২০২৫ সালের মে মাসে ভারতে বিদেশি বিনিয়োগের ঊর্ধ্বগতি

নয়াদিল্লি: ২০২৫ সালের মে মাসে ভারতীয় শেয়ার বাজারে বিদেশী পোর্টফোলিও বিনিয়োগকারীরা (FIIs) ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। তথ্য অনুযায়ী, ১৬ মে পর্যন্ত তারা মোট ২৩,৭৭৮ কোটি টাকার শেয়ার কিনেছেন। এই বিনিয়োগকারীরা হলেন সেই একই ব্যক্তিরা যারা ২০২৫ সালের প্রথম ত্রৈমাসিকে বিপুল পরিমাণে শেয়ার বিক্রি করেছিলেন। এখন পরিবর্তিত বিশ্বব্যাপী পরিস্থিতি এবং ভারতীয় অর্থনীতির স্থিতিশীলতা তাদের আবার ভারতীয় বাজারের দিকে আকৃষ্ট করেছে।

এপ্রিলে ইঙ্গিত, মে মাসে তীব্র গতি

২০২৫ সালের এপ্রিল মাসেই এই প্রবণতা পরিবর্তনের ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছিল। যেখানে প্রথম ত্রৈমাসিকে FIIs মোট ১,১৬,৫৭৪ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করেছিল, সেখানে এপ্রিলে তারা ৪,২৪৩ কোটি টাকার কেনাকাটা করেছে। এই পরিবর্তন মে মাসে আরও তীব্র হয়েছে, যখন বাজারে আস্থা বেড়েছে এবং বিনিয়োগকারীরা আক্রমণাত্মকভাবে ফিরে এসেছেন।

বিনিয়োগে বৃদ্ধির কারণ

জেওজিত ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেসের প্রধান বিনিয়োগ কৌশলবিদ ডাঃ ভি.কে. বিজয়কুমার জানিয়েছেন যে, বিশ্বব্যাপী ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনার হ্রাস এবং অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বিনিয়োগকারীদের আস্থা পুনঃস্থাপন করেছে। তিনি বলেছেন, "আমেরিকা-চীন বাণিজ্য যুদ্ধে স্থবিরতা এবং ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে উত্তেজনা কমার ফলে বিশ্বব্যাপী বাণিজ্য পরিস্থিতি উন্নত হয়েছে, যার সরাসরি প্রভাব পড়েছে বিনিয়োগ ধারণায়।"

বিনিয়োগের পছন্দের কেন্দ্র হিসেবে ভারত

উন্নত অর্থনীতি যেমন আমেরিকা, চীন, জাপান এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন বর্তমানে অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন। এর বিপরীতে, ভারত নিয়ে বিনিয়োগকারীদের ধারণা ইতিবাচক রয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, ২০২৬ সালের অর্থবর্ষে ভারতের জিডিপি বৃদ্ধির হার ৬% এর বেশি থাকতে পারে। এছাড়াও দেশে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আছে এবং সুদের হারে সম্ভাব্য হ্রাসের ফলে বাজারে আরও তীব্রতা আসার আশা করা হচ্ছে।

বিনিয়োগকারীদের জন্য এই প্রবণতা কী বোঝায়?

FIIs-এর ফিরে আসা ভারতীয় ইকুইটি বাজারের জন্য একটি শক্তিশালী ইঙ্গিত। এটা দেখায় যে ভারত বিশ্বব্যাপী বিনিয়োগের জন্য একটি স্থিতিশীল এবং নির্ভরযোগ্য বিকল্প হিসেবে গড়ে উঠছে। দেশীয় এবং খুচরা বিনিয়োগকারীদের জন্যও এটি আস্থার ইঙ্গিত যে দীর্ঘমেয়াদে ভারতীয় বাজার আকর্ষণীয় রিটার্ন দেওয়ার ক্ষমতা রাখে।

২০২৫ সালের মে মাসে বিদেশী বিনিয়োগকারীদের রেকর্ড কেনাকাটা এই বিষয়টির প্রমাণ যে ভারত আবারও বিশ্বব্যাপী পুঁজির কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠছে। যদি আপনিও বিনিয়োগের পরিকল্পনা করছেন, তাহলে বাজারে প্রবেশের জন্য এটি সঠিক সময় হতে পারে, তবে বিনিয়োগ করার আগে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ অবশ্যই নিন।