শাহরুখ খানের ‘মনত’ বাংলো সংস্কার: বিএমসি ও বন বিভাগের তদন্ত

শাহরুখ খানের ‘মনত’ বাংলো সংস্কার: বিএমসি ও বন বিভাগের তদন্ত
সর্বশেষ আপডেট: 21-06-2025

শাহরুখ খানের বাংলো ‘মনত’র সংস্কার নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। বিএমসি এবং বন বিভাগ তদন্ত শুরু করেছে, অভিযোগ অনুযায়ী, নিয়ম লঙ্ঘন হয়েছে। খান পরিবারের দাবি, সব কিছুই আইনসম্মতভাবে হচ্ছে।

শাহরুখ খান: বলিউডের সুপারস্টার শাহরুখ খানের আড়ম্বরপূর্ণ বাংলো ‘মনত’-এর উপর এখন মুশকিলের মেঘ জমে আছে। একদিকে বাংলোর সংস্কারের কাজ জোরেশোরে চলছে, অন্যদিকে বিএমসি এবং বন বিভাগের একটি দল সম্প্রতি ‘মনত’ পরিদর্শন করেছে। কারণ – একটি অভিযোগ, যেখানে দাবি করা হয়েছে যে বাংলোতে CRZ (তীরবর্তী নিয়ন্ত্রণ অঞ্চল) নিয়ম লঙ্ঘন করা হচ্ছে। শাহরুখ খানের ভক্তদের জন্য এই খবর কিছুটা বিস্ময়কর, কারণ ‘মনত’ সবসময়ই আলোচনায় ছিল, কিন্তু এবার বিষয়টি আইনি তদন্ত পর্যন্ত পৌঁছেছে।

কী বিতর্কের মূল?

২০ জুন ২০২৫ তারিখে বিএমসি (বৃহন্মুম্বই মহানগরপালিকা) এবং বন বিভাগের যৌথ একটি দল ‘মনত’-এ পৌঁছায়। কর্মকর্তারা খবর পেয়েছিলেন যে ‘মনত’-এ চলমান মেরামত কাজ কোস্টাল রেগুলেশন জোন নিয়মের আওতায় পড়ে এবং সম্ভবত বৈধ অনুমতি ছাড়াই হচ্ছে।

একজন বন কর্মকর্তা নিশ্চিত করেছেন, ‘আমরা একটি অজ্ঞাত সূত্র থেকে অভিযোগ পেয়েছি যে সংস্কার নিয়মের বিরুদ্ধে হচ্ছে। আমরা পরিদর্শন করেছি এবং রিপোর্ট তৈরি করা হচ্ছে।’

বিএমসির এইচ-ওয়েস্ট ওয়ার্ডের বিল্ডিং এবং ফ্যাক্টরি বিভাগ এবং বিল্ডিং প্রপোজাল বিভাগের কর্মকর্তারাও তদন্তে যুক্ত ছিলেন। ঘটনাস্থলে কাজ করা শ্রমিক এবং প্রকৌশলীদের সাথেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল।

শাহরুখের পক্ষ: ‘সবকিছু নিয়ম অনুযায়ী’

যখন মিডিয়া এই পুরো বিষয় নিয়ে শাহরুখ খানের ম্যানেজারের সাথে কথা বলেছিল, তিনি স্পষ্ট করে বলেছিলেন, ‘কোনও অনিয়ম নেই। সকল কাজ নির্ধারিত অনুমতি এবং নিয়ম অনুযায়ী হচ্ছে। অভিযোগ ভিত্তিহীন।’

তিনি আরও বলেছেন যে বাংলোর মেরামতের জন্য প্রয়োজনীয় সকল ক্লিয়ারেন্স আগেই নেওয়া হয়েছে এবং এটি মাত্র একটি রুটিন চেকিং যা মিডিয়া বড় করে তুলে ধরেছে।

প্রাক্তন আইপিএস কর্মকর্তার সনসনীধর্মী দাবি

এই ঘটনা আরও তীব্রতা পেয়েছে যখন প্রাক্তন আইপিএস কর্মকর্তা ওয়াই. পি. সিংহ, যিনি এখন আইনজীবী, এই বিষয়ে বড়সড়ো তথ্য প্রকাশ করেছেন। তিনি অভিযোগ করেছেন যে:

  • মনত, আগে একটি ঐতিহ্যবাহী সম্পত্তি ছিল, যাকে আগে ‘ভিলা ভিয়েনা’ বলা হতো।
  • ২০০৫ সালে এই বাংলোর পিছনে সাততলা বিল্ডিং তৈরি করা হয়েছিল, যখন সেই সময় अर्बन लैंड सीलिंग एक्ट কার্যকর ছিল, যা এই নির্মাণকে অবৈধ বলে ঘোষণা করে।
  • সিংহের দাবি, শাহরুখ এবং গৌরী বিএমসি থেকে ১২ টি ছোট ফ্ল্যাটের অনুমতি নিয়েছিলেন, যা সাধারণ নাগরিকদের জন্য দেখানো হয়েছিল।
  • পরে এই সকল ফ্ল্যাট মিলে একটি বিশাল ব্যক্তিগত প্রাসাদ রূপী আবাস তৈরি করা হয়েছে।

এই অভিযোগ শুধুমাত্র শাহরুখের ছবির উপর প্রশ্ন তুলে ধরে নয়, বিএমসির অনুমতি ব্যবস্থার উপরও সন্দেহ তৈরি করেছে।

সংস্কারের ভাব এবং পরিবারের অস্থায়ী স্থানান্তর

গৌরী খান এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন যে মনতের সংস্কার প্রকল্প অত্যন্ত বিস্তৃত এবং বিস্তারিত। এতে এক বছরেরও বেশি সময় লাগতে পারে।
বাংলোতে কাজ চলার কারণে শাহরুখ খানের পরিবার বর্তমানে পালি হিলের একটি ভাড়া করা আড়ম্বরপূর্ণ ডুপ্লেক্স অ্যাপার্টমেন্টে থাকছে, যা চলচ্চিত্র প্রযোজক ওয়াশু ভগনানীর সম্পত্তি ‘পূজা কাসা’তে অবস্থিত। এখানকার ভাড়া বলা হচ্ছে প্রতি মাসে ২৪ লক্ষ টাকা।

বিএমসি কি ব্যবস্থা নেবে?

এখন সবার নজর এই বিষয়টিতে যে বিএমসি এবং বন বিভাগের রিপোর্টে কী সিদ্ধান্ত বেরিয়ে আসবে। যদি সংস্কার কাজে নিয়ম লঙ্ঘন পাওয়া যায়, তাহলে শাহরুখকে জরিমানা, নোটিশ বা নির্মাণ বন্ধ করার মতো ব্যবস্থার সম্মুখীন হতে হতে পারে।

যদিও এখন পর্যন্ত কোনও আনুষ্ঠানিক নোটিশ জারি করা হয়নি এবং খান পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে যে তারা সকল আইনগত পদ্ধতি অনুসরণ করছে।

Leave a comment