Vodafone Idea Share: মিডিয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, সরকার Vodafone Idea-র ₹84,000 কোটি টাকার বকেয়া AGR (অ্যাডজাস্টেড গ্রস রেভিনিউ) পরিশোধের ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়ার সম্ভাবনা বিবেচনা করছে।
Vodafone Idea-র শেয়ার গত কয়েক দিন ধরে ক্রমাগত আলোচনায় রয়েছে। একদিকে, কোম্পানির বিশাল AGR বকেয়া নিয়ে সরকারি ছাড়ের জল্পনা চলছে, অন্যদিকে, নতুন স্যাটেলাইট কানেক্টিভিটি চুক্তি বাজারে উৎসাহ জুগিয়েছে। ফলস্বরূপ, শেয়ারে মাত্র পাঁচ ট্রেডিং সেশনে প্রায় 15 শতাংশের বৃদ্ধি দেখা গেছে।
শুক্রবার BSE-তে শেয়ার ২ শতাংশের বেশি বেড়ে ₹7.53-এর ইন্ট্রাডে হাই-এ পৌঁছে যায়। এই বৃদ্ধি সেই সময় আসে যখন গত সপ্তাহ থেকে শেয়ারটি ক্রমাগত ঊর্ধ্বমুখী ছিল। 19 জুন থেকে, বিশেষ করে স্বল্প মেয়াদে বিনিয়োগকারীদের ভালো রিটার্ন মিলেছে, যারা শর্ট টার্ম মুভমেন্টের দিকে নজর রাখছেন।
AGR বকেয়াতে ছাড়ের আলোচনা পরিবেশ পরিবর্তন করেছে
Vodafone Idea-র বর্তমানে প্রায় ₹84,000 কোটি টাকার Adjusted Gross Revenue বা AGR বকেয়া রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে এই বিষয়টি কোম্পানির ব্যালেন্স শীটে বিশাল বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। খবর আসছে যে সরকার এই বকেয়া পুনর্গঠন করার কথা বিবেচনা করছে।
খবর অনুযায়ী, সরকার কোম্পানিকে এই পরিমাণ অর্থ পরিশোধের জন্য ৬ বছরের পরিবর্তে ২০ বছর পর্যন্ত সময় দেওয়ার কথা ভাবছে। যদি এমনটা হয়, তবে এটি Vodafone Idea-র জন্য বড় স্বস্তি হতে পারে।
যদিও, কোম্পানি 24 জুন স্টক এক্সচেঞ্জকে দেওয়া তথ্যে জানিয়েছে যে সরকারের কাছ থেকে তারা এ বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক খবর পায়নি। তবুও, বাজারে এই জল্পনা চলছে যে সরকার কিছু ছাড় দিতে পারে, এবং এই প্রত্যাশা বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়িয়েছে।
স্যাটেলাইট কানেক্টিভিটি চুক্তি থেকে ইতিবাচক সংকেত
AGR ছাড়ের পাশাপাশি কোম্পানির ব্যবসা সংক্রান্ত আরও একটি বড় খবর এসেছে, যা বিনিয়োগকারীদের উৎসাহিত করেছে। 18 জুন Vodafone Idea আমেরিকার স্যাটেলাইট প্রযুক্তি কোম্পানি AST SpaceMobile-এর সঙ্গে একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশীদারিত্বের ঘোষণা করেছে। এই অংশীদারিত্বের উদ্দেশ্য হল ভারতে Direct-to-Device বা D2D স্যাটেলাইট কানেক্টিভিটি শুরু করা।
এই প্রযুক্তির মাধ্যমে প্রত্যন্ত এবং দূরবর্তী এলাকাতেও মোবাইল সিগন্যাল সরবরাহ করা সম্ভব হবে, যেখানে এখনও মোবাইল টাওয়ার নেই। এই চুক্তি Vodafone Idea-র জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এর মাধ্যমে কোম্পানি গ্রামীণ অঞ্চলে তাদের অবস্থান আরও দৃঢ় করতে পারবে।
এই প্রথম কোনো ভারতীয় টেলিকম কোম্পানি D2D স্যাটেলাইট কানেক্টিভিটির জন্য কোনো ठोस পদক্ষেপ নিয়েছে। এর ফলে Vodafone Idea-র প্রযুক্তিগত খ্যাতিও বাড়তে পারে।
শেয়ারের গতিবিধি চমকপ্রদ
শেয়ারের কথায় আসা যাক, 26 জুন এর ক্লোজিং প্রাইস ছিল ₹7.25। 27 জুন এটি ₹7.26 ওপেনিং প্রাইস নিয়ে ট্রেডিংয়ের জন্য খোলে এবং দিনের মধ্যে ₹7.53-এর সর্বোচ্চ স্তরে পৌঁছায়। এটি প্রায় 4 শতাংশের ইন্ট্রাডে বৃদ্ধি ছিল।
এক সপ্তাহের মধ্যে শেয়ারটি প্রায় 15 শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। এই বৃদ্ধি এমন সময়ে এসেছে যখন কোম্পানির আর্থিক পরিস্থিতি এখনও চাপের মধ্যে রয়েছে।
প্রত্যাশার উপর দাঁড়িয়ে উত্থান
Vodafone Idea-র এই ঊর্ধ্বমুখী পারফর্ম্যান্স সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাশার উপর নির্ভরশীল। বিনিয়োগকারীরা এই ভরসায় কেনাকাটা করছেন যে সরকার AGR ছাড়ের ঘোষণা করবে এবং স্যাটেলাইট চুক্তি থেকে ভবিষ্যতে ভালো আয়ের সম্ভাবনা তৈরি হবে।
বাজার বিশ্লেষকদের মতে, এই ধরনের উচ্চ ঋণ এবং উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ শেয়ারগুলিতে মুভমেন্ট দ্রুত হয় এবং খবর নিশ্চিত বা বাতিল হওয়ার কারণে তাদের মধ্যে বড় ধরনের উত্থান-পতন দেখা যায়।
কোম্পানির আর্থিক অবস্থা এখনও চাপে
যদিও শেয়ারের গতিতে বৃদ্ধি দেখা যাচ্ছে, Vodafone Idea-র আর্থিক অবস্থা এখনও সমস্যার মধ্যে রয়েছে। বিশাল ঋণ, নগদ প্রবাহের অভাব এবং 5G নেটওয়ার্কে পিছিয়ে পড়া কোম্পানির সামনে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তা সত্ত্বেও, যদি সরকার থেকে সত্যিই AGR ছাড় পাওয়া যায় এবং স্যাটেলাইট ব্যবসায় কোনো বড় সাফল্য আসে, তবে কোম্পানি তার পরিস্থিতি উন্নতির দিকে একটি বড় পদক্ষেপ নিতে পারে।
বিনিয়োগকারীদের নজর এখন আনুষ্ঠানিক ঘোষণার দিকে
বাজারে আপাতত যে পরিস্থিতি, তা সম্পূর্ণভাবে গুজব ও জল্পনার উপর নির্ভরশীল। Vodafone Idea-ও তাদের পক্ষ থেকে স্পষ্ট করেছে যে সরকারের কাছ থেকে কোনো ধরনের ছাড়ের বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক নিশ্চয়তা পাওয়া যায়নি।
এই পরিস্থিতিতে, এখন বিনিয়োগকারীদের দৃষ্টি সরকার বা কোম্পানির তরফ থেকে কোনো দৃঢ় বক্তব্য বা ঘোষণার দিকে নিবদ্ধ। যতক্ষণ না তা হচ্ছে, শেয়ারে উত্থান-পতন চলতেই পারে।
টেলিকম সেক্টরে আবারও আলোড়ন
Vodafone Idea-র সাম্প্রতিক গতিবিধি টেলিকম সেক্টরে আবারও আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। দীর্ঘদিন ধরে এই সেক্টরে Reliance Jio এবং Airtel-এর একাধিপত্য ছিল, কিন্তু এখন Vodafone Idea-র সম্ভাব্য প্রত্যাবর্তনের ইঙ্গিত থেকে প্রতিযোগিতার হালকা আভাস দেখা যাচ্ছে।
সরকারও চায় যে সেক্টরে তিনজন বড় প্লেয়ার থাকুক, যাতে প্রতিযোগিতা বজায় থাকে এবং গ্রাহকরা আরও ভালো পরিষেবা পান। এমন পরিস্থিতিতে সরকারের তরফে ছাড় পাওয়ার সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দেওয়া যায় না।