সালমান খানের জন্মদিন ২৭শে ডিসেম্বর পালিত হয়। তিনি ১৯৬৫ সালের ২৭শে ডিসেম্বর মহারাষ্ট্রের পানভেলে জন্মগ্রহণ করেন। সালমান খান ভারতীয় সিনেমার অন্যতম উজ্জ্বল তারকা হিসেবে বিবেচিত। ১৯৬৫ সালের ২৭শে ডিসেম্বর জন্ম নেওয়া সালমান শুধুমাত্র একজন অভিনেতা নন, তিনি একজন চলচ্চিত্র প্রযোজক এবং টেলিভিশন উপস্থাপকও। তিন দশকের বেশি দীর্ঘ কর্মজীবনে তিনি ভারতীয় সিনেমাকে অনেক হিট ছবি উপহার দিয়েছেন এবং অসাধারণ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন।
প্রাথমিক জীবন ও শিক্ষা
সালমান খানের জন্ম মধ্যপ্রদেশের ইন্দোরে। তাঁর বাবা, সেলিম খান, ভারতীয় চলচ্চিত্র শিল্পের একজন বিখ্যাত চিত্রনাট্যকার। সালমান মুম্বাইয়ের সেন্ট স্ট্যানিস্লস হাই স্কুল থেকে তাঁর প্রাথমিক শিক্ষা সম্পন্ন করেন এবং পরে গোয়ালিয়রের সিন্ধিয়া স্কুলেও পড়াশোনা করেন। তবে, কলেজের পড়াশোনা অসমাপ্ত রেখে তিনি অভিনয়ের জগতে প্রবেশ করেন।
চলচ্চিত্র কর্মজীবনের শুরু
সালমান ১৯৮৮ সালে ‘বিবি হো তো এসি’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে তাঁর অভিনয় জীবন শুরু করেন। তবে ১৯৮৯ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘ম্যায়নে পেয়ার কিয়া’ তাঁকে তারকা খ্যাতি এনে দেয়। এই চলচ্চিত্রের জন্য তিনি সেরা নবাগত অভিনেতা হিসেবে ফিল্মফেয়ার পুরস্কারও পান।
সুপারহিট চলচ্চিত্রের ধারা
• সালমান খানের চলচ্চিত্রের গ্রাফ কখনও স্থির থাকেনি।
• ১৯৯০-এর দশকে ‘হাম আপকে হ্যায় কৌন…!’, ‘করণ অর্জুন’ এবং ‘বিবি নাম্বার ১’ এর মতো চলচ্চিত্রগুলি তাঁকে ঘরে ঘরে জনপ্রিয় করে তোলে।
• ২০০০-এর দশকে ‘তেরে নাম’, ‘নো এন্ট্রি’ এবং ‘ওয়ান্টেড’-এর মতো চলচ্চিত্রের মাধ্যমে তিনি নিজের নতুন পরিচয় তৈরি করেন।
• ২০১০-এর পর ‘দাবাং’, ‘বজরঙ্গী ভাইজান’ এবং ‘সুলতান’-এর মতো সিনেমা তাঁর সুপারস্টার ইমেজকে আরও শক্তিশালী করে।
বিতর্ক এবং আইনি জটিলতা
• সালমানের ব্যক্তিগত জীবন সবসময়ই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে থেকেছে।
• হিট অ্যান্ড রান কেস (২০১৫): তাঁকে অনিচ্ছাকৃত হত্যার জন্য দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল, কিন্তু পরে প্রমাণের অভাবে খালাস দেওয়া হয়।
• কালো হরিণ শিকার মামলা (২০১৮): এই মামলায় তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করা হয় এবং ৫ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়, তবে বর্তমানে তিনি জামিনে মুক্ত আছেন।
টেলিভিশন কেরিয়ার
২০০৮ সালে সালমান ‘১০ কা দম’ নামক একটি শো-এর মাধ্যমে টেলিভিশনে আত্মপ্রকাশ করেন। ২০১০ সাল থেকে তিনি ‘বিগ বস’ রিয়েলিটি শো-এর সঞ্চালনা করছেন, যা তাঁর জনপ্রিয়তা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
সামাজিক কাজ
সালমান ‘বিইং হিউম্যান ফাউন্ডেশন’-এর মাধ্যমে দরিদ্র ও অভাবী মানুষদের সাহায্য করেন। এই ফাউন্ডেশন শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবার ক্ষেত্রে কাজ করে।
পুরস্কার এবং সম্মান
• দুটি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার
• দুটি ফিল্মফেয়ার পুরস্কার
• ফোর্বসের "বিশ্বের সর্বাধিক উপার্জনকারী সেলিব্রিটি" তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হওয়া।
সালমান খান শুধু একজন অভিনেতা নন, তিনি একটি ব্র্যান্ড। তাঁর গল্প সংগ্রাম, সাফল্য, বিতর্ক এবং সমাজসেবার এক অসাধারণ মিশ্রণ। তিনি ভারতীয় সিনেমার সেই নির্বাচিত শিল্পীদের মধ্যে একজন, যিনি সব শ্রেণির দর্শকদের প্রভাবিত করেছেন। সালমান খানের যাত্রা অনুপ্রেরণাদায়ক এবং তাঁর ভক্তদের জন্য সর্বদা বিশেষ থাকবে।