চিত্রাঙ্গদা সিংহ: কসমেটিক সার্জারি ও ট্রোলিংয়ের বিরুদ্ধে স্পষ্টবাদী মন্তব্য

চিত্রাঙ্গদা সিংহ: কসমেটিক সার্জারি ও ট্রোলিংয়ের বিরুদ্ধে স্পষ্টবাদী মন্তব্য
সর্বশেষ আপডেট: 17-06-2025

বলিউড অভিনেত্রী চিত্রাঙ্গদা সিংহ যদিও এখন কম ছবিতে দেখা যায়, কিন্তু তাঁর স্পষ্টবাদী ও আত্মবিশ্বাসী ভাবমূর্তি সবসময়ই আলোচনায় থাকে। তিনি সেইসব নির্বাচিত অভিনেত্রীদের মধ্যে একজন যাঁরা নিজের মতামত স্পষ্ট ও খোলামেলাভাবে প্রকাশ করতে পিছপা হন না।

চিত্রাঙ্গদা সিংহ: বলিউডের সুন্দরী অভিনেত্রী চিত্রাঙ্গদা সিংহ সম্প্রতি একটি অত্যন্ত সংবেদনশীল ও সমসাময়িক বিষয় নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করেছেন। একদিকে ‘হাউসফুল 5’ ছবি নিয়ে তিনি আলোচনায় রয়েছেন, অন্যদিকে তিনি কসমেটিক সার্জারি নিয়ে সমাজে প্রচলিত দ্বৈত মানসিকতা ও ট্রোলিংয়ের প্রবণতা নিয়ে তীব্র সমালোচনা করেছেন।

তাঁর এই স্পষ্টবাদী মতামত কেবলমাত্র ট্রোলারদেরকেই নয়, শিল্পে চলমান ‘লুকস শেমিং’-এর মতো মানসিকতায়ও গভীর আঘাত হানে। আসুন, বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক অভিনেত্রী এই বিষয়ে কী বলেছেন।

‘প্রত্যেক মানুষের নিজের শরীরের উপর অধিকার আছে’ - চিত্রাঙ্গদার স্পষ্টবাদিতা

চিত্রাঙ্গদা সিংহ সম্প্রতি একটি সাক্ষাৎকারে বলেছেন, কেন মানুষ কসমেটিক সার্জারি নিয়ে এতটা নিন্দুক হয়ে ওঠে? যদি কেউ নিজের চেহারা আরও ভালো করতে চায়, তাতে কী ভুল আছে? তিনি আরও বলেছেন যে সার্জারি একটি ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত, যা কোনও বহিরাগত ব্যক্তির দ্বারা প্রশ্নবিদ্ধ করা উচিত নয় এবং এর জনসম্মুখে সমালোচনা করা উচিত নয়।

তিনি স্পষ্ট করে বলেছেন যে অভিনেতাও মানুষ, এবং যদি কোনও মানুষ তার বাহ্যিক সৌন্দর্য নিয়ে স্বচ্ছন্দ না থাকে, তাহলে সে পরিবর্তনের বিকল্প বেছে নিতে পারে। এতে অন্য কারও কী সমস্যা হওয়ার কথা?

ট্রোলিং থেকে অবাঞ্ছিত চাপ সৃষ্টি হয়

চিত্রাঙ্গদার মতে, সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রোলাররা অভিনেত্রীদের তাদের চেহারা নিয়ে ক্রমাগত লক্ষ্য করে – চাই বয়স বাড়া, ত্বকের রঙ, অথবা প্লাস্টিক সার্জারি। তিনি এই মনোভাবের নিন্দা করে বলেছেন, ট্রোলিং থেকে মানসিক চাপ বৃদ্ধি পায়। এর ফলে আত্মবিশ্বাস কমে যায় এবং অনেক সময় মানুষ নিজেকে সন্দেহের চোখে দেখতে শুরু করে। এটি একটি বিপজ্জনক অবস্থা।

তাঁর মতে, ভারতে সোশ্যাল মিডিয়ায় সেলিব্রিটিদের মানুষ নয়, বরং লক্ষ্যবস্তু হিসেবে দেখা হয়। মানুষ ভুলে যায় যে প্রত্যেক তারকার পিছনে একটি সংবেদনশীল, ব্যক্তিগত ব্যক্তি আছে যার নিজস্ব অনুভূতি আছে।

‘অভিনয় দেখুন, চেহারা নয়’ – কাজের উপর ফোকাস

চিত্রাঙ্গদা তাঁর কথা আরও স্পষ্ট করে বলেছেন, আমি চাই মানুষ আমাদের চেহারার বদলে আমাদের শিল্পের দিকে মনোযোগ দিক। আমরা যা পারফর্ম করি, যা গল্প দর্শকদের কাছে পৌঁছাই – সেটাই সত্যিকারের জিনিস। সার্জারি বা মেকওভার তার চেয়ে বড় হতে পারে না। তিনি আরও বলেছেন যে দর্শকদের মনোযোগ গল্প, চিত্রনাট্য ও অভিনয় দক্ষতার উপর থাকা উচিত, কারও ফেসলিফ্ট বা বোটক্সের উপর নয়।

চিত্রাঙ্গদা এই বিষয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক তুলনা করেছেন। তিনি বলেছেন যে হলিউডে কসমেটিক সার্জারিকে অত্যন্ত সাধারণভাবে দেখা হয়। সেখানে মানুষ এটাকে ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত হিসেবে মনে করে। তিনি বলেছেন, আমাদের এখানে মানুষ এটাকে বড় বিষয় করে তোলে, যেন কেউ কোনও অপরাধ করেছে। যখন পৃথিবীতে সার্জারিকে আধুনিক প্রযুক্তি ও আত্ম-উন্নয়নের অংশ হিসেবে গণ্য করা হচ্ছে, তখন ভারতে এটি আজও আলোচনা-সমালোচনার বিষয় হয়ে রয়েছে।

Leave a comment