देशের বৃহত্তম রিটেল কোম্পানি রিলায়েন্স রিটেল শেয়ার বাজার তালিকাভুক্তির দিকে দ্রুত পদক্ষেপ নিচ্ছে। তালিকাভুক্তির আগে কোম্পানি একটি কৌশলগত সিদ্ধান্ত নেবে, যার অধীনে রিলায়েন্স ব্র্যান্ডসকে রিলায়েন্স রিটেলের সাথে মার্জ করা হবে।
ভারতের বৃহত্তম রিটেল কোম্পানি রিলায়েন্স রিটেল এখন শেয়ার বাজারে প্রবেশ করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। কিন্তু তার আগে কোম্পানি একটি বড় এবং কৌশলগত পদক্ষেপ নিয়েছে। রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রির চেয়ারম্যান মুকেশ अंबानी রিলায়েন্স ব্র্যান্ডস লিমিটেডকে তার মূল রিটেল কোম্পানিতে মার্জ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এই পদক্ষেপটিকে বাজারের আগমনের আগে কোম্পানির অপারেশনকে শক্তিশালী এবং সংগঠিত করার দিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে মনে করা হচ্ছে।
রিল্যান্স ব্র্যান্ডস কী এবং কেন মার্জ হচ্ছে?
রিল্যান্স ব্র্যান্ডস লিমিটেড ২০০৭ সালে যাত্রা শুরু করে। এই কোম্পানি বার্বুriez, বটtega ভেনেটা, টাইফানি অ্যান্ড কো. এবং প্রেট এ ম্যানজের সাথে ৮৫টির বেশি আন্তর্জাতিক লক্সারি এবং লাইফস্টাইল ব্র্যান্ডের সাথে ভারতে অংশীদারিত্ব করেছে। এই ব্র্যান্ডগুলোর মাধ্যমে রিলায়েন্স ভারতের হাই-এন্ড ফ্যাশন এবং লক্সারি সেগমেন্টে তার শক্তিশালী উপস্থিতি তৈরি করেছে।
এখন এই ব্র্যান্ড ইউনিটকে রিলায়েন্স রিটেলের সাথে মার্জ করা হচ্ছে। এর উদ্দেশ্য হল কোম্পানির কাজকর্মের পুনরাবৃত্তি কমানো, উন্নত সমন্বয় সাধন করা এবং খরচ নিয়ন্ত্রণ করা। মার্জ করার পরে রিলায়েন্স ব্র্যান্ডস, রিলায়েন্স রিটেলের মধ্যে একটি বিভাগ হিসেবে কাজ করবে।
মার্জের প্রভাব কী হবে?
- ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা ও দক্ষতা: এই মার্জারের পরে সম্পত্তি, ব্যাকএন্ড অপারেশন, কর্মী নিয়োগ এবং লজিস্টিক সিস্টেমকে একত্রিত করা যাবে। এর মাধ্যমে কোম্পানি অপারেশন নিয়ন্ত্রণে আরও ভালো এবং খরচ কমাতে সাহায্য করবে।
- আইপিও-এর আগে ব্র্যান্ড ভ্যালুতে বৃদ্ধি: তালিকাভুক্তির আগে এই মার্জেন্স রিলায়েন্স রিটেলকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলতে পারে। সমন্বিত ব্র্যান্ড পোর্টফোলিও বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়াতে সাহায্য করবে।
- দীর্ঘমেয়াদী কৌশল্যের জন্য শক্তিশালী ভিত্তি: লক্সারি এবং লাইফস্টাইল সেগমেন্টকে একত্রিত করা ভবিষ্যৎ বিনিয়োগের অংশ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে, যা রিলায়েন্স রিটেলকে বিশ্বব্যাপী প্রতিযোগিতায় আরও শক্তিশালী করে তুলবে।
রিলায়েন্সের তালিকাভুক্তির পরিকল্পনা এবং ক্রমবর্ধমান শক্তি
রিলায়েন্স রিটেলের তালিকাভুক্তির ভারতীয় শেয়ার বাজারে একটি বড় ঘটনা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। FY25-এ কোম্পানির মোট আয় ৮% বেড়ে ২.৯১ লক্ষ কোটি টাকা হয়েছে, যেখানে মুনাফা ১২% বেড়ে ১২,৩৯২ কোটি টাকা হয়েছে। যদিও কোম্পানি ২,১৫৫টি স্টোর বন্ধ করেছে, তবে এই সিদ্ধান্ত খরচ নিয়ন্ত্রণ এবং লাভ বাড়ানোর উদ্দেশ্যে নেওয়া হয়েছে।
রিল্যান্স ব্র্যান্ডসের বিক্রয় এবং কর্মক্ষমতা
রিল্যান্স ব্র্যান্ডসের বিক্রয়ও ১২% বেড়ে ২,৬৮৪ কোটি টাকা হয়েছে। যদিও FY24-এ কোম্পানি घाটা বেড়েছে, তবে এর মধ্যে সমস্ত জয়েন্ট ভেঞ্চার এবং সহযোগী কোম্পানির আর্থিক তথ্য অন্তর্ভুক্ত নয়। রিলায়েন্স রিটেল ভেন্যুর অনেক ব্র্যান্ড বিভিন্ন কাঠামোতে কাজ করে এবং জনস্বীকৃত নয়।
তালিকাভুক্তির পরে কোম্পানির কৌশল পরিবর্তন হবে কি?
বিশেষজ্ঞদের মতে, রিলায়েন্সকে রিটেল ব্যবসাকে বিভিন্ন ইউনিটে বিভক্ত করা উচিত, যাতে প্রতিটি ইউনিট তার নিজস্ব কৌশল এবং লজিস্টিক অনুযায়ী ভালোভাবে কাজ করতে পারে।
শপপার্স স্টপের প্রাক্তন সিইও গোবিন্দ শ্রীখণ্ডে বলেন: রিলায়েন্স রিটেল যদি দীর্ঘমেয়াদী লক্ষ্য অর্জন করতে চায়, তাহলে এটিকে লক্সারি, গ্রোসারি এবং ফ্যাশন সেগমেন্টে বিভক্ত করা উচিত। তিনটি ক্ষেত্রের প্রয়োজনীয়তা এবং গ্রাহক আচরণ একে অপরের থেকে অনেক আলাদা।
মুকেশ অমbanীর দৃষ্টিভঙ্গি
মুকেশ অমbanীর কৌশল এখন শুধু পেট্রোলিয়াম এবং টেলিকম পর্যন্ত সীমাবদ্ধ নয়, বরং রিটেল সেক্টরে তার সক্রিয়তা এবং সম্প্রসারণের পরিকল্পনা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। ভারতের ক্রমবর্ধমান ভোগ এবং নগরায়নের কথা মাথায় রেখে রিলায়েন্স রিটেল তার নেটওয়ার্কের বিস্তার করছে। তালিকাভুক্তির আগে এই মার্জেন্স শুধু कारोবারি দক্ষতা বাড়াবে না, বরং কোম্পানির ভ্যালুয়েশনকেও ইতিবাচকভাবে প্রভাবিত করবে।