উজ্জয়িনীর কন্যা নব্য ত্রিবেদী NDA-তে নির্বাচিত

উজ্জয়িনীর কন্যা নব্য ত্রিবেদী NDA-তে নির্বাচিত
সর্বশেষ আপডেট: 11-06-2025

মধ্যপ্রদেশের ঐতিহাসিক ও আধ্যাত্মিক নগরী উজ্জয়িনী এবার দেশের রক্ষা বাহিনীর ইতিহাসেও নিজের নাম লিখে দিচ্ছে। এখানকার মেধাবী কন্যা নব্য ত্রিবেদী ন্যাশনাল ডিফেন্স একাডেমি (NDA) -তে নির্বাচিত হয়ে নতুন ইতিহাস রচনা করেছেন।

উজ্জয়িনী: মধ্যপ্রদেশের ধর্মীয় ও ঐতিহাসিক নগরী উজ্জয়িনী আবারও গর্বিত। এখানকার কন্যা নব্য ত্রিবেদী ন্যাশনাল ডিফেন্স একাডেমি (NDA) -তে নির্বাচিত হয়ে নতুন ইতিহাস রচনা করেছেন। তিনি কেবল উজ্জয়িনী থেকেই নয়, সমগ্র মধ্যপ্রদেশ থেকেই প্রথম নারী যিনি NDA-র মাধ্যমে বিমান বাহিনীতে ফ্লাইং অফিসার হিসেবে যোগদান করবেন।

এই সাফল্যের সাথে সাথে নব্য হাজারো মেয়েদের জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে উঠেছেন। তার স্বপ্ন, দেশের সেবা করবেন ঠিক সেই উৎসাহ ও উদ্দীপনার সাথে যেমন করেছিলেন কর্নেল সোফিয়া কুরেশী, যাঁর কাছে তিনি অনুপ্রাণিত।

শিক্ষা ও প্রস্তুতির গল্প

নব্যের প্রাথমিক শিক্ষা উজ্জয়িনীর একটি সাধারণ স্কুলে হয়েছে। তিনি শুরু থেকেই মেধাবী ছাত্রী ছিলেন, কিন্তু তার স্বপ্নগুলোকে পখের পালক পেয়েছিল যখন তিনি দশম শ্রেণীর পরেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন যে তিনি বিমান বাহিনীতে যোগদান করবেন। এর জন্য তিনি দ্বাদশ শ্রেণীর পর NDA-র পরীক্ষার প্রস্তুতি শুরু করেন। তিনি বলেছেন, “আমার কাছে এটি কেবল একটি চাকরি নয়, বরং দেশের প্রতি আমার কর্তব্য।”

যখনই তিনি ইউনিফর্ম পরা নারী অফিসারদের দেখতেন, তখন নিজেকে সেখানে কল্পনা করতেন। তার পিতা রাজেশ ত্রিবেদী একটা ব্যাংকে কর্মরত এবং মা গৃহিণী। পরিবার শুরু থেকেই নব্যকে উৎসাহিত করেছে এবং কন্যার সিদ্ধান্তের উপর পুরোপুরি আস্থা রেখেছে।

রোল মডেল হয়ে উঠলেন নব্য

NDA পরীক্ষা পুরুষদের জন্য আগে থেকেই হয়ে আসছিল, কিন্তু নারীদের জন্য এই সুযোগ কয়েক বছর আগেই শুরু হয়েছে। প্রতিযোগিতা অনেক বেশি কারণ নারীদের জন্য আসন সীমিত। নব্য কেবল লিখিত পরীক্ষা পাস করেনি, বরং SSB ইন্টারভিউ এবং মেডিকেল টেস্টও চমৎকারভাবে উত্তীর্ণ হয়েছে। তার নির্বাচন হয়েছে বিমান বাহিনীর উইং-এর জন্য, যেখানে প্রশিক্ষণ শেষ করার পর তিনি ফ্লাইং অফিসার হিসেবে যোগদান করবেন।

নব্য জানান, কর্নেল সোফিয়া কুরেশীর জীবনী তাকে গভীরভাবে অনুপ্রাণিত করেছে। সোফিয়া প্রথম নারী অফিসার যিনি UN মিশনের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। নব্য বলেন, “আমি চাই দেশের সেবায় আমার নামও একইভাবে নেওয়া হোক – সততা, সাহস এবং সমর্পণের সাথে।”

প্রশাসন ও শহরে আনন্দের ঢেউ

নব্যের এই সাফল্যে উজ্জয়িনী জেলার প্রশাসন থেকে শুরু করে স্কুল ও কোচিং প্রতিষ্ঠান গর্ব প্রকাশ করেছে। জেলা কালেক্টর নব্যকে বিশেষভাবে সম্মানিত করার ঘোষণা দিয়েছেন। শহরের যুবক-যুবতীদের, বিশেষ করে মেয়েদের মধ্যে নতুন এক উদ্দীপনা দেখা যাচ্ছে। কোচিং সেন্টারগুলিতেও NDA-র জন্য মেয়েদের জিজ্ঞাসা হঠাৎ বেড়েছে।

নব্যের মা নীলিমা বলেন, আমরা কখনো ভাবিনি যে আমাদের মেয়ে একদিন যুদ্ধবিমান চালাবে। কিন্তু সে প্রমাণ করে দিয়েছে যে, যদি ইচ্ছাশক্তি দৃঢ় হয়, তাহলে কোন স্বপ্ন অসম্পূর্ণ থাকে না। পিতা ভাবুক হয়ে বলেন, “মেয়েরা কারো থেকে কম নয় – আজ নব্য তা প্রমাণ করে দেখিয়েছে।”

Leave a comment