তুকারাম ওম্বলের স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণে ১৩.৪৬ কোটি টাকা অনুমোদন

তুকারাম ওম্বলের স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণে ১৩.৪৬ কোটি টাকা অনুমোদন
সর্বশেষ আপডেট: 29-03-2025

মহারাষ্ট্র সরকার ২৬/১১-এর হামলায় শহীদ তুকারাম ওম্বলের স্মরণে সাতারা জেলায় একটি বিশাল স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যার জন্য ১৩.৪৬ কোটি টাকা অনুমোদন করা হয়েছে।

তুকারাম ওম্বলে স্মৃতিস্তম্ভ: মহারাষ্ট্র সরকার ২৬/১১ মুম্বই হামলায় শহীদ সহকারী পুলিশ পরিদর্শক তুকারাম ওম্বলের স্মরণে একটি বিশাল স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের জন্য সরকার ১৩.৪৬ কোটি টাকা অনুমোদন করেছে। এর অধীনে প্রথম কিস্তি হিসেবে ২.৭০ কোটি টাকা (মোট অর্থের ২০%) জেলা প্রশাসনকে প্রদান করা হয়েছে, যার ফলে নির্মাণ কাজ শীঘ্রই শুরু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

পৈত্রিক গ্রাম কেদাম্বেতে নির্মিত হবে ওম্বলের স্মৃতিস্তম্ভ

এই স্মৃতিস্তম্ভটি সাতারা জেলার কেদাম্বে গ্রামে নির্মিত হবে, যা তুকারাম ওম্বলের পৈত্রিক স্থান। সরকারের বিশ্বাস, এই স্মৃতিস্তম্ভ তাঁর বীরত্ব ও ত্যাগের অমর কাহিনীকে জীবন্ত রাখবে এবং আগামী প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করবে।

তুকারাম ওম্বলের বীরত্ব: কাসাবকে জীবন্ত ধরার বীর

মুম্বই সন্ত্রাসবাদী হামলার সময় তুকারাম ওম্বলে অসাধারণ বীরত্বের পরিচয় দিয়েছিলেন। যখন সন্ত্রাসবাদী আজমল কাসাব এবং তার সহযোগী ইসমাইল খান গিরগাঁও চৌপাটির কাছে পৌঁছায়, তখন ওম্বলে বীরত্বের সাথে কাসাবের রাইফেল ধরে ধরে তাকে নড়াচড়া করতে দেয়নি। এই সময় কাসাব তাঁর উপর ২৩ টি গুলি চালিয়েছিল, কিন্তু তুকারাম কাসাবকে তখন পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণে রেখেছিলেন যতক্ষণ না পুলিশ তাকে জীবন্ত ধরে নিয়ে যায়। তাঁর এই শহীদত্ব সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের লড়াইয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড় নিয়ে এসেছিল।

২৬ নভেম্বর ২০০৮: যখন মুম্বই রক্তাক্ত হয়েছিল

২৬ নভেম্বর ২০০৮ সালে পাকিস্তান থেকে সমুদ্রপথে আগত ১০ জন সন্ত্রাসবাদী মুম্বইতে হামলা চালায়। প্রথমে তারা ছত্রপতি শিবাজী টার্মিনাস (CST) রেল স্টেশনকে লক্ষ্য করে, পরে কামা হাসপাতাল এবং অন্যান্য স্থানে হামলা চালায়। এই সময় সন্ত্রাসবাদীদের গুলিতে ATS প্রধান হেমন্ত কারকারেসহ ৬ জন পুলিশ কর্মী শহীদ হন।

গিরগাঁও চৌপাটিতে সন্ত্রাসবাদীদের আটকানো

মুম্বই পুলিশ সন্ত্রাসবাদীদের আটকানোর জন্য বিভিন্ন স্থানে ব্যারিকেড করেছিল। এই সময় গিরগাঁও চৌপাটিতে পুলিশ দল আজমল কাসাব এবং ইসমাইল খানের গাড়ি থামানোর চেষ্টা করে। তুকারাম ওম্বলে নিজের জীবনের প্রতি কোনো ভয় না করে কাসাবের বন্দুক জাপটে ধরে, যার ফলে অন্য পুলিশ কর্মীরা তাকে জীবন্ত ধরার সুযোগ পেয়েছিল। তবে এই সময় ওম্বলে নিজের প্রাণ দিয়েছিলেন।

২৬/১১-এর হামলায় ১৬৪ জনের বেশি মানুষের মৃত্যু

মুম্বই হামলায় ১৬৪ জনের বেশি মানুষের মৃত্যু হয় এবং ৩০০ জনের বেশি লোক আহত হয়। এদের মধ্যে অনেক বিদেশী নাগরিকও ছিলেন। এই সন্ত্রাসবাদী হামলার ক্ষত আজও মুম্বইবাসীর হৃদয়ে তাজা।

তুকারাম ওম্বলের শহীদত্বকে শ্রদ্ধাঞ্জলি

তুকারাম ওম্বলে যে বীরত্বের পরিচয় দিয়েছিলেন, তা ভারতের ইতিহাসে সর্বদা সোনার অক্ষরে লেখা থাকবে। মহারাষ্ট্র সরকার কর্তৃক তাঁর স্মরণে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের সিদ্ধান্ত এই বীর যোদ্ধার প্রতি দেশের কৃতজ্ঞতাকে প্রতিফলিত করে।

Leave a comment