানো যেতে পারে।
এই কোণে ছাত্রছাত্রীদের বই রাখার জন্য পুরানো বাক্স বা কাটন ব্যবহার করা যেতে পারে যাতে তারা সহজেই তাদের সামগ্রী সাজিয়ে রাখতে পারে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল এই সময় বাড়িতে টিভি, মোবাইল এবং অন্যান্য মনোযোগ ছিন্নকারী জিনিসপত্র বন্ধ রাখা উচিত যাতে ছাত্রছাত্রীরা পুরোপুরি পড়াশোনায় মনোযোগ দিতে পারে।
অভিভাবক-শিক্ষক সেমিনারে পরিকল্পনার তথ্য
৩১শে মে রাজ্যের সকল সরকারি বিদ্যালয়ে অভিভাবক-শিক্ষক সেমিনারের আয়োজন করা হবে। এই সেমিনারে অভিভাবকদের “প্রতিটি ঘর একটি পাঠশালা” পরিকল্পনা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দেওয়া হবে। পাশাপাশি, গ্রীষ্মের ছুটির সময় ছাত্রছাত্রীদের দেওয়া হোমওয়ার্ক এবং শিক্ষণ সামগ্রীর পর্যালোচনা করা হবে। অভিভাবকদের বলা হবে যে তারা কীভাবে তাদের বাচ্চাদের পড়াশোনার জন্য উৎসাহিত করতে পারে এবং তাদের শেখার প্রক্রিয়া কীভাবে উন্নত করতে পারে।
এই সেমিনারের থিম হল “পড়বো, বাড়বো এবং শিখবো আমরা।” এতে অভিভাবকদের এটাও বোঝানো হবে যে স্কুল এবং পরিবার মিলে ছাত্রছাত্রীদের উন্নয়নে কত বড় ভূমিকা পালন করে। অভিভাবকদের স্কুলের পক্ষ থেকে পাওয়া সহযোগিতা সম্পর্কেও বিস্তারিত বলা হবে।
গ্রীষ্মের ছুটিতে ছাত্রছাত্রীদের শিক্ষা অব্যাহত থাকবে
১লা জুন থেকে বিহারের সরকারি স্কুলগুলিতে গ্রীষ্মের ছুটি শুরু হবে। এই সময় ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনা বন্ধ না হয়, সেজন্য অভিভাবকদের বিশেষভাবে সবল এবং সচেতন করা হবে। সেমিনারের দিনই স্কুলগুলিতে ছাত্রছাত্রীদের দেওয়া শিক্ষণ সামগ্রী যেমন টিএলএম কিট, পাঠ্যপুস্তক, অনুশীলন বই, ডায়েরি, কপি, পেন্সিল, ব্যাগ এবং পানির বোতল ইত্যাদির প্রদর্শনীও করা হবে।
শিক্ষকরা অভিভাবকদের এই সামগ্রীর সঠিক ব্যবহার কীভাবে করবেন, সে সম্পর্কে বুঝিয়ে দেবেন যাতে ছাত্রছাত্রীরা গ্রীষ্মের ছুটিতেও পড়াশোনার সাথে জড়িত থাকে। এইভাবে, এই পরিকল্পনা ছাত্রছাত্রীদের অবিরত শেখাকে নিশ্চিত করবে।
ছাত্রছাত্রীদের সার্বিক উন্নয়নেও ফোকাস করা হবে
সেমিনারে শুধুমাত্র পড়াশোনা নয়, বরং ছাত্রছাত্রীদের সার্বিক উন্নয়নেও গুরুত্ব দেওয়া হবে। অভিভাবকদের ছাত্রছাত্রীদের একাডেমিক অগ্রগতি, তাদের নিয়মিত উপস্থিতি, পোশাক, চুল এবং নখের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, সঠিক পুষ্টি এবং খাবার সম্পর্কে তথ্য দেওয়া হবে। পাশাপাশি, স্কুলে ছাত্রছাত্রীর আচরণ এবং মানসিক স্বাস্থ্য নিয়েও আলোচনা করা হবে।
