মুম্বই হামলার দোষী তাহওয়ুর রানাকে শীঘ্রই ভারতে আনা হবে। মার্কিন সুপ্রিম কোর্ট তার আবেদন খারিজ করে প্রত্যর্পণে অনুমোদন দিয়েছে। রানা আতঙ্কবাদী ডেভিড হেডলির সাহায্য করেছিল।
Tahawwur Rana extradition to India: মার্কিন সুপ্রিম কোর্ট ২৬/১১ মুম্বই হামলার দোষী তাহওয়ুর রানার ভারতে প্রত্যর্পণে অনুমোদন দিয়েছে। কোর্ট রানার পুনর্বিবেচনার আবেদন খারিজ করে তাকে ভারতে পাঠানোর পথ সুগম করে দিয়েছে। এটি ভারতের জন্য একটি বড় কূটনৈতিক সাফল্য, কারণ বহু বছর ধরে ভারত এই পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত কানাডিয়ান নাগরিকের প্রত্যর্পণের দাবি জানিয়ে আসছিল।
শেষ আইনী লড়াই হেরে গেলেন রানা
প্রত্যর্পণ বন্ধ করার এটি ছিল তাহওয়ুর রানার শেষ আইনী সুযোগ। এর আগে, তিনি সান ফ্রান্সিসকোতে উত্তর সার্কিটের মার্কিন আপিল আদালয় সহ বহু ফেডারেল আদালতে মামলা করেছিলেন, কিন্তু প্রতিবারই পরাজয়ের মুখোমুখি হয়েছিলেন। ১৩ নভেম্বর ২০২৪ তারিখে রানা মার্কিন সুপ্রিম কোর্টে "প্রমাণপত্রের জন্য আবেদন" দায়ের করেছিলেন, যা ২১ জানুয়ারী ২০২৫ তারিখে খারিজ করা হয়। সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্ট করে জানিয়েছে যে আবেদনটি গ্রহণযোগ্য নয়।
২৬/১১ মুম্বই আতঙ্কবাদী হামলায় রানার ভূমিকা
রানা ২৬/১১ মুম্বই হামলায়ও জড়িত ছিলেন, যেখানে ১০ জন পাকিস্তানি আতঙ্কবাদী মুম্বইতে হামলা চালিয়ে ১৬৬ জনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছিল, যার মধ্যে ৬ জন মার্কিন নাগরিকও ছিলেন। রানা হামলার মাস্টারমাইন্ড ডেভিড কলম্যান হেডলির সাহায্য করেছিলেন। হেডলি মুম্বইতে আতঙ্কবাদী হামলার পরিকল্পনা তৈরি এবং স্থানগুলির রেকি করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। এফবিআই ২০০৯ সালে শিকাগো থেকে তাহওয়ুর রানাকে গ্রেপ্তার করেছিল।
কোন তাহওয়ুর রানা?
তাহওয়ুর রানা পাকিস্তানে জন্মগ্রহণ করেছিলেন এবং পরে কানাডার নাগরিক হয়েছিলেন। ৬৩ বছর বয়সী রানা পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে ১০ বছর চিকিৎসক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। এরপর তিনি আতঙ্কবাদী সংগঠনের সাথে যুক্ত হন।
রানা ছিলেন লস্কর-ই-তৈয়বার একজন সক্রিয় সদস্য এবং ভারতের বিরুদ্ধে আতঙ্কবাদী ষড়যন্ত্রে জড়িত ছিলেন। তিনি জার্মানি, ইংল্যান্ড এবং কানাডা সহ বিভিন্ন দেশ ভ্রমণ করেছিলেন এবং আতঙ্কবাদী কর্মকাণ্ডে সমর্থন দিয়েছিলেন।
ভারত-মার্কিন প্রত্যর্পণ চুক্তির সুবিধা
ভারত-মার্কিন প্রত্যর্পণ চুক্তির অধীনে এখন তাহওয়ুর রানাকে শীঘ্রই ভারতে আনা হবে। রানা বর্তমানে লস অ্যাঞ্জেলেসের মেট্রোপলিটান ডিটেনশন সেন্টারে আটক রয়েছেন। ভারত হেডলির প্রত্যর্পণেরও দাবি করেছে, কিন্তু রানার প্রত্যর্পণ ভারতের আতঙ্কবাদ বিরোধী প্রচেষ্টার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে প্রমাণিত হবে।
২৬/১১ হামলার ষড়যন্ত্র
২৬ নভেম্বর ২০০৮ তারিখে ১০ জন পাকিস্তানি আতঙ্কবাদী মুম্বইতে হামলা চালিয়ে দেশের অর্থনৈতিক রাজধানীকে বিপর্যস্ত করেছিল। এই হামলায় তাজ হোটেল, ওবেরয় হোটেল, নরিমান হাউস এবং ছত্রপতি শিবাজি মহারাজ টার্মিনাসের মতো প্রধান স্থানগুলিকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছিল। হামলায় মোট ১৬৬ জনের মৃত্যু হয়েছিল, আর কয়েক শত মানুষ আহত হয়েছিল।