নয়াদিল্লি। বৃহস্পতিবার ভারতীয় শেয়ার বাজারে তীব্র ধসের সাক্ষী হওয়া গেছে। সেনসেক্স ও নিফটি উভয় প্রধান সূচকই লাল চিহ্নে বন্ধ হয়েছে। এই ধসে বিনিয়োগকারীদের প্রায় ৩ লক্ষ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।
ধসের কারণগুলি কী ছিল?
শেয়ার বাজারে এই তীব্র ধসের পিছনে অনেক আন্তর্জাতিক ও দেশীয় কারণ রয়েছে।
১. আমেরিকার বন্ড ইল্ডে বৃদ্ধি
আমেরিকায় বন্ড ইল্ড বৃদ্ধি পাওয়ায় বিশ্বব্যাপী বিনিয়োগকারীদের মধ্যে সুদের হার বৃদ্ধির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। যদি সুদের হার বৃদ্ধি পায়, তাহলে কোম্পানিগুলির জন্য ঋণ গ্রহণ করা ব্যয়বহুল হয়ে উঠবে, যার ফলে বিনিয়োগ ও উন্নয়নে প্রভাব পড়বে। এই আশঙ্কাই বাজারে বিক্রয়ের একটি বড় কারণ হয়ে উঠেছে।
২. আমেরিকার অর্থনীতি নিয়ে উদ্বেগ
গ্লোবাল রেটিং এজেন্সি মুডি'স আমেরিকার ক্রেডিট রেটিং কমিয়ে দিয়েছে, যার ফলে আমেরিকার অর্থনীতি নিয়ে অনিশ্চয়তা বেড়েছে। এছাড়াও, প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবিত ট্যাক্স নীতিও উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠেছে। কংগ্রেশনাল বাজেট অফিস (CBO)-এর মতে, এই নীতিগুলির ফলে আমেরিকার জাতীয় ঋণ ৩.৮ ট্রিলিয়ন ডলার পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে।
৩. বিশ্বব্যাপী উত্তেজনা এবং করোনার আশঙ্কা
ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধি এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলি, বিশেষ করে সিঙ্গাপুর ও হংকং-এ করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধিও বাজারে ধসের কারণ হয়েছে। এর সাথে ভারতীয় কোম্পানিগুলির চতুর্থ ত্রৈমাসিকের দুর্বল আয় রিপোর্টও বিনিয়োগকারীদের হতাশ করেছে।
কতটা ধস হয়েছে?
বৃহস্পতিবার সেনসেক্স ১০০৫ পয়েন্ট ধসে ৮০,৫৯১.৬৮ পয়েন্টে বন্ধ হয়েছে, অন্যদিকে নিফটি ২৭৫ পয়েন্ট তলিয়ে গিয়ে ২৪,৫৩৭ পয়েন্টে এসেছে। বিএসইতে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলির মার্কেট ক্যাপ ৪৪১.০৯ লক্ষ কোটি টাকা থেকে কমে ৪৩৮ লক্ষ কোটি টাকা হয়েছে। এই ধসে বিনিয়োগকারীদের সম্পত্তিতে প্রায় ৩ লক্ষ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।
কোন কোন শেয়ার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে?
সেনসেক্সে M&M, পাওয়ারগ্রিড, এনটিপিসি, আইটিসি, নেসলে ইন্ডিয়া, টাটা মোটরস, টেক মহিন্দ্র, রিলায়েন্স ও টিসিএস-এর মতো বৃহৎ শেয়ারগুলিতে সর্বাধিক ধস দেখা গেছে। এদের মধ্যে ২.৮৪% পর্যন্ত ধস দেখা গেছে। অন্যদিকে, ভারতী এয়ারটেল এবং ইন্ডাসইন্ড ব্যাংকের শেয়ার সামান্য বৃদ্ধি নিয়ে বন্ধ হয়েছে।