আহমেদাবাদ থেকে লন্ডনগামী এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান দুর্ঘটনায় রাজস্থানের যুবতীর মর্মান্তিক মৃত্যু

আহমেদাবাদ থেকে লন্ডনগামী এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান দুর্ঘটনায় রাজস্থানের যুবতীর মর্মান্তিক মৃত্যু
সর্বশেষ আপডেট: 13-06-2025

গুজরাতের আহমেদাবাদ থেকে লন্ডন যাওয়ার পথে একটি ভয়াবহ দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে এয়ার ইন্ডিয়ার একটি যাত্রীবাহী বিমান। এই ভয়ঙ্কর বিমান দুর্ঘটনায় ক্রু সদস্যসহ মোট ২৪২ জন যাত্রী ছিলেন, যাদের মধ্যে রাজস্থানের ১২ জন নাগরিকও ছিলেন।

আহমেদাবাদ এয়ার ইন্ডিয়া বিমান দুর্ঘটনা: আহমেদাবাদে সংঘটিত এই হৃদয়বিদারক বিমান দুর্ঘটনা শুধুমাত্র দেশকেই নয়, একই সাথে অনেক পরিবারের সুখের জীবনকেও এক মুহূর্তে ধ্বংস করে দিয়েছে। দুর্ঘটনায় প্রাণ হারানোদের মধ্যে রয়েছেন খুশবু রাজপুরোহিত, যিনি রাজস্থানের জোধপুর জেলার আরবা গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। এটি ছিল তার জীবনের প্রথম আন্তর্জাতিক ফ্লাইট, যা তাকে লন্ডনে তার চিকিৎসক স্বামীর কাছে নিয়ে যাচ্ছিল। কিন্তু ভাগ্যে অন্য কিছুই লেখা ছিল, এই যাত্রাই হয়ে উঠল তার জীবনের শেষ ফ্লাইট।

পাঁচ মাস আগে হয়েছিল খুশবুর বিয়ে

খুশবু রাজপুরোহিতের বিয়ে মাত্র পাঁচ মাস আগে লন্ডনে কর্মরত একজন চিকিৎসকের সাথে হয়েছিল। বিয়ের পর তারা ঠিক করেছিল খুশবু ভারতে তার ভিসা ও পাসপোর্ট সংক্রান্ত আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করার পর লন্ডনে গিয়ে স্বামীর সাথে জীবনের নতুন সূচনা করবে। গত সপ্তাহে তার পাসপোর্ট এসেছিল, এবং যখনই সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন হল, তিনি এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইটে লন্ডন যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।

শেষ বিদায়ের সেই আবেগঘন দৃশ্য

যাত্রার আগে যখন খুশবু তার বাপের বাড়ি থেকে বিদায় নিচ্ছিলেন, তখন সবার চোখে জল ছিল, কিন্তু কেউই ভাবতে পারেনি এটি এক কন্যার শেষ বিদায় হয়ে যাবে। বাড়ির আঙিনায় তার মা-বাবা এবং ভাই-বোনের সাথে জড়িয়ে কাঁদতে থাকা খুশবুর ভিডিও এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে, যা দেখে সবার চোখে জল আসে।

এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইট নম্বর AI-141, যা আহমেদাবাদ থেকে লন্ডনের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছিল, টেক অফ করার কিছুক্ষণ পরেই যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে দুর্ঘটনার শিকার হয়। এই ফ্লাইটে মোট ২৪২ জন যাত্রী ছিলেন, যাদের মধ্যে ১২ জন রাজস্থান থেকে। দুর্ঘটনার খবর যখন মিডিয়ায় আসে, তখন রাজপুরোহিত পরিবারের শ্বাস থেমে যায়।

প্রথমে খবর আসে যে দুর্ঘটনাটি ছিল হালকা এবং কারোর গুরুতর আঘাত হয়নি। এই আশায় খুশবুর দেবর শক্তি সিং রাজপুরোহিত এবং পরিজনরা নিয়মিত যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু যখন এয়ার ইন্ডিয়া এবং গুজরাট প্রশাসন থেকে নিশ্চিত হয় যে খুশবুর নাম মৃতদের তালিকায় আছে, তখন পুরো পরিবারের উপর দুঃখের পাহাড় ভেঙে পড়ে।

পরিজনরা আহমেদাবাদে পৌঁছেছেন

খুশবুর মৃত্যুর খবর পেয়ে তার মা-বাবা, ভাই এবং অন্যান্য আত্মীয়স্বজন আহমেদাবাদে পৌঁছে গেছেন। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ মৃতদের শনাক্তকরণের জন্য পরিজনদের ডেকে পাঠিয়েছে। অন্যদিকে, আরবা গ্রামে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। প্রতিটি ঘর থেকে কান্নার আওয়াজ শোনা যাচ্ছে, এবং প্রত্যেকেই বলছে, এত সুন্দরী এবং নির্দোষ মেয়ের কী দোষ ছিল?

খুশবুর শ্বশুরবাড়ি জোধপুরের খারাবেড়া গ্রামেও শোকের ম্লানতা ছড়িয়ে পড়েছে। সেখানেও লোকজন এখনও এই দুর্ঘটনায় বিশ্বাস করতে পারছে না। বৌদির বিদেশ যাওয়ার প্রস্তুতি সম্পূর্ণ হয়ে গিয়েছিল, এবং বাড়িতে উৎসাহের পরিবেশ ছিল। এখন সেই বাড়ি শোকাহত হয়ে উঠেছে।

Leave a comment